আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশপথে অবরোধের পর সারাদেশে মশাল মিছিল ও সমাবেশের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ৫ ডিসেম্বর সারাদেশে মশাল মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশপথে অবরোধের পর কেন্দ্রীয়ভাবে এই সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। বুধবার দুপুরে নগরীর বড়পোল এলাকায় অবরোধ কর্মসূচির সমাপনী সমাবেশে কেন্দ্রঘোষিত এ কর্মসূচির বিষয়টি জানান স্কপ নেতা ও চট্টগ্রাম জেলা ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি তপন দত্ত। চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও তিনি জানান।

এর আগে, বুধবার সকাল ১০টা থেকে নগরীর বড়পোল ও ইছহাক ডিপোসংলগ্ন বন্দরের টোলপ্লাজার সামনে চট্টগ্রাম বন্দরমুখী সড়কে অবস্থান নেন স্কপভুক্ত শ্রমিক সংগঠন, বাম গণতান্ত্রিক জোট ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। সেখানে অবরোধের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। এছাড়া নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় সীম্যান্স হোস্টেলের সামনে পরিবহণ শ্রমিকরা মিছিল করেন।

টোল প্লাজা পয়েন্টে অবরোধ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন স্কপ নেতা তপন দত্ত, কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, তসলিম হোসেন সেলম ও ইব্রাহীম খোকন। আর বড়পোল পয়েন্টে নেতৃত্ব দেন এস কে খোদা তোতন, খোরশেদুল আলম, মছিউদ দৌলা, কাজী আনোয়ারুল হক হুনি, রিজওয়ানুর রহমান খান, ফজলুল কবির মিন্টু, নুরুল আবসার তৌহিদ, জাহিদ উদ্দিন শাহিন, আব্দুল বাতেন, শফি উদ্দিন কবির আবিদ, আবু বক্কর সিদ্দিকী, হাসিবুর রহমান বিপ্লব, মো. সোহাগ।

অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে যুক্ত টোল রোডে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। ভারী পণ্য পরিবহণকারী শত, শত যানবাহন সড়কে আটকে থাকে। এ সময় বন্দর থেকে আমদানি পণ্যবোঝাই গাড়ি এবং বিভিন্ন ডিপো থেকে আসা রফতানি পণ্যবোঝাই গাড়ি সড়কে আটকা পড়ে। প্রায় দেড়ঘণ্টা টোল রোড অচল থাকার পর পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। তবে এ সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বড়পোলের সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মী অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানান। সেখানে সমাবেশে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রাক্তন সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহআলম, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির আবিদ, বাসদ চট্টগ্রাম জেলার ইনচার্জ আল আল কাদেরী জয় এবং গণমুক্তি ইউনিয়নের রাজা মিয়া।

সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, বন্দর রক্ষার আন্দোলন কেবল চট্টগ্রামবাসীর নয় এটি সারাদেশের মানুষের উদ্বেগের বিষয়। দেশের আমদানি-রফতানির সিংহভাগই সম্পন্ন হয় এই বন্দর দিয়ে। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) বন্দর অবকাঠামোর যে কোনো অংশ ইজারা দেওয়া হলে জাতীয় অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ভূ-রাজনীতির অংশ করে ফেলা হচ্ছে। এ চক্রান্ত বাস্তবায়ন করা হলে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

বড়পোলের সমাবেশে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে স্কপ নেতা তপন দত্ত বলেন, বন্দরকে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হবে এবং শ্রমিকদের জীবিকার ওপর সরাসরি আঘাত আসবে। তাই দেশ বাঁচাতে এবং শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার জন্য এই আন্দোলন শুরু হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দেশ রক্ষা এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় স্কপ সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

কাজী নুরুল্লাহ বাহার বলেন, বন্দর ইজারা মানে দেশের অর্থনীতিকে বিদেশি স্বার্থের হাতে তুলে দেওয়া। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই—এই সিদ্ধান্ত জনগণ মেনে নেবে না। শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ জনগণের স্বার্থে রাস্তায় নেমেছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরে অভিযানে তিনমাসে ২৬২১টি কচ্ছপ উদ্ধার

ছবি-১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম থেকে একের পর এক পাচার হচ্ছে ‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’ কচ্ছপ। চট্টগ্রাম মহানগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট। বিশেষ করে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কচ্ছপের মাংস ও স্যুপ জনপ্রিয় এবং বিলাসবহুল খাবার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কচ্ছপের মাংসের চড়া দাম থাকায় পাচারকারীরা আর্থিক লাভের আশায় বাংলাদেশ থেকে কচ্ছপ সংগ্রহ করে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া কচ্ছপের গন্তব্য চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুর। সবচেয়ে বড় বাজার চীনে।

খাবার ছাড়াও চীনে কচ্ছপের মাংস ও খোলস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের টনিক বা ওষুধ তৈরি করা হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। এদিকে গত তিনমাসে ২৬২১টি বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এরমধ্যে নভেম্বর মাসে ৫৭২, অক্টোবরে ৪০৯ ও সেপ্টেম্বরে ১৬৪০টি।জানা গেছে, ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২’ অনুযায়ী কচ্ছপ শিকার, হত্যা, বিক্রি ও পাচার দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধে জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে। পাচারকারী চক্র বিপন্ন করে তুলছে কচ্ছপের জীবনচক্র।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, গত তিনমাসে চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৬২১টি কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এরমধ্যে গত ২৫ নভেম্বর মিরসরাই বড় তাকিয়া বাজার এলাকা থেকে ১৭ কেজি, মিরসরাই বাজার থেকে ২২টি, বড় তাকিয়া বাজার থেকে ২৯ কেজি, মিরসরাই হাদি ফকিরহাট থেকে ৫২টি, ২৬ নভেম্বর মিরসরাই মিঠাছড়া বাজার থেকে ১৯ কেজি, নয় দুয়ারিয়া বাজার থেকে ২১ কেজি, বাঁশখালীর বাণীগ্রাম থেকে ৩৪টি, ১৯ নভেম্বর চাঁদপুরের দোয়াভাঙ্গা এলাকা থেকে ২৫কেজি, শাহরাস্তি সূচিপাড়া থেকে ৫০ কেজি, ১৮ নভেম্বর মিরসরাই হাদী ফকির হাট থেকে ২ কেজি, বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ২০ কেজি, চাঁদপুর সদর বড় মসজিদ এলাকা থেকে ৪২টি, চট্টগ্রাম থেকে নেয়ার পথে কুমিল্লা এলাকা বাস থেকে ৪০ কেজি, ২১ অক্টোবর চাঁদপুর সদর বড় মসজিদ এলাকা থেকে ৪২টি, ১৪ অক্টোবর চাঁদপুরের শাহরাস্তির শিতোশী এলাকা থেকে ২০ কেজি, ১৫ অক্টোবর চাঁদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে ১০০ কেজি, ১৩ অক্টোবর নোয়াখালীর সূবর্ণচর এলাকা থেকে ৩০ কেজি, ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে পাচার করার সময় যাত্রাবাড়ি ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় বাস থেকে ১২ কেজি কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা কচ্ছপের মধ্যে সুন্ধি প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা বেশি। ধুম ও কড়ি প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যাও রয়েছে। এর আগে পাচারের সময় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যাত্রীর লাগেজ থেকে ৯২৫টি কচ্ছপ উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। কচ্ছপগুলো মালেয়েশিয়া নেয়া হচ্ছিল।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট কর্মকর্তারা জানান, দেশের সীমানা পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুর যাচ্ছে কচ্ছপের চালান। দেশে খাল-বিল ও হাওড়ে প্রচুর পরিমাণ মিঠাপানির কচ্ছপ দেখা যায়। এর মধ্যে ‘সুন্ধি’ কচ্ছপ অন্যতম। অবাধ শিকার ও আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের কারণে প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কচ্ছপকে বলা হয় ‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’। এরা মরা মাছ ও পচা আবর্জনা খেয়ে পানি পরিষ্কার রাখে। কচ্ছপ হারিয়ে গেলে জলজ বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়বে এবং পানির গুণাগুণ নষ্ট হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে কচ্ছপের চালান প্রথমে অবৈধভাবে ভারতে পাচার হয়। বিশেষ করে যাশোর (বেনাপোল), সাতক্ষীরা(ভোমরা) আগরতলা এবং সিলেটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার হয়। ভারতে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের মাধ্যমে মিয়ানমার বা নেপাল হয়ে কচ্ছপগুলো চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে প্রায় ২৫-৩০ প্রজাতির কচ্ছপ ও কাছিম রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাচার হয় সুন্ধি কচ্ছপ। এটি আকারে ছোট এবং সহজলভ্য হওয়ায় এর পাচার হয় সবচেয়ে বেশি। খোলসের চাহিদার কারণে কড়ি কচ্ছপ ও মাংসের জন্য পাচার হয় ধুম কচ্ছপ। চট্টগ্রামে যেসব এলাকা থেকে কচ্ছপ পাচার করা হয় তা হলো, বান্দরবান ও রাঙামাটি সীমান্তবর্তী এলাকা, ফটিকছড়ি, বাঁশখালী এবং মিরসরাই।

নগরীর রিয়াজ উদ্দিনবাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে ব্যবহার হয়।বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম মল্লিক জানান, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত কচ্ছপ পাচারের মৌসুম। ডোবা, পুকুর কিংবা নদীতে এ সময় পানি কম থাকায় পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠে। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট। দেশে ২৫ থেকে ৩০ ধরনের কচ্ছপ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পাচার হয় সুন্ধি কচ্ছপ। কড়ি ও ধুম কচ্ছপও মাঝে মাঝে পাচার হয়। অসীম মল্লিক আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে আমরা বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছি। ঢাকা থেকে গিয়ে অভিযান চালানো অনেকটা সময় সাপেক্ষ। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে।

চট্টগ্রামে স্কুল ও দোকানে আগুন

চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানাধীন কলসি দিঘির পাড় উত্তর রেল গেট এলাকায় একটি কেজি স্কুল ও পাশের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহ আলী কেজি স্কুল ও দোকানে আগুন লাগে।

সিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন জানান, ভোরে খবর পেয়ে সোয়া ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় সকাল পৌনে ৭ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তবে দ্রুত পদক্ষেপে প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা জানা যায়নি।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ