আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামের ৮ জেলার ৩৬টি আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভাগ্য পরীক্ষা রোববার।

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জেলার ৩৬টি আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভাগ্য পরীক্ষা রোববার (২৬ অক্টোবর) বলে জানা গেছে। জোটের শরিক দলগুলোর জন্য কিছু আসন বাদ রেখে নিজেদের একক প্রার্থিতা প্রায় চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের রোববার ঢাকার গুলশান অফিসে ডেকেছেন দলটি। বিকেল ৪টায় ওই বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ছাড়াও ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে কথা বলেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। এমনিতে প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে বিএনপির। গত আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে এসব বৈঠক হয়েছে।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে সংসদীয় আসন রয়েছে ১৬টি। এসব আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন অর্ধ শতাধিক। কিন্তু ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে ফোন পেয়েছেন প্রায় ৪৫ বিএনপি নেতা। এছাড়া একই বৈঠকে কক্সবাজারের ৪, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ৩, নোয়াখালীর ৬, লক্ষ্মীপুরের ৪ এবং ফেনীর জেলার ৩ আসনসহ ৩৬ সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সাংগঠনিক সূত্রে জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যেই প্রায় ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে গ্রিন সিগনাল দেবে বিএনপি। কে কোন আসনে প্রার্থী হবেন এই সময়ের মধ্যে দল থেকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে; অর্থাৎ সবুজ সংকেত দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এতে করে দলের কোন্দল কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। তফশিলের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। নানা দিক বিবেচনায় এবার সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির শীর্ষ কয়েক নেতার আসনে কাউকে সবুজ সংকেত দেবে না বিএনপি। পাশাপাশি মিত্র দল ও জোটের কয়েক শীর্ষ নেতার আসনেও একই কৌশল নেবে দলটি।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, ঢাকার গুলশান অফিসের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে চট্টগ্রামের-১৬ সংসদীয় আসনের প্রায় ৪৫ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে দল থেকে টেলিফোন করা হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে ১৬ জনের নাম চূড়ান্ত করা হবে। ওইদিনের বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে আসনওয়ারি যাদের চূড়ান্ত করা হবে, তাদের পক্ষে অন্যদের কোন ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই কাজ করার জন্য বার্তা দেওয়া হতে পারে। চলতি অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্তকৃত প্রার্থীদের দল থেকে গ্রিন সিগনাল দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ঢাকার গুলশান অফিসে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বৈঠকের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই বৈঠকে চট্টগ্রামের ১৬, কক্সবাজারের ৪, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ৩, নোয়াখালীর ৬, লক্ষ্মীপুরের ৪ এবং ফেনী জেলার ৩ আসনসহ ৩৬ সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে। বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় সার কালোবাজারে বিক্রি: ডিলারকে জরিমানা, ১৫ বস্তা সার জব্দ।

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সরকারি সার কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে বিসিআইসি ডিলার সেলিম হোসেন কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার দিয়ার পাড়া গ্রামে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি বরাদ্দের সার গোপনে চাটমোহরে পাচারের চেষ্টা করছিলেন ওই ডিলার। ভ্যানযোগে সার পরিবহনের সময় স্থানীয় জনতা বিষয়টি টের পেয়ে গাড়ি আট কে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সার সহ গাড়িটি আটক করে।

অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন,“সার (ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০০৬-এর ১২(৩) ধারা অনুযায়ী ডিলার কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ কৃত ৬ বস্তা ডিএপি, ৭ বস্তা ইউরিয়া ও ২ বস্তা পটাশ সার কৃষি অফিসের হেফাজতে রাখা হয়েছে।”

অভিযানের সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ শারমিন জাহান, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ডিলার সেলিম হোসেন নিয়মিতই সরকারি সার চাহিদার তুলনায় কম দেন এবং বিক্রয় করেন।

উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন, যখন কৃষকরা সার সংকটে ভুগছেন, তখনই কিছু অসাধু ডিলার মুনাফার আশায় সার পাচার করছে। এর আগেও অভিযোগ করা হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ শারমিন জাহান বলেন, “মানুষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেই পারেন। তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এখানে আমার কোনো গাফিলতি নেই। সরকারি সার সরবরাহ ও বিতরণ কার্যক্রম নিয়মিতভাবে মনিটর করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে ডিলারদের কার্যক্রম তদারকির জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া আছে। কোথাও অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ঘটনাটিও তদন্ত করা হবে। যদি যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সার কালোবাজারে বিক্রি করে থাকে, তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বোয়ালখালীতে মাদক সেবনের দায়ে ৩ যুবকের কারাদণ্ড।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় মাদক সেবনের অপরাধে ৩ যুবককে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।একই সাথে প্রত্যেককে ৫শ’ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বোয়ালখালী পৌর সভার গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকার এ অভিযান পরিচালনা করে দণ্ডাদেশ প্রদান করেন বোয়ালখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-বোয়ালখালী পৌর সদরের আবুল কালামের পুত্র মোহাম্মদ ওসামা বিন হোসাইন জিয়া (২২), বোয়ালখালী পৌর সদরের আবু সাঈদের পুত্র নাজমুল হাসান (১৯) এবং বোয়ালখালী পৌর সভার পশ্চিম গোমদণ্ডী এলাকার মৃত নুরুন্নবীর পুত্র মোহাম্মদ নায়েম উদ্দিন (২৫)।

বোয়ালখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা বলেন, মাদকদ্রব্য সেবন করে নেশাগ্রস্হ অবস্থায় জনসাধারণের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপরাধে তাদের আটক করা হয়। এরপর অভিযুক্তরা তাদের দোষ স্বীকার করেন ও ভবিষ্যতে মাদক সেবন করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেন। দোষীদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ৯(১)এর গ ধারায় ২ জনকে ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ জনকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫শ’ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয় ‘ঘ’ সার্কেলের উপপরিদৰ্শক একে এম আজাদ উদ্দিন বলেন, বোয়ালখালী পৌর সভার গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকার থেকে ইয়াবা সেবন অবস্থায় তাদের আটক করা হয়। ওই সময় তাদের কাজ থেকে মাদকদ্রব্য সেবনের কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। তিন জনকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ