আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

রাজশাহীর ওয়াসার বড় প্রকল্প গ্রহন প্রসংনীয়

মো: গোলাম কিবরিয়া রাজশাহীর জেলা প্রতিনিধি

 

রাজশাহীর ওয়াসার বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছেন, সেইটা অনেক প্রশংসনীয় ।পদ্মার পানি পরিশোধনের মাধ্যমে জেলার মানুষের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাজশাহী ওয়াসা।চিনের হুনান কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক পানি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাজশাহী ওয়াসা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে গোদাগাড়ী উপজেলার সারাংপুর এলাকায় পানি পরিশোধনাগার নির্মাণকাজ চলমান। ইতোমধ্যে কাজের ২০ শতাংশ শেষ হয়েছে।রাজশাহী ওয়াসা সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন ২০ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

রাজশাহী ওয়াসা’র প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মামুদ বলেন, পরিশোধিত পানি ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রধান পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো হবে।এরই মধ্যে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের পাশে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।এ বিষয়ে রাজশাহী ওয়াসা এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সব মিলিয়ে এই পানি পরিশোধন প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো- ২০২৭ সালের মধ্যে রাজশাহী শহর ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।এ প্রকল্পের মাধ্যমে পদ্মা নদী থেকে পানি তুলে তা পরিশোধনের জন্য একটি আধুনিক পানি পরিশোধনাগার নির্মাণ করা হচ্ছে, যাতে বাসাবাড়িতে ব্যবহারের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ করা যায়।

পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৪ হাজার ৬২ কোটি টাকার এই প্রকল্পটির মেয়াদ ৪০ বছর। যার লক্ষ্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পানি সহজে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া।প্রকৌশলী মামুদ বলেন, রাজশাহী শহর ও এর পার্শ্ববর্তী পৌরসভার সকল বাসিন্দাকে বিশুদ্ধ পানির আওতায় আনাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

তিনি জানান, প্রকল্পটি বর্তমান পানির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে ও বাড়তে থাকা জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত পানির জোগান নিশ্চিত করবে।
এটি পদ্মার পানি থেকে ক্ষতিকর ও দূষিত উপাদান দূর করবে, যাতে তা নিরাপদভাবে পান করা যায়।
পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই ও কার্যকর একটি পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের আওতায় নগরীর পুরোনো পাইপলাইন ও হাইড্র্যান্টগুলো (আগুন নেভানো পানির নল) মেরামত ও আধুনিকায়নের ব্যবস্থাও রয়েছে। সেইসঙ্গে সবার কাছে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক একটি পানি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যও রয়েছে।

তিনি বলেন, এখন রাজশাহী শহরে দিনে প্রায় ১৩ কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে এবং এর মধ্যে ৯৮ কোটি ৩ লাখ ৭ হাজার লিটার পানি পাম্প দিয়ে মাটির নীচ থেকে তুলে নেওয়া হয়। আর ৯০ লাখ লিটার পানি আসে নদী থেকে। মোট পানি সরবরাহ হচ্ছে ১০৭ কোটি ৪ লাখ লিটার, যা চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম।

রাজশাহী ওয়াসা একসঙ্গে ১১০টি পাম্প ও ৮৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন ৬ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে ১০ কোটি ৭০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করছে।
সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে রাজশাহী ওয়াসা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল আলম সরকার বলেছেন, প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে শহরে আর কোনো পানির ঘাটতি থাকবে না।
তিনি বলেন, শহরের পানির চাহিদা মেটানোর পর নওহাটা ও কাটাখালী পৌরসভায়ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। রাজশাহী ওয়াসা সব সময়ই সেবা কার্যক্রমে সততা বজায় রাখার চেষ্টা করছে, বিশেষ করে পানির সরবরাহে যাতে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ সুবিধা পান।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরো বলেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সব অংশীজনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তোলাই তাদের লক্ষ্য।সব মিলিয়ে, প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভূ-উপরিস্থ পানির সরবরাহ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে।তিনি আরও জানান, রাজশাহী শহর এলাকায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা সংস্কার’ নামে একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে, যার মাধ্যমে অস্থায়ী সময়ে নিরাপদ পানি সরবরাহ করে জনগণের জীবনমান উন্নত করা হবে। আগামীতে রাজশাহীর জনগণ এই সুফল পাবেন

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ