আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

কালিয়াকৈরে ব্যবসায়ী দম্পতির ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন।

কালিয়াকৈর প্রতিনিধি

 

গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় এক ব্যবসায়ী দম্পতির ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। আহত ব্যবসায়ী বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী কালিয়াকৈর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একইসাথে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার সৈয়দপুর স্কুল পাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোঃ গিয়াস উদ্দিন (৬৫) ও তার স্ত্রী জোসনা বেগম (৩৫) স্থানীয় মোঃ সোহেল (৪০) নামের এক ব্যক্তির সাথে দীর্ঘদিন ধরে মাটি ও জমির ব্যবসা করে আসছিলেন। ব্যবসায়িক লভ্যাংশ ও মূলধনের অংশ হিসেবে গিয়াস উদ্দিন সোহেলের কাছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

গত ১৪ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাওনা টাকা চাওয়ায় বিবাদী সোহেল ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে গালিগালাজ এবং পরে কাঠের বাটাম দিয়ে গিয়াস উদ্দিনের বাম কুনুইয়ে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন। পরে বাম চোখের ওপরও আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে নীলাফুলা জখম করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সোহেল প্রাণনাশ ও পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মারার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এ ঘটনার পর, অভিযুক্ত সোহেল ওই দিনই ভুক্তভোগীর বাসায় অনধিকার প্রবেশ করে জোসনা বেগমকে গালিগালাজ ও শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়। তার পরনের কাপড় ছিঁড়ে কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। এমনকি তার গলায় থাকা ১০ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন (মূল্য আনুমানিক ১ লাখ টাকা) ছিনিয়ে নেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত গিয়াস উদ্দিনকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং জোসনা বেগম প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ১৬ জুলাই বুধবার কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় “সচেতন নাগরিক সমাজ এর ব্যানারে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা অবিলম্বে অভিযুক্ত সোহেলের গ্রেফতার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, “এমন বর্বর হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে আরও মানুষ ভুক্তভোগী হবে।”

অভিযোগের ভিত্তিতে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ