আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

আত্রাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের উত্তাপ বাড়ছে

ফিরোজ আহমেদ প্রতিনিধি আত্রাই নওগাঁ।

নওগাঁ:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আগামী ২৯ মে নওগাঁর আত্রাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ভোটের উত্তাপ ততোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১ লাখ ৭০ হাজার ১’শ ৫২ জন ভোটারের মন জয় করতে ৮ চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৩ পুরুষ ৪ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী দিন রাত সমান করে ভোটারের দারে দারে ঘুরছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।

৮ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ৭ জনই নতুন মুখ। ইতিপূর্বে কেউ ওই চেয়ারে বসতে পারেন নি তারা। ভোটারদের ধারনা সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এক জনের দখলে থাকা চেয়ার অন্যের দখলে যাচ্ছে।

তথ্য অনুসন্ধানে ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন উপজেলা যুবদল আহবায়ক ও বিএনপির বহিস্কৃত সদস্য একরামুল বারী রঞ্জু। বিএনপির পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের কর্মসূচি পালন করা হলেও ভোটারের মধ্যে তার কোন প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে না। বরং হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রতি তাদের আকৃষ্ট করছে বলে বিএনপি ঘরনার ভোটাররা জানান।

জোড়াফুল প্রতীক নিয়ে উপজেলা আ’লীগ সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান পলাশ ভোটের মাঠে রয়েছেন। পল্লী বিদ্যুতের দুর্নাম তার ঘারে থাকলেও দুই বার চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়ে পরাজয়ের দরুন সিমপ্যাথি ভোট এবং বর্তমান এমপির নির্বাচন করা ৫০ শতাংশ নেতা-কর্মী তার পক্ষে কাজ করায় ওই ভোটগুলো তার দখলে আছে বলে ভোটাররা মনে করছেন।

কৈ মাছ প্রতীক নিয়ে উপজেলা আ’লীগ সহ-সভাপতি এবাদুর রহমান প্রামানিক ভোটের মাঠে রয়েছেন। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর চেয়ারম্যানের চেয়ারে থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে সালিসের নামে উভয় পক্ষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, মুখের ভাসা বুঝতে না পারা, জমি জবর-দখল, উন্নয়ন প্রকল্প দেওয়ার নামে উৎকোচ গ্রহণ, অস্বাভাবিক হারে তার সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগ থাকলেও মসজিদ-মন্দির এবং ভোটারদের মাঝে অনুদানের মাধ্যমে ভোটের মাঠ উৎফুল্ল করে রেখেছেন তিনি।

মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে উপজেলা আ’লীগ সাধারন সম্পাদক আক্কাছ আলী প্রামানিক ভোটের মাঠে রয়েছেন। দলীয় নেতা-কর্মী তার পক্ষে কাজ করায় তার সুফল তিনি ভোগ করবেন বলে ভোটারেরা মনে করছেন
কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে দুই বারের বিজয়ী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম ভোটের মাঠে রয়েছেন। তিনি নারীদের জাগরন ও অধিকার বিষয়ে সচেতন করছেন।

আনারস প্রতীক নিয়ে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বাবর ভোটের মাঠে রয়েছেন। সাবেক উপজেলা আ’লীগ সভাপতি প্রয়াত সিদ্দিকুর রহমান রাজার ছোট ভাই হওয়ায় তিনি কিছুটা সুফল ভোগ করবেন বলে জানাগেছে।

ঘোড়া প্রতীক নিয়ে সনৎ কুমার প্রামানিক ভোটের মাঠে রয়েছেন। অনেকের ধারনা জাতিগত ভাবে তিনি কিছুটা সুফল ভোগ করবেন। তবে এবিষয়ে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে মাহাতাব উদ্দিন ভোটের মাঠে রয়েছেন।

একইসাথে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে তালা প্রতীক নিয়ে উপজেলা আ’লীগ যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক আফছার আলী প্রামানিক, চশমা প্রতীক নিয়ে উপজেলা আ’লীগ প্রচার সম্পাদক হাফিজুল শেখ এবং মাইক প্রতীক নিয়ে যুবদল বহিস্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক ভোটের মাঠে রয়েছেন। তবে ভোটারদের ধারনা চশমা ও তালা প্রতীকের মধ্যে লড়াই হবে।

সেইসাথে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে কলস প্রতীক নিয়ে ফেরদৌসী ইয়াসমিন চেীধুরী, হাঁস প্রতীক নিয়ে শামছুন নাহার রনি, সেলাই মেশিন নিয়ে রওশন আরা পারভীন এবং ফুটবল প্রতীক নিয়ে মিতু বানু ভোটের মাঠে রয়েছেন। তবে ভোটারদের ধারনা কলস ও ফুটবল প্রতীকের মধ্যে এক জন বিজয়ের মালা পড়বেন।

এদিকে কেহ যেনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারেন সেজন্য ৬৭ ভোট কেন্দ্রের সবগুলোতে পুলিশ প্রশাসন সর্বদা নজর রাখছেন বলে আত্রাই থানা অফিনার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল ইসলাম জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, ভোটাররা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিরাপদে বাড়ী ফিরতে পারেন সেব্যাপারে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ