আজঃ শনিবার ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫

কর্নফুলী নদীর পাড়ে এলএনজি আমদানির পরিবর্তে সৌরবিদ্যুতের দাবিতে যুব পদযাত্রা।

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

প্রতি বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি আমদানি করতে হয়, আর এর একটা বড় অংশ চলে যায় এলএনজি আমদানিতে। চালু থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের ঘাটতি থাকার পরও বিগত চার বছরে সরকার ১১টি এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে। এর চারটি নির্মাণাধীন ও সাতটি নির্মাণকাজ শুরু করার অপেক্ষায় আছে। গ্যাসের ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার ২০১৮ সাল থেকে তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু করে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুটি বেসরকারি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয় যার সার্ভিস চার্জ বাবদ প্রতিদিন সাড়ে চার লাখ ডলার দিতে হচ্ছে। এছাড়া, প্রতি ঘনমিটার এলএনজি আমদানিতে ৭৯.৩৩ টাকা ব্যয় হলেও বিদ্যুৎখাতে বিক্রি করা হচ্ছে ১৪.৭৫ টাকায়। ফলে প্রতি ঘনমিটারে লোকসান হচ্ছে ৬৪.৫৮ টাকা। এলএনজি সরবরাহ না করতে পারলে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো অলস বসে থাকবে। বিদ্যুৎ না পেলেও সরকারকে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হবে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদেরকে ১৭ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে। অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র বৃদ্ধি পাবার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপাসিটি চার্জও হু হু করে বাড়ছে। এ অবস্থায় নতুন করে এলএনজি আমদানির পরিবর্তে সৌর ও বায়ু বিদ্যুতে বিনিয়োগ বাড়ানোর দাবিতে ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ইং যুব পদ্রযাত্রা অনুষ্টিত হয় চট্টগ্রামের কর্নফুলী নদীর পাশে ব্রীজঘাটা এলাকায়। জেটনেটবিডির সহযোগিতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা আইএসডিই-বাংলাদেশ এ পদযাত্রার আয়োজন করেন।

সমাবেশে বক্তরা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবার পর এলএনজি ও পেট্রোলিয়ামের সরবরাহ ক্রমশ ঝুঁকিতে পড়ছে। এ অবস্থায় নতুন এলএনজি টার্মিনাল ও এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে তা দেশের অর্থনীতির গলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি, প্রতি বছর প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার জ্বালানি আমদানির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপরেও অসহনীয় চাপ তৈরি হচ্ছে। জাতীয় বাজেটের উপর জ্বালানি আমদানি ও ক্যাপাসিটি চার্জের চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও শিক্ষার মতো অতি জরুরি খাতে বরাদ্দ কমছে যা সামগ্রিকভাবে জনকল্যাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বক্তারা আরও বলেন, গত ঘুর্নীঝড় মোখার কারনে মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্থ হলে চট্টগ্রামসহ পুরো দেশ ৩ দিন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। মানুষের জীবন জীবিকা ও শিল্প কলকারখানা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। একদিকে বিপুল বৈদশিক মুদ্রা খরচ করে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। আবার এলএনজি দেশের জ্বীবাশ্ম জ্বালানী খাতে চরম পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসছে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে যাচ্ছে। বক্তারা অবিলম্বে এলএনজি আমদানি বাতিল করে সমপরিমাণ অর্থ সৌর ও বায়ুবিদ্যুতের জন্য বরাদ্দ করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

যুব পদযাত্রায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় ভাইস প্রেসডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সিআরসিডির নির্বাহী পরিচালক ও ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তাপরিষদের যুগ্ন সস্পাদক মোঃ জানে আলম, আইএসডিই এর কর্মসূচি কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম, ইন্টার্ন মো: সাইমন ইসলাম, ক্যাব যুব গ্রুপ কর্ণফুলী উপজেলার সভাপতি মো: আরেফীন, যুগ্ন সম্পাদক ইমরান হোসেন তারা ও ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য সিদরাতুল মুনতাহা প্রমুখ

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় ক্ষেতে মুরগী ঢোকাকে কেন্দ্র করে চাচাতো ভাইয়ের হাতে খুন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

কুষ্টিয়ায় রসুন ক্ষেতে মুরগী ঢোকাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক বিরোধের জেরে হাফিজুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার(১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মঠপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হাফিজুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত নুরুল হুদার ছেলে। নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাচাতো ভাই মহিদের রসুন ক্ষেতে হাফিজুলের মুরগী ঢুকে রসুনের চারা নষ্ট করছিল। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। শনিবার দুপুরে আবারও রসুন ক্ষেতে মুরগী ঢুকলে মহিদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

একপর্যায়ে মহিদ বাড়ি থেকে ধারালো বল্লম এনে হাফিজুলকে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন মাতব্বর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ