আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

ঝিনাইদহে সাংবাদিক ও পরিবহন ব্যবসায়ীর মৃত্যু নিয়ে ধ্রমজাল।

ইনছান আলী ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ও পরিবহন ব্যবসায়ী আবু সেলিম মিয়ার (৫২) মৃত্যু নিয়ে ধ্রমজাল সৃষ্টি হয়েছে, এলাকায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নে তাদের মৃত্যুর ঘটনা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন নাকি কেউ তাকে হত্যা করেছে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সদস্য আবু সেলিম মিয়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেরিনা (২৮) খাতুন ও রিপা কর্মকার (২৩) নামে দুই যুবতীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
মেরিনা খাতুন মাগুরার শালিখা উপজেলার সামিয়ারপাড়া গ্রামের মন্টু মন্ডলের মেয়ে। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। অন্যদিকে আরেক স্বামী পরিত্যক্তা রিপা কর্মকার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাতলামারী গ্রামের রবি কর্মকারের মেয়ে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবারে এই দুই যুবতী নিজেদের ভিণœ ভিন্ন ঠিকানার পরিচয় দেন। এদিকে এ ঘটনায় আরো এক নারীকে পুলিশ খুজছে। রহস্যজনক ওই নারী সেলিমের দুর্ঘটার খবরটি মেরনা ও রিপাকে প্রথম ফোন করে জানায়।

প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবু সেলিম মিয়া ঝিনাইদহ শহরের হামদহ আলফালাহ হাসপাতালের সামনে এক নারীর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় মটরসাইকেল আরোহী অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে মাথায় আঘাত করে দ্রæত গতিতে চলে যায়। এরপর থেকে আবু সেলিম মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে প্রচার করা হয়। তার স্বজনরাও বিষয়টি নিয়ে ছিল অন্ধকারে। সেলিমের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌছালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেরানা ও রিপার গতিবিধি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়। প্রথমে তারা নিজেদের ভুল ঠিকানায় পরিচয় দেন। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে তারা সেলিমের হামদহ এলাকার ফ্লাটে পাশাপাশি বসবাস করতেন এবং অজ্ঞাত এক নারীর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে অজ্ঞান ও মুমুর্ষ অবস্থায় সেলিমকে হাসপাতালে নিয়ে যান বলে জানান।

অজ্ঞাত ওই নারীর সঙ্গে সেলিমের কেন এবং কি নিয়ে বাদানুবাদ হলো তা নিয়ে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন থাকার কথা কিন্তু সেলিমের শরীরে মাথার পেছনে গভীর আঘাত ব্যতিত আর কোন ক্ষত চিহ্ন নেই বলে পুলিশ জানায়। নিহত’র জামাই ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, বগুড়া থেকে ফিরে এসে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আলফালাহ হাসপাতাল এলাকায় যান তার শ^শুর। কাজ শেষে করে রাস্তা উপরে তাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে কে বা কারা। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক রাত ২ টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত’র স্ত্রী মমতা বেগম জানান, তার স্বামীকে হত্যা করা হতে পারে। তিনি সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘাতকদের চিহ্নি করার দাবী জানান। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান জানান, প্রাথমিক ভাবে এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও আশপাশের সিসি ক্যামেরা যাচাই করে হত্যার রহস্য উন্মোচন করা হবে।

তিনি জানান এ ঘটনায় মেরিনা ও রিপা নামে দুই নারীকে আটক করা হয়েছে। আরো এক নারীকে আমরা খুজছি। আশা করা যায় দ্রুত মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার হবে। এ ঘটনায় নিহত’র স্ত্রী মমতা খাতুন বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের একাধিক সুত্র মনে করছে ব্যবসায়ীক শত্রুতা অথবা নারীঘটিত কারণে সেলিম মিয়াকে হত্যা করা হতে পারে।

এদিকে বুধবার সকালে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন তার গ্রামের বাড়িতে যান শোক সন্তপ্ত পরিবারকে শান্তনা দিকে। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান টিপু সাংবাদিক আবু সেলিম মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা এক বিবৃতিতে তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। প্রবাসি ছেলে সবুজ মিয়া দেশে ফিরলে বুধবার রাতে তাকে হলিধানী গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

টিসিবি পণ্য পাচারের সময় আটক ১ জন

রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল কলোনি এলাকায় একটি বড় ধরনের টিসিবি পণ্য পাচারের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের হাতে আটক হয় ডিলারের এক সহযোগী, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে টিসিবি পণ্যের কিছু অংশ পাচারের সাথে জড়িত থাকার। স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিলার নিজেই এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত, ফলে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে।

পাচারকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে ২ লিটারের ৫ বোতল তেল এবং ৫ কেজি চিনি উদ্ধার হয়। স্থানীয়রা এই পণ্যগুলো পাচার করার সময় হস্তক্ষেপ করেন এবং পরে টিসিবির প্রতিনিধি শফিউল ইসলামের উপস্থিতিতে সেগুলো পুনরায় ট্রাকে তুলে খোলা বাজারে বিতরণ করা হয়। এ ঘটনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে চন্দ্রিমা থানা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম জনি পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এদিকে, স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, টিসিবির পণ্য বিতরণে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং ডিলার নিজ এলাকার লোকজন কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে পণ্য বিতরণ করছেন, ফলে সাধারণ মানুষ এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা জানান, রমজান মাসে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিসিবি পণ্য না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে।

ঘটনাস্থলে থাকা টিসিবির প্রতিনিধি শফিউল ইসলাম জানান, হাতেনাতে তেল ও চিনি সহ এক ব্যক্তিকে আটক করে স্থানীয়রা। এ বিষয়ে উধ্বর্তন কতৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নিবেন। শফিউল ইসলাম বলেন, শিরোইল কলোনি সার গুদাম চত্বরে ৪০০ জনের জন্য টিসিবি পণ্য বরাদ্দ ছিল। এর মধ্যে রয়েছে দুই কেজি ডাল, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ছোলা, দুই লিটার তেল ও ৫০০ গ্রাম খেজুর। প্যাকেজ মুল্য ৫৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রিয়াদ এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মো. তোজাম্মেল হোসেন সরকার (তাজেল) বলেন, তিনি অসুস্থ থাকায় সরাসরি পয়েন্টে যাননি এবং পয়েন্ট পরিচালনার দায়িত্ব তিনি লিপি নামক একজন নারী কর্মচারীকে দিয়েছেন। তবে, তিনি এ ধরনের ঘটনার জন্য দায়ী নন বলে দাবি করেছেন।

এ ঘটনায় রাজশাহী ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মো. আতিকুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি ভিডিও পেয়েছেন এবং স্থানীয়দের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগও পেয়েছেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে, ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিএমপি কোতোয়ালি থানার অভিযানে একজন গ্রেফতার

সিএমপি কোতোয়ালি থানার অভিযানে একজন গ্রেফতার হয়েছে।

সিএমপি’র দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মহোদয় এর সার্বিক দিক-নির্দেশনায়, সহকারী পুলিশ কমিশনার(কোতোয়ালি জোন) এর তত্ত্বাবধানে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ আব্দুল করিম এর নেতৃত্বে ১০ মার্চ এস আই (নিঃ) নওশের কোরেশি , ইনচার্জ আসকার দীঘি পুলিশ ফাঁড়ি, এএসআই( নি:) ,ফিরোজ আলী এএসআই (নিঃ) জসীম উদ্দিন সহ সিআর ৫৭৫/১৭ এর সাজা পরোয়ানাভুক্ত আসামি মো: এনামুল করিম শহীদুল্লাহ (৪৫) পিতা:মৃত সালাম চৌধুরী, সাং- আসকার দীঘির দক্ষিণপাড়, থানা:কোতোয়ালি চট্টগ্রাম কে কোতোয়ালি থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করেন। আসামীকে গ্রেফতার পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দকরন প্রক্রিয়াধীন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ