আজঃ বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজারে!

ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘর বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকার ধামরাইয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর ঘর ২৫-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে একটি চক্র বলে দাবি এলাকাবাসীর। চক্রটির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর প্রকৃত উপহারের মালিকের দলিল কৌশলে নিয়ে অপরের কাছেও বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।

ধামরাই উপজেলার তথ্য মতে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নিমার্ণ করা হয়েছে ৬০০টি ঘর। যার প্রতিটি ঘরের জন্য নির্মাণ ব্যয় প্রায় ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। যে সব ঘর ভূমিহীন ও ঘরহীনদের মাঝে বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৮০টি ঘরের নিমার্ণের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নে ৪২টি ঘর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এর আগে ইউনিয়নটিতে ৭৮টি ঘর সুবিধাভোগীদের আনুষ্ঠানিকভাবে মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় সোমভাগ ইউনিয়নের ঘর কয়েকমাস পূর্বে উদ্বোধন হয়। যেখানে টাকার বিনিময়ে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন একাধিক পরিবার। আরও বেশ কয়েকটি পরিবারকে ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এমনটাই অভিযোগ করেন স্থানীয় ও সুবিধাবঞ্চিতরা। বালু ও ড্রোজার ব্যবসায়ী দুলাল চক্রটির অন্যতম সদস্য সোহেলের মাধ্যমে ঘর প্রতি ২৫-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। এছাড়া ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক বছর আগে অগ্রিম টাকা নিয়েছে তারা। সর্বশেষ প্রকল্পের ১০৭নং ঘরটি অন্য একটি পরিবারের কাছে ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় চক্রটি।

চক্রের হোতারা হলেন- ধামরাই উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়ের দেপাসাই গ্রামের আলতাফ ফকিরের ছেলে সোহেল রানা ও একই এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে দুলাল মিয়া ওরফে ড্রেজার দুলাল। তবে তাদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাকার বিনিময়ে ঘর পাওয়া এক ব্যক্তি বলেন, আমাকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কয়েকদিন আগে  প্রকল্পের একটি ঘর বুঝে দেওয়া হয়। পরে প্রকল্পের ১০৩নং ঘরটি খালি করার দায়িত্ব দেয় স্থানীয় দুলাল ও সোহেল। কথা অনুযায়ী ১০৩নং ঘর খালি করে চাবি দুলালের কাছে বুঝিয়ে দেন তিনি।

সুবিধাবঞ্চিত এক বৃদ্ধা জানান, গত এক বছর আগে স্থানীয় দুলালের কাছে ঘর বরাদ্দের জন্য সহযোগিতা চান তিনি। দুলাল ঘর দেওয়ার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। কথামত ৪০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিলেও এখন পর্যন্ত ঘর দেয়নি দুলাল। এখন টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করে।
 
একই অভিযোগ করে আতা নামের এক ব্যক্তি ঢাকাপোস্টকে বলেন, দুই বছর আগে ঘর বরাদ্দের কথা বলে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছে সোহেল। তবে তার জন্য নির্ধারিত ঘর অন্য এক ব্যক্তির কাছে কাছে বিক্রি করে দেয়। মামলা ও হামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।

স্বপন নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, স্থানীয় সোহেল একটি কক্ষ ভাড়ার কথা বলে দলিল নিয়ে যায়। পরে এক নারীর কাছে বিক্রি করে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেয়। ঘরটি ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে বলে পরে জানতে পারি।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত সোহেল বলেন, স্থানীয় কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে বালু ব্যবসায়ী দুলালের  ব্যাপারে তিনি বলেন, “সে এমপি সাহেবের ভাতিজা, তার কাছে মাঝে মাঝে বিভিন্ন কাজের জন্য যাওয়া হয় এ ছাড়া কিছুই না। সে কোটি কোটি টাকা আয় করে। সে কেন অল্প টাকা নিতে যাবে।”

টাকার বিনিময়ে ঘর বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে দুলাল বলেন, “আমি সরকারি প্রকল্পে বালু ও মাটি ভরাট করি। সোমভাগেও আমি মাটি ফালাইছি টাকা পাইছি কাজ শেষ। আমি কারো কাছে ঘর বিক্রি করি নাই।”  

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, আমরা কয়েকটি ঘর বিক্রয়ের কথা জানতে পেরেছি। এতোমধ্যে কয়েকটি ঘর উদ্ধার করা হয়েছে। প্রকৃত মালিক যদি অসহায় হয় তাদেরকে হস্তান্তর করা হবে। এসব ঘরের মালিকানা পরিবর্তন শুধুমাত্র উত্তরাধিকার সূত্রে পাবে। এছাড়া কেউ মারা গেলে তার পরিবর্তে যাচাই বাছাই করে অসহায় ভূমিহীনদের কে দেওয়া হবে। এখানে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। তারপর কিছু জায়গাতে এমন ঘটনা শুনেছি সেখানে যাচাই বাছাই চলছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার – ১


রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানা এলাকায় আট বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে তুষার (১৮) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৫।রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানাধীন গোপালপুর খাইরুলের হোটিলের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত তুষার রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানাধীন রামনগর এলাকার মৃত একরামুল হোসেনের ছেলে।
র‌্যাব-৫ জানায়, ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বাদী ইসমাইল হোসেন (৩৮) এর মেয়ে ভিকটিম নাইমা খাতুন (০৮) রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয এর দ্বিতীয শ্রেণীর ছাত্রী। আসামি তুষার একজন ভ্যানচালক ও ভিকটিমের পাড়া প্রতিবেশী চাচা। গত ১৮/১২/২০২৪ তারিখে সকাল ১১:৪৫ ঘটিকার সময় ভিকটিম হেলিপ্যাডের মাঠে

খেলাধুলা করছিল। সেই সময় আসামি ভিকটিমকে জলপাই খাওয়ানোর কথা বলে তার ভ্যান গাড়িতে করে গোদাগাড়ী থানাধীন পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের হেলিপ্যাড সংলগ্ন সরমোংলা জঙ্গলের পূর্বকোণে নিয়ে যায়।

একই তারিখ ১২:০৫ ঘটিকার সময় আসামি ভিকটিমের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয় এবং পড়নের জামা ও পায়জামা খুলে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিম ভয়ে ও ব্যথায় চিৎকার করিলে আসামি ভিকটিমের মুখে গামছা চেপে ধরে এবং হুমকি দেয় এই ঘটনার কথা যদি সে কাউকে বলে তাহলে তাকে মেরে ফেলবে এই কথা বলে আসামি ভিকটিমকে ললিপপ

খাওয়ার জন্য ১০ টাকা দেয় এবং তাহার ভ্যান গাড়িতে করে ভিকটিমকে জনৈক রাজুর বাড়ির পাশে রাস্তায় নামিয়ে দেয়। সেই সময় ভিকটিম রাস্তায় বাবাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে চলে যায় এবং ঘটনার কথা খুলে বলে। উক্ত ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।র‌্যাব-৫ আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার ধর্ষণ মামলা মূলে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাজশাহীতে ডাকাতির সময় আটক- ২


রাজশাহী নগরীর তালাইমারী কাঁচা বাজার সংলগ্ন এনামুল হকের বাড়িতে ডাকাতির সময় এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে দুইজন ডাকাত আটক হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে একদল ডাকাত বাড়িটিতে হানা দেয় এবং লুটপাটের চেষ্টা চালায়।

স্থানীয়দের টের পেয়ে চিৎকার করলে এলাকাবাসী ছুটে আসে। পরে গণধোলাই দিয়ে মো. তাহামিদ ইসলাম (২৬) নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তিনি নগরীর সাগর পাড়ার মো. তৌফিকুল ইসলামের ছেলে।

এ ঘটনায় আরও দুইজনের সম্পৃক্ততার কথা উঠে এসেছে। তারা হলেন উম্মে হানী শিলা,যিনি বিনোদপুরের আবু সাহাদাৎ সায়েমের স্ত্রী।এলাকাবাসীর সাহসিকতায় অপরাধীরা ধরা পড়ায় তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো: আব্দুল মালেক বলেন,আমরা অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।দুইজনকে জনগণ গণধোলাই দিয়েছে তাদেরকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে রেখে রাজশহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ