আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

৬ষ্ঠ সংসদে তিনি মন্ত্রী থাকাকালে ছুটি নিয়ে নিজ জেলা ভোলায় গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে সাড়া জাগিয়েছিলেন

কথাসাহিত্যিক ও গণমানুষের রাজনীতিক মোশারেফ হোসেন শাজাহান

রিপন শান

জনসেবার মাধ্যমেই তিনি অস্ট্রেলিয়ার লীন রিড, শ্রীলঙ্কার আর্যরত্ন এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মহিয়সী নারী মাদাম তেরেসা প্রমুখের ঘনিষ্ঠ সাহচর্য পেয়েছিলেন

গণমানুষের জন্য রাজনীতি, পলিমাটি নিষিক্ত কথাসাহিত্য, সাংবাদিকতার ঐকতান আর উদার বুদ্ধিদীপ্ত সাংস্কৃতিক বিস্তরণে স্বকালজয়ী অবদানের জন্য, দেশ ও দেশের মানুষ- বিশেষ করে নদীবিধৌত ভোলার মানুষ কোনো দিন তাঁকে ভুলতে পারবে না । তিনি গণমানুষের রাজনীতিবিদ মোশারফ হোসেন শাজাহান।

বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অন্যতম রূপকার মোশারেফ হোসেন শাজাহান তার জীবদ্দশায় কখনোই ব্রাকেটবন্দী মানসিকতায় বেষ্টিত থাকেননি । শুভকাজে দেশের কাজে সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে পথ চলতে পছন্দ করতেন তিনি । তাঁর সময়ে ভোলার সাংস্কৃতিক অঙ্গন ছিল নানাবিধ প্রতিভার জৌলুশে মুখরিত । হৃদয়ের সমস্ত সুরভী দিয়েই সেকালের তরুণ সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী শাজাহান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ভোলা প্রেসক্লাব । তারসময়ে ‘ব্যক্তিবিবাদ’ ‘গোষ্ঠীবিবাদ’ ভোলা প্রেসক্লাবকে গ্রাস করতে পারেনি। তিনি দল করতেন কিন্তু কখনোই দলকানা ছিলেন না ।

তাঁর স্বপ্নের দ্বীপ প্রলয়ের দ্বীপ ( when paradise becomes inferno ) যারা পড়েছেন তারা নিঃসন্দেহে স্বীকার করবেন- মোশারফ হোসেন শাজাহান একজন আন্তর্জাতিক মানের লেখক। অন্তর জাগানিয়া কথাসাহিত্যিক। শফিক রেহমান সম্পাদিত সাপ্তাহিক যায়যায়দিন এর ‘জোনাকি মন’ কলাম টি যারা নিয়মিত পড়েছেন- তারা স্বীকার করবেন মোশারফ হোসেন শাজাহান শুধু একজন কথাসাহিত্যিক নন, কথাসৃজক কথাশিল্পী। চরকলমীর সুখদুঃখে তিনি বেঁচে থাকবেন হাজার বছর । বেঁচে থাকবেন এষণায় । আপন মহিমায় । স্মৃতিকাতর যেকোনো পাঠকই কথাশিল্পের বিকাশ ও বিন্যাসে আটকে যাবেন তাঁর স্মৃতির ধূলায় পথিকে ।

প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান ভোলারত্ন মোশারেফ হোসেন শাজাহান এর জন্ম ১৯৩৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, ভোলায়। পিতা বনেদি ব্যবসায়ী মরহুম আলতাজের রহমান। মা পরলোকগত মাসুমা খানম চৌধুরাণী।
বস্তুত মোশারেফ হোসেন শাজাহানের কর্মমুখর জীবন ভোলার ভাগ্যাহত ও অশিক্ষিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন প্রচেষ্টায় নিবেদিত ছিল আমরণ। বন্ধুজনের ব্যানারে তাঁর জনসেবা ভোলার মানুষ যুগ যুগ মনে রাখবে। ১৯৭০ সালের ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ও প্লাবনে ভোলার হাজার হাজার মানব সন্তান নিহত ও আহত হয় । বহু গবাদি পশু হাঁস-মুরগি সম্পদ বাড়িঘর ধ্বংস হয়। দূর্গত মানবতার ডাকে তৎক্ষণাৎ মোশারেফ হোসেন শাজাহান বন্ধু-বান্ধব ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে মৃতদের সৎকার, মহিলা ও শিশুদের উদ্ধারকার্য পরিচালনা করেন। অনুরূপভাবে ১৯৮৬ সালে দুর্ঘটনায় পতিত সামিয়া লঞ্চের যাত্রীদের উদ্ধার করেন, যা ছিল তাৎক্ষণিক উদ্যোগ । তাঁর এই উদ্যোগের কথা মানুষ আজও ভুলতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে জনসেবার মাধ্যমেই তিনি অস্ট্রেলিয়ার লীন রিড, শ্রীলঙ্কার আর্যরত্ন এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মহিয়সী নারী মাদাম তেরেসা প্রমুখের ঘনিষ্ঠ সাহচর্য পেয়েছিলেন।
১৯৮০ সালের ২৩ জানুয়ারি তিনি তাঁর সতীর্থদের নিয়ে চর শশীভূষণ থেকে এক মানবিক যাত্রা শুরু করেন। সুদীর্ঘ ১১০ মাইল যাত্রাপথে অন্তত ৫০টি জন সমাবেশে বক্তব্য রেখে মানুষকে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করেন। একশ’ অনাথ শিশুকে সরকারি সাহায্য ব্যতিরেকে আশ্রয় প্রদানে সক্ষম হন। ১৯৮২ সালে বনায়ন প্রকল্প হাতে ‘নিয়ে অনাথ শিশুদের কাজের সংস্থান করেন। এতে ৬ হাজার গাছের চারা রোপন করা হয়। দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সরকারি রাস্তার উভয় পার্শ্বে বৃক্ষরোপন শুরু করেছিলেন। এতে দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি পরিবেশের উপর সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়ে । তাঁর এ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৪ এবং ১৯৯৭ সালে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত করেন।
১৯৮৩ সালে তিনি তাঁর কিছু অনুসারীসহ, শ্রীলঙ্কার পল্লী অঞ্চলে গিয়ে সেখানকার গণশিক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। দেশে ফিরে তিনি জাতীয় বন্ধুজন পরিষদ- বাংলাদেশ, গঠন করেন। এরপর শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্র গড়ে তুলে ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দশ সহস্রাধিক দুস্থ শিশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ প্রদান করেন । এছাড়া ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের বিনামূল্যে খাবার স্যালাইন বিতরণ করেন ।
কৃষকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে
মোশারেফ হোসেন শাজাহান এক অকুতোভয় যোদ্ধা। এই সংগ্রামে তিনি ৬০০০ দরিদ্র কৃষককে পদযাত্রার নেতৃত্ব দেন। পুলিশ কর্তৃক নির্মমভাবে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র রুবেল হত্যার প্রতিবাদে অনশন ধর্মঘট পালন করে তিনি বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। শিবপুর,ভেলুমিয়া, ইলিশা, ভেদুরিয়া ইত্যাদি এলাকায় কোন সরকারি সাহায্য ছাড়াই কৃষি জমিতে তিনি পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে জন সাধারণকে নিয়ে সুদীর্ঘ খাল খনন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ১৯৯৪ সালে সুদূর উত্তরবঙ্গের লালমনিরহাটে স্বাক্ষরতা অভিযানের নেতৃত্ব দেন মোশারেফ হোসেন শাজাহান।
৬ষ্ঠ সংসদে তিনি মন্ত্রী থাকাকালে ছুটি নিয়ে নিজ জেলা ভোলায় গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে সাড়া জাগিয়েছিলেন। যে কর্মসূচির মাধ্যমে ৪ হাজার ৬শ’ ১৬টি কেন্দ্র চালু করেন এবং সমসংখ্যক পুরুষ ও মহিলা প্রশিক্ষক নিযুক্ত করেন। ১৯৯৫ সালের ৬ ডিসেম্বর এই শিক্ষা কার্যক্রম ১ লাখ ১ হাজার ৬শ’ ৭০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে বাংলাদেশের দৈনিক সমূহের সাংবাদিক, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে সনদপত্র প্রদানের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। এই সফল কর্মসূচির পরবর্তী এক সরকারি জরিপে এক থানার স্বাক্ষরতার হার পাওয়া যায় ৯৭%।
মোশারেফ হোসেন শাজাহান যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান অর্থ যোগানদাতা তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ১. জাতীয় বন্ধুজন পরিষদ, ২. আলতাজের রহমান কলেজ, ভোলা, ৩. মাসুমা খানম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ভোলা; ৪. বন্ধুজন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভোলা; ৫. দক্ষিণ চরনোয়াবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভোলা; ৬. চরনোয়াবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়; ৭. পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়; ৮. লামসিপাতা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, দৌলতখান ইত্যাদি।

রাজনীতি ছাড়াও সাহিত্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাঁর অবস্থান ঈর্ষণীয়। ছাত্রাবস্থায় তাঁর ‘নীড়-ভাঙ্গা ঝড়’ নাটক ভোলা ও বরিশাল ছাড়াও দেশের অন্যান্য স্থানে মঞ্চস্থ হয়। এ সময়ে তার ‘অনন্য ইতিহাস’ নাটকও জনপ্রিয় ছিল। ১৯৬৫ সালে তাঁর প্রথম গল্পের বই ‘ঝরা পালকের গান’ (মোস্তফা হারুণের উদ্যোগে) প্রকাশিত হয়। ‘৯০-এর পর তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা এষণা, স্মৃতির ধূলায় পথিক, ভাগ্যবান, চর কলমীর সুখ-দুঃখ, স্বপ্নের দ্বীপ প্রলয়ের দ্বীপ (এটি ইংরেজিতে অনুবাদ হয়েছিল), টিভিতে তাঁর নাটক ‘অকস্মাৎ’ (১৯৬৮), ‘সমান্তরাল’ (১৯৯২) ও ‘বহতা এষণা’ (১৯৯৩) খুবই আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তাঁর ‘চর কলমীর সুখ-দুঃখ’ উপন্যাস নিয়ে একুশে টেলিভিশনে সিরিজ নাটক হয়েছে। লন্ডনের পেঙ্গুইন থেকে তাঁর একটি গ্রন্থের অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ‘জোনাকী মন’ তাঁর সর্বশেষ প্রকাশনা। জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার তিনি একজন জনপ্রিয় কলামিষ্ট ছিলেন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ৬ বার নির্বাচিত এমপি। ১৯৮০ সালে উপমন্ত্রী, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে তিনি বেশ কয়েকবার ফ্রান্স, চীন, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেন। যায়যায় দিন-এ প্রকাশিত তাঁর কলাম ‘জোনাকী মুন’ খুবই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সর্বশেষ তিনি বিগত ১ল অক্টোবর ২০০১-এ অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন এবং সরকার প্রতিষ্ঠার পর তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বহুমাত্রিক প্রতিভাবান রাজনীতিবিদ ও সাহিত্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোশারফ হোসেন শাজাহান ৫ মে ২০১২ সালে ইউনাইটেড হাসপাতালে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন । দেশ ও দেশের মানুষ কোনো দিন ভূলবেনা তাঁকে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

আজ বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন ।। 💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️


আজ (৫ ডিসেম্বর ২০২৫) একাত্তরের পদাবলী, তোমার জন্য অনিন্দিতা, বৃক্ষমঙ্গলের কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন। কবির জন্মভূমি দ্বীপজেলা ভোলায় আজ যথাযথ আয়োজনে দিনটি উদযাপন করবে – জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলা এবং জলসিঁড়ি সাহিত্য আসর ।


ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি গ্রামের হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে আজ বিকেল ৪ টায় “কবি নাসির আহমেদের জীবন ও সাহিত্য” শীর্ষক এক মূল্যবান আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ ও কবিতার গান অনুষ্ঠিত হবে ।

অনন্য এই আয়োজনটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- ভোলা জেলা কালচারাল অফিসার জনাব হাসানুর রশিদ মাসুদ । কবি নাসির আহমেদ এর জীবন ও সাহিত্য শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাধারণ সম্পাদক ও জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের নির্বাহী সভাপতি সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান । স্বাগত বক্তব্য রাখবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সহ-সভাপতি কবি মিলি বসাক ।


সভাপতিত্ব করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সভাপতি ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র সহ-সভাপতি শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক কবি মহিউদ্দিন মহিন । কবি নাসির আহমেদ কে নিয়ে কথা বলবেন ও কবিতা পাঠ করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি আল মনির, কবি গবেষক নীহার মোশারফ, জলসিড়ির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি, জলসিঁড়ির কোষাধ্যক্ষ কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ, নির্বাহী সদস্য কবি চৌধুরী সাব্বির আলম , কবি কামরুন্নাহার , কবি মাহে আলম আখন প্রমুখ ।

❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ