আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

বৃষ্টির প্রভাবে সবজি-মাছ’র দাম চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃষ্টির প্রভাবে সবজি-মাছ’র দাম চড়া

ছবি-৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মাছ থেকে মুরগি, সবজি থেকে গরুর মাংস, চাল থেকে ফলের বাজার-সবখানেই শুধু দাম বাড়ছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে অনেক পণ্যেরই দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার এই হার ক্রমাগত দেখা যাচ্ছে গত একমাস ধরে।
বিশেষ করে এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টির মধ্যে ‘সরবরাহ সংকটে’ বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সবজির দাম বেড়েছে। সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ কমে দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গভীর সাগরে মাছ ধরার জন্য জেলেরা যেতে পারছেন না। এর ফলে বাজারে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ কমে গেছে। ব্রয়লার মুরগি, গরু-ছাগলের মাংস, চালের বাজার এখনো চড়া আছে। তবে ডিম, আলু, পেঁয়াজসহ মুদিপণ্যের দর আগের মতো আছে। নগরীর বকশিরহাট ও সাবএরিয়া কাঁচাবাজার এবং বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এতদিন লইট্যা, পোয়া, চিংড়ি, রূপচাঁদা, বড় কোরাল, ছোট কোরাল, ফাইস্যা, ছুরিমাছ, করতি, সুরমাসহ সামুদ্রিক বিভিন্ন জাতের মাছের দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যে আসে। কিন্তু বিপত্তি শুরু হয়েছে জুলাইয়ের শেষভাগে এসে।বাজারে আবারও সামুদ্রিক মাছের দাম বেড়ে গেছে। বাজারে লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ফাইস্যা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, পোয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, শাপলা পাতা মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, রুপচান্দা ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) সাইজভেদে ৬৫০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
আর বরাবরের মতো ইলিশ সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরেই আছে। খুচরা বাজারে এক-দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ থেকে ২৪০০ টাকায়। ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা, এক কেজির কিছু কম ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকা এবং জাটকা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। দুই-আড়াই কেজি ওজনের বড় ইলিশ মাছ প্রতি কেজি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সব বাজারে বড় ইলিশ নেই।

এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০, পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০, কৈ ২০০ থেকে ২২০ এবং তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মিলছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়।
অন্রদিকে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। ৭০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি বিভিন্ন ধরনের সবজি। কাঁকরোল, বরবটি, ঝিঙা, পটল, ঢেঁড়শ ৭০ থেকে ৯০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা ও বেগুন কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, পেঁপে ও লাউ ৬০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, গাজর দেশি ৮০ টাকা, চায়নার ১৩০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১২০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, শালগম ৭০ টাকা, মূলা ৬০ দরে বিক্রি হয়েছে। কাঁচামরিচ ১২০-১৪০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।মুন্সীগঞ্জের আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে কচু শাক ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা ও লাল শাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাবএরিয়া বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়ত থেকে পাইকারি দরে কিনে এখানে খুচরায় বিক্রি করি। বৃষ্টির জন্য আড়তে সবজি আসছে না। আগের যেসব সবজি আছে সেগুলো আড়তদাররা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। বাড়তি দামে কিনে আমাদেরও বাড়তি দামে বেচতে হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ও লাল লেয়ার মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। অন্যান্য মাংসের মধ্যে গরুর মাংস ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসি ও পাঁঠা ছাগলের মাংস ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ডিমের দাম অপরিবর্তিত আছে। ফার্মের মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ১৩০ টাকা, দেশি মুরগি ২৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের দরও আগের মতো চড়া আছে। খুচরায় সরু চালের মধ্যে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর, রসিদ- এসব ব্র্যান্ডের মিনিটেক চাল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের মিনিকেট আতপ মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। স্বর্ণা ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের মাঝারি মানের চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।খুচরা বাজারে মুদি পণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে। কেজি প্রতি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া, প্রতি কেজি ছোট মসুর ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, কাজু বাদাম এক হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম দুই হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম এক হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ এক হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ এক হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ এক হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।আর প্রতি কেজি প্যাকেটজাত সাদা চিনি ১২৫ টাকা, খোলা সাদা চিনি ১২০ টাকা, খোলা লাল চিনি ১৪০ টাকা, প্যাকেট লাল চিনি ১৭০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় দরে বিক্রি হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অংশ নিয়েছে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী চট্টগ্রামে এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতায়

বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মুরাদপুরস্থ’ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)’র উদ্যোগে ১১তম বারের মতো “এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা-২০২৫” এনআইটি’র অডিটোরিয়ামে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ কারীগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্কভিউ হসপিটাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এটি. এম. রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন এনআইটি’র চেয়ারম্যান আহসান হাবিব।

প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২৬৪টি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প প্রর্দশিত হয়। এতে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন বলেন, আজকের এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি বিজয়ীর খোঁজ নয়, বরং এটি আমাদের সবার জন্য একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সকলেই নতুন কিছু শিখেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় উদ্ভাবন নিয়ে আসার অনুপ্রাণিত হয়েছে। প্রতিযোগীতায় শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে, আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেকটি প্রকল্পই আলাদা এবং একেকটি নতুন চিন্তার প্রতিফলন। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শুধু একটি ইভেন্ট নয়; এটি হলো কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির সবচাইতে কার্যকর মঞ্চ।

ড. এটি. এম. রেজাউল করিম বলেন,দক্ষতা একজন মানুষকে কর্মবাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং তাকে স্বনির্ভর করতে সাহায্য করবে। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কার্যকরী সমস্যা সমাধানের রুপরেখা তৈরী করে। অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন বলেন, এই প্রতিযোগিতায় উত্থাপিত সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধানগুলো কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করেছেন যে তাদের মেধা ও সৃজনশীলতাই দেশকে ‘আধুনিক বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের মূল চালিকাশক্তি।


ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বলেন, উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তির খেলনা নয়, উদ্ভাবন হল মানুষের জীবনকে সহজ ও অর্থপূর্ণ করার হাতিয়ার। আজকের এই ছোট ছোট ধারণাগুলোই আগামী দিনের বড় বড় শিল্প ও সামাজিক পরিবর্তনের বীজ বপন করছে।প্রতিযোগীতায় মোট ২৬৪ টি প্রজেক্ট অংশ নেয়। প্রজেক্ট সমুহকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বিভিন্ন মানদন্ডে বিচার বিশ্লেষণ করার জন্য মূল্যায়ন দলে ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. এ. কে. এম. মাঈনুল হক মিয়াজী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. এইচ.এম

. এ আর মারুফ,চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান মো. দিদারুল আলম মজুমদার। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর সিভিল ডিপার্টমেন্ট প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মো জাহাঙ্গীর আলম, কম্পিউটার বিভাগের চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী মেহেদী, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাস, মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী নুরুননবী।

বিচারক প্যানেল প্রজেক্ট সমুহ মূল্যায়ন সম্পন্ন করেন। মূল্যায়নে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে টপ টেন নির্ধারণ করে পুরস্কার হিসেবে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান অর্জন কারীর মধ্যে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া ইমার্জিং প্রজেক্ট হিসেবে চতুর্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীদেরও ৫ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সমাপনী পর্বে সকল অংশগ্রহণকারীকে সনদ বিতরণ করা হয়।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে লাগেজে মিলল ৯০ লাখ টাকার সিগারেট

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মালিকানাহীন ছয়টি লাগেজ থেকে ৮০০ কার্টন মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের এরাইভাল হলের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড কর্নারের পাশ থেকে এসব লাগেজ উদ্ধার করা হয়। জব্দ হওয়া সিগারেট প্রতি কার্টন ১১ হাজার ২৫০ টাকা মূল্য ধরে মোট ৯০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, লাগেজগুলোর সঙ্গে কোনো যাত্রীর নাম, ট্যাগ বা মালিকানার কাগজপত্র ছিল না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও কেউ লাগেজের দাবি না করায় সেগুলোকে কাস্টমস আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে লাগেজ খুলে ৮০০ কার্টন সিগারেট পাওয়া যায় এবং তা জব্দ করা হয়।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, লাগেজগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মালিকবিহীন অবস্থায় ছিল। কেউ দায়িত্ব না নেওয়ায় সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করে জব্দ করা হয়েছে। বিমানবন্দরে চোরাচালান ঠেকাতে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে এবং অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ