আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

পাওনা টাকা নিয়ে মামা ভাগ্নে মারামারি

মো: গোলাম কিবরিয়া রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

 

রাজশাহীতে দুই কোটি টাকা পাওনা নিয়ে মামা-ভাগনের বিরোধের জেরে এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। নগরীর এয়ারপোর্ট থানায় এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী। তবে অভিযুক্ত মামা ঠিকাদার ওয়াসিমুল হক তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার ওয়াসিমুল হকের কাছে দুই কোটি টাকা পাওনা ভাগনে আল ফারুক আহমেদ নতুনের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাকা পরিশোধের কথা বলে নতুনকে ডেকে নেয়া হয় পবা উপজেলার ভুগরইল এলাকায় ওয়াসিমুল হকের কার্যালয়ে। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে নতুনকে মারধর করা হয়।

নতুনের স্ত্রী শিক্ষানবিশ আইনজীবী তানিয়া খাতুন এয়ারপোর্ট থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, মারধরে অংশ নেন ওয়াসিমুলের ভাই জয়নাল আবেদীন (৫৫), ওহাব আলী (৫২), তাদের ছেলে কাওছার আলী (২৬) ও মো. লিটন (৩০)। কাওছার লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে নতুন গুরুতর জখম হন। লিটন কাঠের চলা দিয়ে আঘাত করেন এবং জয়নালের আঘাতে তার মুখে রক্তাক্ত জখম হয়। এরপর কাওছার নতুনের কাছে থাকা নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগে বলা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত নতুনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আইনজীবী তানিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে মামার কাছে টাকা পাওনা। বারবার চাওয়ার পর মঙ্গলবার চেম্বারে ডেকে নিয়ে তাকে পেটানো হয়েছে। এখন আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারা সবাই জামিনে থাকা মামলার আসামি। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

অভিযোগে বলা হয়, মারধরকারীদের একজন জয়নাল আবেদীন ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়াসিমুল হক বলেন, ‘নতুন আমার কাছে কোনো টাকাই পায় না। বরং সে যুবলীগের পদধারী নেতা হয়েও বাইরে থাকে। সে আমার চেম্বারে ভাঙচুর করতে এসেছিল, লোকজন তাকে প্রতিহত করেছে। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমরাও মামলা করব।’

ওয়াসিমুল পেশায় একজন ঠিকাদার। আওয়ামী লীগের সময় রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ওয়াসিমুল রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর এলাকায় একচেটিয়া ঠিকাদারি পেয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তার কিছু কাজ এখনও চলমান। পবার নওহাটা পৌরসভায় ২০ কোটি টাকার ১০টি রাস্তার কাজের মেয়াদ তিন দফা বাড়িয়েও শেষ করতে পারেননি তিনি। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে ইতিমধ্যেই কয়েকটি রাস্তা ধসে পড়েছে ।

রাজশাহী এয়ারপোর্ট থানার ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘নতুনকে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে । এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ