আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজারে!

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘর বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকার ধামরাইয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর ঘর ২৫-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে একটি চক্র বলে দাবি এলাকাবাসীর। চক্রটির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর প্রকৃত উপহারের মালিকের দলিল কৌশলে নিয়ে অপরের কাছেও বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।

ধামরাই উপজেলার তথ্য মতে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নিমার্ণ করা হয়েছে ৬০০টি ঘর। যার প্রতিটি ঘরের জন্য নির্মাণ ব্যয় প্রায় ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। যে সব ঘর ভূমিহীন ও ঘরহীনদের মাঝে বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৮০টি ঘরের নিমার্ণের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নে ৪২টি ঘর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এর আগে ইউনিয়নটিতে ৭৮টি ঘর সুবিধাভোগীদের আনুষ্ঠানিকভাবে মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় সোমভাগ ইউনিয়নের ঘর কয়েকমাস পূর্বে উদ্বোধন হয়। যেখানে টাকার বিনিময়ে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন একাধিক পরিবার। আরও বেশ কয়েকটি পরিবারকে ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এমনটাই অভিযোগ করেন স্থানীয় ও সুবিধাবঞ্চিতরা। বালু ও ড্রোজার ব্যবসায়ী দুলাল চক্রটির অন্যতম সদস্য সোহেলের মাধ্যমে ঘর প্রতি ২৫-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। এছাড়া ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক বছর আগে অগ্রিম টাকা নিয়েছে তারা। সর্বশেষ প্রকল্পের ১০৭নং ঘরটি অন্য একটি পরিবারের কাছে ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় চক্রটি।

চক্রের হোতারা হলেন- ধামরাই উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়ের দেপাসাই গ্রামের আলতাফ ফকিরের ছেলে সোহেল রানা ও একই এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে দুলাল মিয়া ওরফে ড্রেজার দুলাল। তবে তাদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাকার বিনিময়ে ঘর পাওয়া এক ব্যক্তি বলেন, আমাকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কয়েকদিন আগে  প্রকল্পের একটি ঘর বুঝে দেওয়া হয়। পরে প্রকল্পের ১০৩নং ঘরটি খালি করার দায়িত্ব দেয় স্থানীয় দুলাল ও সোহেল। কথা অনুযায়ী ১০৩নং ঘর খালি করে চাবি দুলালের কাছে বুঝিয়ে দেন তিনি।

সুবিধাবঞ্চিত এক বৃদ্ধা জানান, গত এক বছর আগে স্থানীয় দুলালের কাছে ঘর বরাদ্দের জন্য সহযোগিতা চান তিনি। দুলাল ঘর দেওয়ার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। কথামত ৪০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিলেও এখন পর্যন্ত ঘর দেয়নি দুলাল। এখন টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করে।
 
একই অভিযোগ করে আতা নামের এক ব্যক্তি ঢাকাপোস্টকে বলেন, দুই বছর আগে ঘর বরাদ্দের কথা বলে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছে সোহেল। তবে তার জন্য নির্ধারিত ঘর অন্য এক ব্যক্তির কাছে কাছে বিক্রি করে দেয়। মামলা ও হামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।

স্বপন নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, স্থানীয় সোহেল একটি কক্ষ ভাড়ার কথা বলে দলিল নিয়ে যায়। পরে এক নারীর কাছে বিক্রি করে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেয়। ঘরটি ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে বলে পরে জানতে পারি।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত সোহেল বলেন, স্থানীয় কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে বালু ব্যবসায়ী দুলালের  ব্যাপারে তিনি বলেন, “সে এমপি সাহেবের ভাতিজা, তার কাছে মাঝে মাঝে বিভিন্ন কাজের জন্য যাওয়া হয় এ ছাড়া কিছুই না। সে কোটি কোটি টাকা আয় করে। সে কেন অল্প টাকা নিতে যাবে।”

টাকার বিনিময়ে ঘর বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে দুলাল বলেন, “আমি সরকারি প্রকল্পে বালু ও মাটি ভরাট করি। সোমভাগেও আমি মাটি ফালাইছি টাকা পাইছি কাজ শেষ। আমি কারো কাছে ঘর বিক্রি করি নাই।”  

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, আমরা কয়েকটি ঘর বিক্রয়ের কথা জানতে পেরেছি। এতোমধ্যে কয়েকটি ঘর উদ্ধার করা হয়েছে। প্রকৃত মালিক যদি অসহায় হয় তাদেরকে হস্তান্তর করা হবে। এসব ঘরের মালিকানা পরিবর্তন শুধুমাত্র উত্তরাধিকার সূত্রে পাবে। এছাড়া কেউ মারা গেলে তার পরিবর্তে যাচাই বাছাই করে অসহায় ভূমিহীনদের কে দেওয়া হবে। এখানে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। তারপর কিছু জায়গাতে এমন ঘটনা শুনেছি সেখানে যাচাই বাছাই চলছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ।


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন


ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।আহত ওসমান হাদীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।


একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

কুষ্টিয়ায় নারী পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল ছিনতাইচেষ্টা, যুবক আটক


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় এক নারী পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল ফোন ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগে আশিকুর রহমান (২১) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে থানাপাড়া পাঁচ বিল্ডিং এলাকায় এই ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে আটক করা হয়। আশিকুর রহমান খোকসা চরপাড়া এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে তাঁকে চুরি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।সন্ধ্যায় খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোতালেব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি বলেন, থানার পাশেই ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবলের বাসা। ডিউটি শেষে ফেরার পথে তাঁর মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ