আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরে নষ্ট হচ্ছে নানা পণ্য সময়মতো খালাস হচ্ছেনা কন্টেইনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা গোঁজামিল ধরা পড়ার পর বহু আমদানিকারকরা গা ঢাকা

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত শত শত কন্টেনারের নানা পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। নানা গোঁজামিল ধরা পড়ার পর বহু আমদানিকারক গা ঢাকা দেয়া, একাধিক মামলার কারণে এসব পণ্য সময়মতো খালাস না করায় ইতোমধ্যে শত শত কন্টেনারের নানা পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে।অনেক কন্টেনারের পণ্য জনস্বাস্থ্যসহ বন্দরের জন্য হুমকি হয়ে রয়েছে। অন্যদিকে এসব পণ্যভর্তি কন্টেইনারগুলো বন্দরের ইয়ার্ড দখল করে রেখেছে। এসব পণ্য বোঝাই কন্টেনারের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি বলে সূত্রে নিশ্চিত করেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, ইয়ার্ডে কন্টেনার কম হলে ইকুইপমেন্ট মুভমেন্টসহ কাজে সুবিধা হয়।

এতে বন্দরের উৎপাদনশীলতা বেড়ে যায়। বাড়তি কন্টেনার বন্দরের কাজের গতি ঠেকিয়ে দেয়। বন্দরের বছরের পর বছর আটকে থাকা ১০ হাজারের বেশি কন্টেনার কাজে-কর্মে সংকট তৈরি করে আসছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম কাস্টমসকে দফায় দফায় চিঠি দিলেও কার্যত কিছু হয়নি। হাতে গোনা কয়েক কন্টেনার পণ্য সরিয়ে এবং মাটিতে পুঁতে ফেলা হলেও বেশিরভাগ কন্টেনার ইয়ার্ড দখল করে রয়েছে।

এদিকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আমদানিকারকদের জটিলতা, প্রশাসনিক জট ও চলমান মামলার কারণে এসব পণ্য খালাস করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে শিপিং লাইনগুলো কন্টেনার ফেরত পাচ্ছে না, আমদানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন এবং সরকারের রাজস্ব আদায়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এরই প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত মে মাসে বিশেষ আদেশ জারি করে। উক্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দশ বছরে আটকা পড়া কন্টেনারগুলো দ্রুত নিলাম বা ধ্বংস করতে হবে। প্রথম নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে বিক্রির সুযোগ রাখা হয়েছে। দুই দফা নিলামেও বিক্রি না হলে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে সর্বোচ্চ প্রস্তাবে বিক্রি করার নির্দেশনা রয়েছে। আর ব্যবহার অযোগ্য বা নিষিদ্ধ পণ্য বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে হস্তান্তরের সুযোগও রাখা হয়েছে।

এ নির্দেশনার পর চট্টগ্রাম কাস্টমস কিছু কন্টেনার নিলাম করেছে উল্লেখ করে কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা জানান, এভাবে দু-চারশ কন্টেনার নিলাম করে কিছুই হবে না। ইয়ার্ডে বছরের পর বছর আটকে থাকা কন্টেনারগুলোর ব্যাপারে সরকারকে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে। এখন দলীয় সরকার নেই। এ সুযোগে আটকে পড়া কন্টেনারগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত বহু পণ্য আমদানিকারকরা খালাস করেন না কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে। নানা গোঁজামিল ধরা পড়ার পর বহু আমদানিকারক গা ঢাকা দেন। অনেক সময় আমদানিকৃত পণ্যের বাজারদর কমে গেলে সটকে পড়েন অনেকে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা পণ্যের চালান ধরা পড়লেও খালাসে জটিলতা তৈরি হয়। আরো নানা আইনি জটিলতায় বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য বোঝাই অনেক কন্টেনার আটকা পড়ে রয়েছে।

কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা চাইলেই একটি কন্টেনার ধ্বংস করতে পারি না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদন নিতে হয়। সমন্বয় করতে হয় পরিবেশ, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে। এছাড়া কোনো চালানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা থাকলেও কাস্টমস বা এনবিআর সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। নানা প্রতিকূলতায় সৃষ্ট দীর্ঘসূত্রতার কারণে আমদানিকৃত নিলামযোগ্য বহু পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। পচনশীল নানা পণ্য পচে বন্দরের অভ্যন্তরে দুর্গন্ধ ছড়ানোর মতো ঘটনাও ঘটে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আজ বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন ।। 💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️


আজ (৫ ডিসেম্বর ২০২৫) একাত্তরের পদাবলী, তোমার জন্য অনিন্দিতা, বৃক্ষমঙ্গলের কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন। কবির জন্মভূমি দ্বীপজেলা ভোলায় আজ যথাযথ আয়োজনে দিনটি উদযাপন করবে – জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলা এবং জলসিঁড়ি সাহিত্য আসর ।


ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি গ্রামের হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে আজ বিকেল ৪ টায় “কবি নাসির আহমেদের জীবন ও সাহিত্য” শীর্ষক এক মূল্যবান আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ ও কবিতার গান অনুষ্ঠিত হবে ।

অনন্য এই আয়োজনটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- ভোলা জেলা কালচারাল অফিসার জনাব হাসানুর রশিদ মাসুদ । কবি নাসির আহমেদ এর জীবন ও সাহিত্য শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাধারণ সম্পাদক ও জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের নির্বাহী সভাপতি সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান । স্বাগত বক্তব্য রাখবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সহ-সভাপতি কবি মিলি বসাক ।


সভাপতিত্ব করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সভাপতি ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র সহ-সভাপতি শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক কবি মহিউদ্দিন মহিন । কবি নাসির আহমেদ কে নিয়ে কথা বলবেন ও কবিতা পাঠ করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি আল মনির, কবি গবেষক নীহার মোশারফ, জলসিড়ির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি, জলসিঁড়ির কোষাধ্যক্ষ কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ, নির্বাহী সদস্য কবি চৌধুরী সাব্বির আলম , কবি কামরুন্নাহার , কবি মাহে আলম আখন প্রমুখ ।

❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ