আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে ডাকাতের ১৭ বছরের কারাদণ্ড, অস্ত্র-কার্তুজ উদ্ধার মামলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম মহানগরের চান্দগাঁও থানার অস্ত্র ও কার্তুজের মামলায় এক ডাকাতকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেন। দন্ডিত মো. আবদুর রহিম (৫০) প্রকাশ ডাকাত রহিম একই থানার হামিদ চর এলাকার মৃত আবদুর রশিদের ছেলে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২২ মে নগরের চান্দগাঁও থানার মধ্যম মোহরা হিন্দুপাড়া এলাকায় একজন ব্যক্তি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যরা আবদুর রহিম প্রকাশ ডাকাত রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় রহিমের দেহ তল্লাশি করে একটি একনলা বন্দুক এবং একটি নীল রঙের শর্ট গানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। বন্দুকটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬ ইঞ্চি এবং তাতে ট্রিগার, ট্রিগার গার্ড ও ফায়ারিং পিন সংযুক্ত রয়েছিলেন। এ ঘটনায় তৎকালীন চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোহাম্মদ নাসিম হোসেন বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলায় তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২১ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দিলে ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোরশেদুর রহমান চৌধুরী রোকন বলেন, ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণে অস্ত্র ও কার্তুজের মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মো. আবদুর রহিমকে অস্ত্রের জন্য ১০ বছর ও কার্তুজ জন্য ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুইটি সাজা একসঙ্গে চলেবে, সেই হিসেবে ১০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে ছিলেন। সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

গাবতলীর তোজাম্মেল হত্যা : বগুড়ায় দশ আসামির তিনজন ফাঁসি, তিনজনের যাবজ্জীবন

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ২০১৭ সালে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তোজাম্মেল হোসেন হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। ১০ আসামির তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসি), তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন খালাস পেয়েছেন। রায়ে দণ্ডিত ছয় আসামির প্রত্যেকের একলাখ টাকা করে অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুজন আসামি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় শিশু আদালতে তাদের বিচার চলছে।

হত্যা মামলার সাত বছর পর মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে রায় দেন বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাহজাহান কবির। রায় ঘোষণার সময় একজন আসামি বাদে সবাই অনুপস্থিত ছিলেন।

পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাছেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি- বাবুল প্রামাণিক ওরফে আবুল কালাম আজাদ, মনিরুজ্জামান মিশু, মো. মানিক। যাবজ্জীবন দণ্ডিত তিন আসামি- দেলোয়ার হোসেন দুলু, মাজেদুর রহমান পিন্টু এবং আশিক হাসান। মামলার আসামি শান্ত শাকিদারকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত তিন আসামির গলায় ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর করা হবে না। প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রায়ের নথিপত্র জমা দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। এছাড়া জরিমানা পরিশোধ না করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির প্রত্যেককে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর গাবতলী উপজেলার দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বটিয়াভাঙ্গা দক্ষিণপাড়া এলাকায় তোজাম্মেল হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একটি জমি কেনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটে, জানিয়েছিল পুলিশ। নিহত তোজাম্মেল দূর্গাহাটা গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদের পরাজিত প্রার্থী ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাছেদ জানান, হত্যাকান্ডের পরের দিন নিহতের ভাই মমিন মোল্লা বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিদের অধিকাংশই পলাতক থাকায় বাদীর পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

পল্লবীতে ‘সখী বাহিনী’র পতন: কুখ্যাত ডাকাত সখী হোসেনসহ পাঁচজন আটক, স্বস্তি ফিরেছে এলাকায়।

রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায় অবশেষে পর্দা নামলো দীর্ঘদিনের আতঙ্ক ‘সখী বাহিনী’র। ভয়ঙ্কর অপরাধচক্রটির মূল হোতা সখী হোসেনসহ পাঁচ সদস্যকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার গভীর রাতে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে যায় পল্লবী থানা পুলিশ। অভিযানের একপর্যায়ে সখী বাহিনীর সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে পাঁচজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র, ছুরি, চাবি কাটার সরঞ্জাম ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সখী হোসেন, চক্রের মূল হোতা; যার নামে একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদক মামলা রয়েছে।২,সাবির হোসেন সজিব (২৪), রূপনগর থানার মাদক মামলার আসামি।৩.রাজু ওরফে বাদল,
৪.জুয়েল,৫.আসিফ হোসেন।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই চক্রটি পল্লবী, রূপনগর ও মিরপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। সখী নিজেকে স্থানীয় ‘ডন’ হিসেবে পরিচয় দিত এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতো।

পল্লবী থানার এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। পুলিশের ধারণা, তাদের পেছনে আরও বড় নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল।স্থানীয়দের ভাষায়, “রাতের বেলা ঘর থেকে বের হওয়া দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছিল। সখী বাহিনী ধরা পড়ার পর এলাকায় এখন শান্তি ফিরেছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের পলাতক সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ