আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

চসিক মেয়র : তিন মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে বিগত সরকারের সময়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের তিন মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা আবদুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন।এ সময় মেয়র শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ডা. শাহাদাত হোসেনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহমেদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী সাজ্জাদ জানান, বাংলাদেশ সচিবালয়ের আইন শাখার নির্দেশনায় দায়ের করা দুটি মামলায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।একই সঙ্গে আরেকটি মামলায় আদালত পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে শুনানি শেষে তাকে খালাস দিয়েছেন। এর মধ্যে দুটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং অন্যটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা হয়েছিল। বিগত সরকারের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে মোট ১১০টি মামলা হয়, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত তিনি ৪০টি মামলায় অব্যাহতি ও খালাস পেয়েছেন।
এছাড়াও এদিন মামলা পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাবেক সভাপতি এনামুল হক, মহানগর পিপি মফিজুল হক ভূইয়া, অ্যাডভোকেট তারিক আহমেদসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী।

এসময় আদালত প্রাঙ্গণে ডা. শাহাদত হোসেন উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার মাধ্যমে আমাকে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমত, আদালতের ন্যায়বিচার এবং আপনাদের দোয়া-ভালোবাসার কারণে আমি আজ অব্যাহতি পেলাম। সত্যকে কখনোই চাপা দেওয়া যায় না। আমি জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আজীবন অবিচল থাকব। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বিএনপি আবারো জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে যাবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

সব প্রার্থীর একই মঞ্চে বির্বাচণী ইজতেহার ঘোষণা এবং পোস্টার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সব প্রার্থীর জন্য একই মঞ্চে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করার বাধ্যবাধকতা রেখে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর জন্য ফআচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিধিমালাটি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।

এতে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং ২০০৮ সালের আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় রেখে বেশ কিছু নতুন ও কঠোর বিষয় যুক্ত করে এই আচরণবিধি প্রণয়ন করা হয়েছে।নতুন এই বিধিমালায় ভোটের প্রচারণায় প্রথমবারের মতো পোস্টার ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ড্রোন ব্যবহার এবং বিদেশে যে কোনো ধরনের প্রচারণা কার্যক্রমেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে প্রার্থী হতে নারাজ চিত্রনায়ক মেগাস্টার উজ্জ্বল ।

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কোনো কারণ দেখেন না বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক মেগাস্টার খ্যাত চিত্রনায়ক ‘আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল’। একান্ত আলাপনে মেগাস্টারের কাছে আসন্ন নির্বাচনে কেন প্রার্থী হলেন না ও মনোনয়ন পেলে কী করতেন’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলীয় মতামতের ভিত্তিতে দল পরিচালনা করেন।

তা ছাড়া দীর্ঘ পথচলায় বিএনপির রাজনীতির ভেতর ও বাহির তাঁর নখদর্পণে। নমিনেশনই নির্বাচনের সবকিছু নয়। এত বড়ো দলকে বিজয়ের মঞ্চে সংবর্ধনা দিতে হলে কিছু রাজনীতিককে ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে। কারণ ঘাম ও ত্যাগের উপরই সাফল্যের পতাকা উড়ে। মনে রাখতে হবে জনাব তারেক রহমানের একটি পরিকল্পনা আছে। সতেরো বছরের ক্রান্তিকালে অনেক ত্যাগী নেতা আছেন। একথাও আমাদের মনে রাখতে হবে।’ সাফল্যের জন্য দলীয় প্রার্থীদের বাইরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মেধাবী টিম দরকার। যারা দলীয় প্রচারণায় কাজ করবেন।

‘আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল,’ তৎকালীন বৃহত্তর পাবনা জেলা শহরে ও সিরাজগঞ্জের দুই জায়গাতেই পৈতৃক ভিটা থাকলেও তাঁর শৈশব কেটেছে সান্তাহারে। কারণ তাঁর আব্বা ডা: মো. ইয়াছিন উদ্দিন রেলওয়ের ডাক্তার হিসেবে শান্তাহারে কর্মরত ছিলেন। মা সাবেরা বেগম একজন গৃহিণী। নায়ক উজ্জ্বল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে আইআর-এ মাস্টার্সডিগ্রী লাভ করেন।
স্কুলে পড়াকালীন সময়ে কবিতা আবৃত্তি দিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলেও একই সময়ে স্কুলের মঞ্চনাটকে অভিনয়ের সুযোগ পান। সেই থেকে শুরু।

বাবার বদলির চাকরি হওয়াতে তাঁকে বেশ কয়েকটি জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে হয়েছে। হার্ভে গার্লস স্কুল শান্তাহার, বগুড়া, লালমনিরহাট হাইস্কুল, লালমনিরহাট, কারমাইকেল কলেজে, রংপুর ও সৈয়দপুর কলেজ, সৈয়দপুর, খুলনা জেলা স্কুল, খুলনা। মঞ্চগুলোতে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে অভিনয় করেন। অভিনয় নেশা হয়ে ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে তিনি এসএম হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। সেই সুবাদে হলের বাৎসরিক নাটক ও টিএসসির মঞ্চে প্রধান চরিত্রে নিয়মিত অভিনয় চর্চা চালাতে থাকেন। সেই সময়ে টিএসসি’র মঞ্চে অধ্যাপক আসকার ইবনে শাইখের লেখা ‘লালন ফকির’ নাটকের লালন চরিত্রে অভিনয় করলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুরোধে নাটকটি পরপর তিনদিন মঞ্চস্থ হয়।

চারিদিকে সুনাম ছড়িয়ে পরে। পরবর্তীতে অভিনেতা ও সঙ্গীত শিল্পী নাজমুল হুদা বাচ্চু তাঁকে রেডিও ও টেলিভিশনে অডিশনের মাধ্যমে নাট্যশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে সহযোগিতা করেন। মঞ্চ, রেডিয়ো ও টেলিভিশনে দুর্দান্ত অভিনয়ের কারণে নাট্যাঙ্গনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। এরই ফাঁকে তিনি ফ্লাই ক্লাবের সদস্য হন। বিমানেও কিছুদিন সংযুক্ত ছিলেন।
নাটকের জনপ্রিয়তার ঢেউ গিয়ে পৌঁছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। ১ জানুয়ারি ১৯৭০ খ্যাতিমান পরিচালক সুভাষ দত্ত উজ্জ্বলকে নায়ক ও কবরীকে নায়িকা হিসেবে কাস্ট করে ‘ বিনিময় ‘ ছবির মহরত করেন। একই বছর সিনেমাটি প্রদর্শিত হলে চলচ্চিত্রাঙ্গনে সাড়া পড়ে যায়।

ব্যাবসায়িক ভাবে অত্যন্ত সফল হয়। সিনেমা প্রেমিক দর্শকের কাছে রোমান্টিক হিরো হিসেবে সমাদৃত হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের পর একে একে মুক্তি পায় অরুণোদয়ের অগ্নি সাক্ষী, কাচের স্বর্গ, লালন ফকির, সমাধান, ইয়ে করে বিয়ে, শনিবারের চিঠি, গরমিল, সমাধি, অনুভব, রুপালি সৈকতে, অগ্নিশিখা, অচেনা অতিথি, দাবি, বন্ধু, ফকির মজনু শাহ, মহেশখালীর বাঁকে, অনুরাগ, জনতা এক্সপ্রেস, কুদরত, লাল কাজল ইত্যাদি। সিনেমার মাস্টার মেকার চলচ্চিত্র পরিচালক মমতাজ আলি, নায়ক উজ্জ্বলের রোমান্টিক নায়কের পর্দা-ইমেজ ভেঙে প্রতিবাদী নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তৎসময়ের দর্শকের কাছে তার জনপ্রিয়তা এতই তুঙ্গে ওঠে যে তিনি ভক্তদের কাছে মেগাস্টার উজ্জ্বলে রূপান্তরিত হন।

একে একে মুক্তি পায় নালিশ, নসিব, উসিলা, আমি উস্তাদ, নিয়ত, বিশাল, বীরাঙ্গনা সখিনা, দোস্তি, নিয়তির খেলা ও জান আমার জান। তিনি সবমিলিয়ে প্রায় শতাধিক সিনেমায় নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে বেশ কয়েকটি সিনেমা পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি গঠনের পেছনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন চিত্রনায়ক উজ্জ্বল। তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির সদস্য। তিনি সেন্সর বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচিত সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্বও পালন করেছেন। চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনার জন্য এখনো সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। চব্বিশের আন্দোলনে চলচ্চিত্রাঙ্গনের ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ