আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ‘তলে তলে আপস’ হওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন-ওবায়দুল কাদের।

নিউজ ডেস্ক:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ‘তলে তলে আপস’ হওয়ার বিষয়ে তোলপাড় করা বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জানিয়েছেন, আপস শব্দে তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কোন্নয়ন বুঝিয়েছেন। আর ‘তলে তলে’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ‘পাবলিক খায়’ বলে।

দুই দিন আগে দলীয় এক সমাবেশে দেওয়া তুমুল আলোচিত বক্তব্যের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। এই ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, আমিনবাজারের জনসভায় সেই বক্তব্যে তিনি ‘ভুল কিছু বলেননি’।

‘তলে তলে আপস হয়ে গেছে’- বলতে কী বুঝিয়েছে, জানতে চাইলে কাদের বলেন, “তলে তলে আপস মানে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন বা আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে, আমি সেটা বুঝাতে চেয়েছি।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আপস শব্দটি নেতিবাচক হিসেবে ব্যবহার হয়। ‘তলে তলে’ শব্দটি বাংলায় নেতিবাচক অন্থে গোপন কোনো কিছুর নির্দেশ করে। এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “‘তলে তলে’ যে বলি, সেটা পাবলিক খায়। সেজন্যই তো বলি- ‘খেলা হবে’।

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, রাশিয়া, চীনসহ বিশ্বের বড় বড় দেশ ও শক্তির নানামুখি তৎপরতা নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকার আমিনবাজারে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রয়োগ এবং আরও নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জনের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসা নীতি! তলে তলে আপস হয়ে গেছে, আপস হয়ে গেছে। দিল্লি আছে, আমেরিকারও দিল্লিকে দরকার। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। দিল্লি আছে, আমরাও আছি। শত্রুতা কারও কাছে না, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব।

“শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা, ভারসাম্য সবার সঙ্গে করে ফেলেছে, আর কোনও চিন্তা নাই। নির্বাচন যথাসময়ে হবে। অক্টোবর থেকে শুরু, খেলা হবে…। এই মাস থেকে শুরু, খেলা হবে…। আগামী মাসে সেমি ফাইনাল, জানুয়ারিতে ফাইনাল। বিএনপি এখন ফাউল করতেছে। ফাউল করলে হলুদ কার্ড, ফাউল করলে আবার লাল কার্ড। খেলা নিয়ে ফাউল করা চলবে না।

পরদিন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগ নেতাকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, “গতকাল ওদের (আওয়ামী লীগের) সাধারণ সম্পাদক সাহেব বললেন, দিল্লি আছে, আমরাও আছি, আমরা আছি, দিল্লি আছে। বাহ! প্রশ্নটা হচ্ছে কী বলতে চেয়েছেন?

‘‘দিল্লি কি আপনাদের অপকর্মগুলোতে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে তোমার এবারও করতে থাক? বলছে যে দরকার নাই নির্বাচনের? দিল্লি কি বলেছে যে, বাংলাদেশে জোর করে নির্বাচন ঘোষণা কর? তাহলে পরিষ্কার করে বলেন।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমাদের দেশে গুজব এবং অপপ্রচারের জন্য বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে আমাদের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক অবনতির দিকে, আমাদের সম্পর্ক খারাপ। এ ধরনের একটি গুজব এবং অপপ্রচার ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। সম্পর্ক খারাপ এ বিষয়টি আমাদের দেশে সার্বিক অবস্থা রাজনীতিতে এ মুহূর্তে কাম্য নয়।”

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দেশটির নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে যে বৈঠক করেছেন, সেটি নিয়েও কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “এই বৈঠকের বিষয়ে এক সপ্তাহ পর্যন্ত কেউ জানে না। তাহলে তলে তলে অনেক কিছু হচ্ছে আমি যে কথা বলেছি, আমি তো ভুল বলিনি।

“জো বাইডেনের (আমেরিকার প্রেসিডেন্ট) সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার কন্যা যে সেলফি তুলেছেন তখনও তো কিছু কথা হয়েছে। সেটা তো এখন বলাবলি হচ্ছে। এটা তো আর প্রকাশ্যে হয়নি।

“এটা কোনো কাগজেও আসেনি, মিডিয়ায়ও আসেনি। সুতরাং তলে তলে আপস মানে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন বা আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে, আমি সেটা বুঝাতে চেয়েছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ