আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সন্ত্রাসীরা খুলে নিল স্পিড বোটের ইঞ্জিন

রাজশাহী সংবাদদাতা

সন্রীসীরা গুলি করে খুলে নিল ষ্পীড বোর্ডের ইঞ্জিন। ঘটনাটি রাজশাহীর বাঘায়, পদ্মার চরাঞ্চলে বৈধ ইজারা নেওয়া বালুমহলের খেয়া ঘাটে চাঁদা দিতে না চাওয়ায় গভীর রাতে গুলি ছুঁড়ে দুইটা স্পিডবোট ভাঙচুর ও একটি স্পিড বোর্ডের ইঞ্জিন খুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহিৃত করতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, মাঝে মধ্যে গভীর রাতে নদীর পাঁড়ের খেয়াঘাট এলাকায় গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। গভীর রাতে একই ভাবে গুলির শব্দ শুনেছেন। সোমবার সকালে দেখতে পান দুইটা স্পিডবোট ভাঙচুর ও একটি স্পিড বোর্ডের ইঞ্জিন খুলে নিয়ে গেছে।

জানা যায়, রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আওতাধীন উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনগর মৌজায় ২৪.০০ একর বালুমহালটি এবছর(বাংলা১৪৩২ সন) মেসার্স সরকার ট্রেডার্সকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদার এসএম এখলাসের লোকজন সেখানে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে ক্রয়-বিক্রয় করেন।

সোমবার (৭ জুলাই’২৫) সরেজমিন কথা হলে ইজারাদারের কর্মরত ম্যানেজার বেলাল হোসেন জানান, এখানকার বালু নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় নিয়ে বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি করা হয়। তবে এই বালু নিয়ে যেতে হলে বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দিতে হয়। আর না দিলেই বিরোধিতা শুরু হয়। রোববার দিবাগত (৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেই ঘটনাই ঘটেছে।
ওয়াজেদ সিকদার নামে একজন বলেন, ভোরে মাছ ধরার জন্য এই খেয়া ঘাটে এসে সবার মুখে গুলাগুলি, দুইটা পিডবোট ভাঙচুর এবং একটি পিডবোটের ইঞ্জিন নিয়ে গেছে বলে শুনেছি।

স্পিডবোটের ড্রাইভার সালাম বিশ্বাস বলেন, সেই রাতে হঠাৎ করে ৩ টি নৌকায় প্রায় ৩৫-৪০ জন সন্ত্রাসী ঘাটে এসে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে।

খেয়া ঘাটে থাকা দুইটা স্পিডবোট নদীর মাঝখানে নিয়ে গিয়ে ভাঙচুর করে এবং একটি স্পিড বোটের ইঞ্জিন খুলে নিয়ে গেছে। ড্রেজারের মধ্যে থাকা ড্রাইভাররা ভয়ে নদীর ঘাট থেকে উপরে উঠে নিজেকে রক্ষার জন্য আত্মগোপন করেন। পরে গুলির খোশা দেখে গুলি ছুঁড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরেছেন।

খেয়া ঘাটের পাড়ের একজন গ্রাম পুলিশের ভাষ্য, রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে গুলির শব্দ পাই। এসময় ঘরের ফাঁক দিয়ে দেখেন তিনটা নৌকাতে প্রায় ৪০ জনের মতো লোক এদিক ওদিক ছোটা ছুটি করে গুলি ছুড়ছেন। এসময় ড্রেজার মেশিনের ড্রাইভাররা আমার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।

রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শামীম সরকার বলেন,বৈধ ইজারা নিয়ে তারা বালু উত্তোলন করছেন। কিছু দিন আগে লালপুরের কাকন বাহিনীর লোক যৌথভাবে খাল এন্টারপ্রাইজ নামে ¯স্লিপ দিয়ে খাজনা আদায় করে। যেটা বৈধ কিনা তার কোন প্রমাণ নেই। আমার এখানকার বালুবাহি ট্রলার বা ড্রেজার থেকে তারা চাঁদা দাবি করে। আমরা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়াই তারা হয়তো এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

যৌথভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে নৌ পুলিশ ও থানা পুলিশ। নৌ পুলিশের চারঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ হুমায়ূন রশীদ জানান, এপারে বৈধ ইজারা বালু উত্তোলন করছে। উত্তোলন করা বালু ঈশ্বরদীর দিকে নিয়ে বিক্রি করে। মূলতঃ সেই বালু ঈশ্বরদী বিক্রি করতে দিবে না। এনিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকার লোকজনের সঙ্গে দ্ব›দ্ব। এনিয়ে হয়তো রাতের অন্ধকারে গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে মুঠোফোনে দৌলতপুর থেকে জানানো হয়েছে,তাদের এলাকাতে গিয়ে রাতের অন্ধকারে গুলি ছুড়েছে।

বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ আফম আছাদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে নৌপুলিশ সহ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ