
চট্টগ্রামের দশটি আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকে ৮টিতে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। মনোনয়নবঞ্চিতদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, কর্মীদের মধ্যে বিভাজন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। তবে গত ৩ নভেম্বর ঘোষিত চট্টগ্রামের ১০ আসনের কয়েকটিতে প্রার্থী পরিবর্তনের জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
এদিকে বিএনপির একটি সূত্র জানায়, চলতি নভেম্বরের মধ্যে অবশিষ্ট আসনের প্রার্থী ঘোষণা করবে বিএনপি। গত ৩ নভেম্বর চট্টগ্রামে ঘোষিত ১০ আসনের প্রার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই): নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি): সরোয়ার আলমগীর, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকু-): কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও বায়েজিদ-আংশিক): ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া): হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও, বোয়ালখালী ও পাঁচলাইশ-আংশিক): এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী): আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া): এনামুল হক এনাম, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী): সরওয়ার জামাল নিজাম এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী): মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।

এদিকে ঘোষিত কিছু আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের আভাস মিলছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকু-) আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এ আসনে গত ৩ নভেম্বর কাজী সালাউদ্দিনকে প্রার্থী ঘোষণা দেয় বিএনপি। কিন্তু ওইদিন থেকে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ, মানববন্ধনসহ আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন দলের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব ও বর্তমানে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা। এ অবস্থায় সীতাকু- আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের কথা শোনা যাচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রামে আরও দুটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের কথা বলছে বিএনপির বিভিন্ন সূত্র।
তবে ঘোষিত বেশিরভাগ আসনে মনোনয়নবঞ্চিতদের দাপট চলছে। তারা প্রার্থিতা পুনর্বিবেচনার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। এ অবস্থায় অস্বস্তিতে আছেন বিএনপির অনেক প্রার্থী। বিএনপি প্রার্থীদের অস্বস্তির মাঝে টেনশনে আছেন চট্টগ্রামের ছয় আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও। তারা হলেন-চট্টগ্রাম-৩ (সদ্বীপ) : সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুল রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক এডভোকেট আবু তাহের, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তরিকুল আলম তেনজিন, বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল পাশা এবং ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক রফি উদ্দিন ফয়সাল।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান): বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার এবং উত্তর জেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সিকদার।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া): বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম সাইফুল আলম এবং নগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর, পতেঙ্গা, ডবলমুরিং, ইপিজেড ও সদরঘাট): আসনটি হচ্ছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর। তবে তিনি এবার মনোনয়ন পান চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী) আসনে। তাই এবার এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু ও নগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান।
চট্টগ্রাম- ১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া-আংশিক): বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মহসিন জিল্লুর করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আনোয়ার চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এবং বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম রাহী।
চট্টগ্রাম- ১৫ (সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া): দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক জামাল হোসেন, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান।











