আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

পরিবার পাবে ১০ লাখ টাকা

চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ,আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চুয়েট কর্তৃপক্ষ, চুয়েটের ছাত্র প্রতিনিধি, বাস মালিক সমিতি, পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের বৈঠকে হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার সেলিমা কাদের কলেজ এলাকায় বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আবারও সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে চুয়েট গেটের সামনে সড়কে অবস্থান নেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা সড়কের দুই পাশে গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং টায়ার ও বাসের সিট জ্বালিয়ে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সড়ক নিরাপদ করতে বেলা ১২টার দিকে ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
দূরপাল্লার বাস ব্যতীত সকল স্থানীয় বাস, লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে এবং ঘাতক বাস চালককে গ্রেফতারসহ তাদের দাবি মেনে নিতে ৭২ ঘন্টার সময় বেঁধে দেন তারা। দুপুর ২টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলমান রেখেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত প্রথম দফা আন্দোলনেও সড়ক অবরোধ করেছিলো শিক্ষার্থীরা। এসময় এবি ট্রাভেলসের তিনটি বাস আটক করা হয় এবং ভাংচুর করা হয় এবং অন্য একটি গাড়ি বাইরে এনে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে চুয়েট শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ চলছে। তীব্র রোদ উপেক্ষা করে সহপাঠিদের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ১২টার দিকে ৯ দফা দাবী উপস্থাপন করে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে তারা। নিহত চুয়েট শিক্ষার্থী তৌফিক হোসেনের গায়ভী জানাজা সড়কের উপর আদায় করেন তারা এবং সন্ধ্যায় শান্ত সাহার জন্য বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন রয়েছে বলে জানান তারা। এদিকে এসব বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করা হচ্ছে বলে জানান রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির। তাদের যৌক্তিক দাবী মেনে নিয়ে সড়ক নিরাপদ করতে কঠোর পদক্ষেপের পাশাপাশি এই দুর্ঘটনায় জড়িত ঘাতক চালককেও আটকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিভিন্ন সংস্থার সাথে জেলা প্রশাসকের বৈঠকে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি খুব শিগগিরই এ সড়ক সম্প্রসারণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, এছাড়াও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় মন্ত্রী মহোদয় নিহত দুই শিক্ষার্থী ১০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। এছাড়াও আহত শিক্ষার্থী ৩ লাখ টাকা পাবেন। কালকের মধ্যেই আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণায়ে কাগজপত্রসহ ফরমপূরণ করে পাঠিয়ে দিবো। দু একদিনের মধ্যে আমরা সে টাকা পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পারবো বলে আশা করছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ