আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

নৌকা ছাড়া কেউ এজেন্ট দিতে পারবে না’ আমতলী পৌর মেয়র।

বরগুনা প্রতিনিধি:

চিরুনি অভিযান চালানো হবে। অন্য দলের কেউ কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারবে না, ভোট দিতেও পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বরগুনায় আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান। আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়ার রহমানের ৩ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় তালতলীর গোডাউন সংলগ্ন কল বাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার। অতিথি হিসেবে না থাকলেও এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সফর সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত হয়ে সভায় বক্তব্য রাখেন আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমতলী-তালতলী আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। চিরুনি অভিযান চালাব, যে চিরুনি অভিযানের মধ্য দিয়ে ওরা কোনো এজেন্ট দিতে পারবে না, ভোট তো দূরের কথা। খেলা শুরু করব ১৮ তারিখের পরে। খেলা শুরু করব। স্বতন্ত্রের নাম ভুলে গিয়ে ওরা বলবে শেখ হাসিনা, নৌকা, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু।

মতিয়ার রহমান বক্তব্যে আরও বলেন, ‘উপজেলা কমিটি, পৌর কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি, এমনকি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সেক্রেটারি; একজনও যদি নৌকার বিরুদ্ধে যেতে পারে তবে আমরা নির্বাচন থেকে সরে যাব।

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মতিয়ার রহমানের এমন মন্তব্যের কারণে নির্বাচন কমিশন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভোটাররা কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়া নিয়ে শংকা তৈরি হবে।

বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার ফোরকান বলেন, ‘অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে কেন্দ্র এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। একইসঙ্গে নৌকার মনোনয়ন যারা পেয়েছেন, তাদের জনপ্রিয়তা যাচাইও হবে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। কিন্ত দলীয় বর্ধিতসভায় মতিয়ার রহমান যে বক্তব্য রেখেছেন, এটা এক প্রকার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ও সাধারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়া। তার এমন বক্তব্য কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও পেশিশক্তি প্রদর্শনের সামিল।

এ বিষয়ে জানতে বরগুনা আমতলী উপজলো আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমানের মুঠোফোনে বলেন, ‘এজেন্ট দিতে পারবে না এটা আমি বলেছি। আমি বোঝাতে চেয়েছি, আমাদের দলীয় কেউ স্বতন্ত্রের এজেন্ট হতে পারবে না।

চিরুনি অভিযান প্রসঙ্গে মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমাদের দলের কেউ স্বতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে কি-না সেটা জানতে চিরুনি অভিযান চালাব বলেছি।’ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের এজেন্ট খুঁজে পাবে না— এমন মন্তব্যের বিষয় তিনি বলেন, ‘যাদের সমর্থন নেই, তারা এজেন্ট তো খুঁজেই পাবে না।

বরগুনার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাইরাল ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে হাল্ট প্রাইজ ২০২৫ রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম।

হাল্ট প্রাইজ ২০২৫/২৬ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে নিবন্ধন বুথ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং ক্লাস প্রমোশন চালু করা হয়েছে। এ বছর প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত ও দলীয়—উভয়ভাবেই অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত নিবন্ধন ১০ ডিসেম্বর (বুধবার) এবং দলীয় নিবন্ধন ১৫ ডিসেম্বর (সোমবার) তারিখে সমাপ্ত হবে।

এবারের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ থিম “আনলিমিটেড”-যা শিক্ষার্থীদের জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করার সুযোগ করে দিচ্ছে।এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা দক্ষতার মাধ্যমে দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, অসমতা এবং শিক্ষার মতো বৈশ্বিক সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করতে পারবেন। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্ল্যাটফর্ম যেখানে সীমাহীন চ্যালেঞ্জের ভিত্তিতে তাদের ধারণাগুলোকে বাস্তবায়নে রূপ দেওয়া যাবে।

এ বছরের ক্যাম্পাস ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ অনিক, চিফ অব স্টাফ কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম মুনাজ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট কারিন সাফফানা—তাদের নেতৃত্বে প্রতিযোগিতাটি সফলভাবে আয়োজনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রতিযোগিতায় ২–৪ সদস্যের দল অংশ নিতে পারবে এবং সকল অংশগ্রহণকারীর বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হবে। প্রতিটি দলে অন্তত একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা বাধ্যতামূলক। দলের অন্যান্য সদস্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণ করতে পারবে।এছাড়া এ বছর দল না থাকলেও শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করতে পারবেন; পরবর্তীতে তাদের নিয়ে দল গঠন করা হবে।

রেজিস্ট্রেশন বুথ অথবা অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দলীয় অথবা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনে কোনো ফি নেই।দলীয় সদস্যরা যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আসুন না কেন, প্রতিযোগিতায় তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ