আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

পটিয়ায় বিচার চলাকালীন চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

  1.  পটিয়া উপজেলার ১১নং কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদে বিচার চলাকালীন চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ফটো সাংবাদিক সুরঞ্জিত শীল নামের এক ব্যক্তির ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক সুরঞ্জিত শীল ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মৃত সুজন কৃষ্ণ শীলের ছেলে এবং তিনি দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকায় কর্মরত রয়েছে। হামলার ঘটনায় পটিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফটো সাংবাদিক সুরঞ্জিত শীলের সাথে তার বড় ভাই বিশ্বজিৎ শীলের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিষয়ে বিরোধ চলছিলো। তারই প্রেক্ষিতে বিশ্বজিৎ পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্য ১১নং কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল পরিষদ কার্যালয়ে সালিসি বৈঠকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে উভয়কেই যথা সময়ে পরিষদ কার্যালয়ে হাজির থাকার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। নির্দেশ অনুযায়ী উভয় পক্ষই হাজির হন। এসময় আবেদনকারীর পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার নিখিল দে। পরবর্তীতে বিচারকার্য আরম্ভ হলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে বিশ্বজিৎ শীলের পক্ষের প্রতিনিধি মেম্বার নিখিল দে উত্তেজিত হয়ে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সুরঞ্জিত শীলের ওপর হামলা করে তাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মাটিতে ফেলে নষ্ট করে ফেলে। এসময় পরিষদের ভিতর উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে সাংবাদিক সুরঞ্জিত শীল বাদী হয়ে মেম্বার নিখিল দে ও তার বড় ভাই বিশ্বজিৎ শীলের নাম উল্লেখ করে পটিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন বলে জানা যায়, যাহার জিডি নং-২৫৯।

ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মেম্বার নিখিল দে’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সুরঞ্জিত আর আমি একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাদের সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। তাদের মধ্যে জমি জমা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ চলছিলো। বিরোধের জের ধরে গত ৫ এপ্রিল চেয়ারম্যানের নির্দেশে পরিষদে সালিসি বৈঠকে দুই ভাইকে ডাকা হয়। তখন আমি ছিলাম ওই বৈঠকে বিশ্বজিৎ শীলের পক্ষের প্রতিনিধি। বৈঠক চলাকালীন সুরঞ্জিত তার বড় ভাই বিশ্বজিৎ শীল এবং আমার ওপর উত্তেজিত হয়ে অশালীন আচরণ করতে থাকলে অনেক চেষ্টা করে থামাতে না পেরে রাগের মাথায় তাকে আমি ধাক্কা দেই। এর সূত্র ধরে আমাদের উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি ঘটনা ঘটে।

পরিষদে বিচার চলাকালীন মারামারির বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পরিষদের চেয়ারম্যান সরোজ কান্তি সেন নান্টু বলেন, বাদী বিশ্বজিৎ শীল আর বিবাদী সুরঞ্জিত শীল তারা আপন দুই ভাই। তাদের মধ্যে পৈত্রিক সম্পত্তি ও আরও অন্যান্য বিষয় নিয়ে অনেক বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিলো এবং অনেকবার সামাজিক ভাবে সালিসি বৈঠকও হয়েছে। তবুও তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিশ্বজিৎ পরিষদে আবেদন করলে গত ৫ এপ্রিল বিকাল ৫টায় তাদের দুই ভাইকে পরিষদে ডেকে আনা হয়। এসময় বাদী বিশ্বজিৎ শীলের পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার নিখিল দে। বিচারকার্য শুরু হলে এক পর্যায়ে সুরঞ্জিত ও বিশ্বজিৎ তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এসময় প্রতিনিধি নিখিল মেম্বারের সাথে সুরঞ্জিতের কথা কাটাকাটির জের ধরে নিখিল সুরঞ্জিতের ওপর হামলা করলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি ঘটনা ঘটে। এসময় আমি তাদের আমি অনেক বাঁধা দিয়েছিলাম, তারা কেউ আমার কথা শুনেনি। পরবর্তীতে ওইদিন সালিসি বৈঠক স্থগিত করে আগামীতে আরেকটি সালিসি বৈঠকের দিন ধার্য্য করে বৈঠক স্থল সমাপ্তি করি। অন্যদিকে থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের বিষয়ে তদন্তে দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার উপপরিদর্শক মোঃ বিল্লল হোসেন বলেন, পরিষদে বিচার চলাকালীন মারামারির ঘটনায় সাংবাদিক সুরঞ্জিত শীল বাদী হয়ে লিখিল দে ও বিশ্বজিৎ শীল নামের দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ঘটনা বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি। তদন্ত শেষে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে জানান তদন্ত অফিসার মোঃ বিল্লাল।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।আহত ওসমান হাদীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।


একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

চাকুরী স্থায়ী হচ্ছেনা চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মচারীদের, কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দীর্ঘদিন কাজ করার পরও চাকুরী স্থায়ী না করে নতুন করে জনবল নিয়োগের উদ্যোগে কাফনের কাপড় পরে চট্টগ্রাম ওয়াসার সামনে বিক্ষোভ করেছেন দৈনিক ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ওয়াসার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা।
আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) শারমিন আলমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, মামলা থাকার পরও ওয়াসায় দৈনিক ভিত্তিতে কর্মরতদের স্থায়ী না করে উল্টো নতুন করে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন কাজ করার পরও তাদের স্থায়ী না করে নতুন করে জনবল নিয়োগের উদ্যোগ পরিকল্পিত। এসময় তারা অনতিবিলম্বে স্থায়ী নিয়োগের দাবি জানান।

তারা আরও বলেন, ওয়াসার ক্রান্তিকালে আমাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের বৈধতা দেওয়ার পরে অন্যদের নিয়োগ দিতে হবে। মামলা চলমান থাকার পরও কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে বিজ্ঞপ্তি ছাড়ে। হাইকোর্টকে অমান্য করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রতিবাদে আমরা এখানে মিলিত হয়েছি। বিগত বছরগুলোতেও আমরা বৈষম্যের শিকার ছিলাম এখনও বৈষম্যের শিকার। চট্টগ্রাম ওয়াসায় বিভিন্ন পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত আছেন দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ