আজঃ শনিবার ৮ নভেম্বর, ২০২৫

ডাকসু নির্বাচনে চট্টগ্রামের জয়জয়কার।

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্রার্থীরা অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে। এবারের নির্বাচনে মোট ২৮টি পদে ভোট হয়। এর মধ্যে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ শীর্ষ তিনটি পদ, ১২টি সম্পাদকীয় পদ এবং ১৩টি কার্যকরী সদস্য পদ রয়েছে। সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার আরও কয়েকজন বিভিন্ন হলে শীর্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

ফলাফলে দেখা গেছে, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার অন্তত ১২ জন প্রার্থী জয় পেয়েছেন। ডাকসুর ২৮টি আসনের মধ্যে ১১টি পদেই জিতেছেন এই এক আসনের প্রার্থীরা। তারা সবাই শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের অংশ। এর বাইরে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের একজন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে দুইজন নির্বাচিত হয়েছেন। প্রায় ৬ বছর পর আয়োজিত এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৮৭৪। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে টানটান উত্তেজনার মধ্যে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি কেন্দ্রে মোট ৮১০টি বুথে ভোট হয়।

সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সব মিলিয়ে প্রতিটি ভোটারকে ৪১টি করে ভোট দিতে হয়েছে। ভোট নেওয়া হয় ওএমআর ফরমে, ৬ পাতার ব্যালটে। ভোট গণনা হয়েছে ১৪টি গণনা মেশিনে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ডাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। ডাকসুর পূর্ণাঙ্গ ২৮টি পদে প্রার্থী ছিলেন ৪৭১ জন। এর মধ্যে শিবির সমর্থিত প্রার্থীরা ২০টির বেশি পদে জয় পেয়েছে। শুধু সাতকানিয়া-লোহাগাড়া থেকেই জয়ী হয়েছেন ১২ জন। শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে হলভিত্তিক পদ সব জায়গায়ই প্রভাব বিস্তার করেছে এই অঞ্চলের প্রার্থীরা।

সহসভাপতি (ভিপি) হয়েছেন সাতকানিয়ার আবু সাদিক কায়েম। তিনি ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে বিপুল ব্যবধানে জয় পান। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হয়েছেন লোহাগাড়ার চুনতির এস এম ফরহাদ, যিনি ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পান। পরিবারের ব্যবসাসূত্রে দুজনের পরিবার যথাক্রমে পরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে স্থায়ী হয়।

সম্পাদকীয় পদে স্বামী-স্ত্রীর জয় কমন রুম রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক হয়েছেন উম্মে ছালমা। তিনি সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের মির্জাখীল গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী রায়হান উদ্দীনও জিতেছেন কার্যকরী সদস্য পদে। তিনি সাতকানিয়ার ছদাহার বাসিন্দা। স্বামী-স্ত্রীর যুগল জয় এবারের নির্বাচনে অনন্য ঘটনা হিসেবে দেখা হয়েছে। শিবির সমর্থিত প্যানেল সম্পাদকীয় পদে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে জয়ী হয়েছে তারা। বাকিতিনটিতে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

সাদিক কায়েম খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং পরে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ থেকে আলিম পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। এসএম ফরহাদ রাঙামাটি জেলার মাইনী গাথাছড়া বায়তুশ শরফ মাদ্রাসার থেকে দাখিল পাস করেন। এরপর চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। দুজনেই বায়তুশ শরফের শিক্ষার্থী হলেও ছিলেন ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাবর্ষের।

সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার আরও কয়েকজন বিভিন্ন হলে শীর্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এরা হলেন স্যার এএফ রহমান হলের ভিপি রফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ভিপি মুসলিমুর রহমান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ভিপি ওসমান গণি ও এজিএস আবদুল মজিদ, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের পাঠকক্ষ সম্পাদক মো. ইমরান, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের কার্যকরী সদস্য শাহেদ ইমন এবং কবি জসীম উদ্‌দীন হলের কার্যকরী সদস্য রোকন উদ্দীন।

অন্যদিকে বিভিন্ন হলে বাঁশখালীর বাসিন্দা যারা শীর্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন বিজয় একাত্তর হলের ভিপি শেখেরখীলের হাসানুল বান্না আরাফাত, সূ্র্যসেন হলের জিএস আজিজুল হক, জসিম উদ্দীন হলের জিএস মাসুম আব্দুল্লাহ, শেখ মুজিবুর রহমান হলের সমাজসেবা সম্পাদক আজিজুর রহমান মানিক, জহুরুল হক হলের সদস্য ইমরুল ফয়েজ রাফসান বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের বহিরাঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সন্দ্বীপের মেয়ে কানিজ ফাতেমা।

মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন মহেশখালীর ফাতেমা তাসনিম জুমা। কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন সর্ব মিত্র চাকমা (শিবির সমর্থিত) ও হেমা চাকমা (সাত বামপন্থী সংগঠনের প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল থেকে)।

ডাকসু ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মেয়ে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী উমামা ফাতেমা, সাতকানিয়ার বাসিন্দা বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহবায়ক আবদুল ওয়াহেদ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বোয়ালখালী পৌরসভার বাসিন্দা আবু তৈয়ব হাবিলদার।

এছাড়া স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী ছিলেন কক্সবাজারের পেকুয়ার বাসিন্দা জালাল আহমদ জালাল। রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দায়ের করা এক হত্যাচেষ্টা মামলায় জালালকে পরে কারাগারে পাঠানো হয়। সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার বাসিন্দা স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের জাহেদ আহমদ ও চকরিয়ার বাসিন্দা আরমানুল হক।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ঐক্যমতের বাইরে কথা বললে বিভেদ বাড়বে: আমীর খসরু


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন- দীর্ঘ আলোচনার পর যে ঐক্যমতে পৌঁছানো হয়েছে, সেটি আমাদের মেনে নিতে হবে। ঐক্যমতের বাইরে গিয়ে কথা বললে রাজনীতি ও সমাজে বিভেদ বাড়বে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।


শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নবনির্মিত ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


আমীর খসরু বলেন, আজ একটি ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে। এটি গণতন্ত্রকে যেমন এগিয়ে নেয়, তেমনি সমাজকেও সামনে নিয়ে যায়। আমরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি, বিশেষ করে গত ১৫ বছরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। সংলাপের মাধ্যমে সেই ভাঙন কাটিয়ে উঠতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সংলাপ করবো, ঐক্যমতে পৌঁছব, যতটুকু সম্ভব। যেটুকু ঐক্যমতে পৌঁছানো যাবে না, সেটি সহনশীলতার সঙ্গে মেনে নিতে হবে। নতুন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, কোনো সরকার একা নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারে না। এজন্য সবার অংশগ্রহণ ও দায়বদ্ধতা জরুরি। প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখলেই দেশ এগিয়ে যাবে।


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক ছিলেন এমন একজন দূরদর্শী মানুষ, যিনি দৈনিক আজাদীর মাধ্যমে বিশ্বাস করতেন, একদিন এই দেশ স্বাধীন হবে। আজ আমরা সেই স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরে গর্বিত।


তিনি আরও বলেন, মানবিক মর্যাদা, আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার ফিরিয়ে আনা এই আদর্শের ভিত্তিতেই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। এখন গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদী পত্রিকার সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, আমাদের দেশে একটি অদ্ভুত বিভাজন আছে, ঢাকা থেকে পত্রিকা বের হলে সেটি ‘জাতীয় পত্রিকা’, আর ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত হলে ‘মফস্বল পত্রিকা’। আমার কাছে এটি একটি বৈষম্যমূলক ধারণা।

তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেন, আজাদী যদি ঢাকায় গিয়ে প্রকাশ হয়, তাহলে জাতীয় পত্রিকা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। কিন্তু আমার বাবা দৈনিক আজাদী বের করেছিলেন চট্টগ্রামের মানুষের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং সমস্যার কথা সরকারের সামনে তুলে ধরার জন্য, ঢাকায় বসে জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নয়। কারণ আমরা চট্টগ্রামের মানুষকে ভালোবাসি। এই
ভালোবাসার বন্ধন থেকেই আমরা চট্টগ্রামবাসীর পাশে থাকতে চাই।


দৈনিক আজাদীর অর্থায়নে ও পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে মিলনায়তনটি সংস্কার ও ডিজাইন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি। সঞ্চালনা করেন অন্তর্র্বতী কমিটির সদস্য গোলাম মওলা মুরাদ। অনুষ্ঠানে আরও বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক আজাদী পত্রিকার পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (সিজেএ) বাংলাদেশ চাপ্টারের চেয়ারম্যান ওসমান গণি মনসুর।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত, দৈনিক আজাদীর নির্বাহী সম্পাদক শিহাব মালেক, প্রেসক্লাব অন্তর্র্বতী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার, এ্যাবের সভাপতি জানে আলম সেলিম, বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি মিয়া মোহাম্মদ আরিফ।


অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মোহাম্মদ হোসাইন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিক, রাজনীতিক, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জামালপুরে অপহরণ মামলায় চারজনকে যাবাজ্জীবন

জামালপুরে অপহরণ মামলায় চারজনকে যাবাজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -১ এর বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ রায় প্রদান করেন। তারা হলেন, জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ভাংগুনী ডাংঙ্গা গ্রামের মুন্না@মোনাফ এর মজনু মিয়া(২৫), রান্ধনীগাছা গ্রামের মরহুম হাতেম আলী খন্দকারের ছেলে হানিফ খন্দকার (৫৯), মো: আবুল কাশেম এর ছেলে মো: মমিন মিয়া(৪০), ভাংগুনী ডাংঙ্গা গ্রামের মো: ইমান আলীর ছেলে জহুরুল ইসলাম (৩৭)।

রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -১ এর পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি)মো: ফজলুল হক সাংবাদিকদের জানান, ২০২২ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারী বিকাল সাড়ে পাচ টায় ভিকটিম স্বামীর বাড়ী থেকে বাবার বাড়ীতে আসার সময় জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর বাজারের পশ্চিম পার্শে থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা ভিকটিম মোছা: হাবিবা আক্তার চৈতিকে জোর পুর্বক অপহরণ করে নিয়ে গেলে ১১ ফেব্রুয়ারী ভিকটিমের বাবা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ২৭ এপ্রিল মজনু মিয়ার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ এর ৭ ধারায় মমিন মিয়া এবং একই আইনের ৭/৩০ ধারায় হানিফ খন্দকার,মমিন মিয়া, জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। তিনি আরো জানান, আমরা রাষ্ট্র পক্ষ ৪ জন স্বাক্ষী উপস্থাপন করেছি । প্রায় ৪ বছর আইনী লড়াই শেষে মামলায় আসামীরা দোষী প্রমানিত হওয়ায় আদালত ৪জনকেই যাবজ্জীবন এবং ৫০ হাজার করে টাকা জরিমানা করেছে। জরিমানার টাকা ভিকটিম পাবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ