আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

প্রবল স্রোতের প্রবাহে জাহাজ ভেসে আসা

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে লাইটারেজ জাহাজের ধাক্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবল স্রোতের প্রবাহে জাহাজ ভেসে আসা একটি জাহাজ সংস্কারাধীন কালুরঘাট সেতুতে ধাক্কা দিয়েছে। এ সেতুর ওপর দিয়ে দোহাজারি ও কক্সবাজার রুটের ট্রেন চলাচল করে। তবে দুর্ঘটনার কারণে ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এমভি সমুদা ১ নামের একটি লাইটারেজ জাহাজ সেতুতে ধাক্কা দেয়। এতে সেতুর সঙ্গে আটকে যায় জাহাজটি।এমভি সামুদা-১ জাহাজটি মেসার্স রোকনুর মেরিটাইম লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম প্রান্তের এ কে খান ডক ইয়ার্ড থেকে প্রবল স্রোতের প্রবাহে জাহাজ ভেসে এসে সেতুতে ধাক্কা দেয় এবং আটকে যায়। এ ঘটনার খবর পেয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত ও সেতুর সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।
নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম উল্লাহ বলেন, কালুরঘাট সেতু থেকে প্রায় এক-দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে হামিদচর এলাকায় একে খান ডকইয়ার্ডে জাহাজটি তোলার কথা ছিল। জোয়ার শুরুর পর জাহাজটি ডকইয়ার্ডে তোলার জন্য ঘোরানোর সময় সেটি ডুবে যাবার পরিস্থিতি হয়। কিন্তু বাতাসের তোড়ে জাহাজটি গিয়ে সেতুকে ধাক্কা দেয়। এরপর সেটি সেখানে আটকে যায়। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, জাহাজটি খালি ছিল। জাহাজের মূল মাস্টার কয়েকদিন আগে মারা গেছেন। সেকেন্ড মাস্টার সেটিকে ডকইয়ার্ডে তোলার চেষ্টা করছিলেন। সম্ভবত অদক্ষতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উনারা নির্ধারণ করবেন। এরপর উনারা যদি মামলা করেন, আমরা অবশ্যই মামলা নেব। অন্যথায় আমরা বাদী হয়ে মামলা করব। আমাদের পক্ষ থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষকে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়া রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, জাহাজের ধাক্কায় কালুরঘাট সেতুর একটি গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা লাইটারেজ জাহাজের মাস্টারকে খুঁজেছিলাম। কিন্তু সেখানে কাউকেই পাওয়া যায়নি। সম্ভবত জোয়ার এবং প্রবল বাতাসের কারণে জাহাজটি দিক হারিয়ে সেতুতে এসে ধাক্কা দিয়েছে। বিষয়টি আমরা রেলওয়ে পুলিশকে জানিয়েছি। তারা আইনগত পদক্ষেপ নেবে।
ট্রেনরুটের পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু। জরাজীর্ণ সেতুটিতে এখন সংস্কার কাজ চলছে। এ জন্য গত বছরের ১ আগস্ট থেকে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। জুনে মেরামত কাজ শেষে সেতু খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ