আজঃ শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ঝিনাইদহে সাংবাদিক ও পরিবহন ব্যবসায়ীর মৃত্যু নিয়ে ধ্রমজাল।

ইনছান আলী ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ও পরিবহন ব্যবসায়ী আবু সেলিম মিয়ার (৫২) মৃত্যু নিয়ে ধ্রমজাল সৃষ্টি হয়েছে, এলাকায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নে তাদের মৃত্যুর ঘটনা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন নাকি কেউ তাকে হত্যা করেছে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সদস্য আবু সেলিম মিয়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেরিনা (২৮) খাতুন ও রিপা কর্মকার (২৩) নামে দুই যুবতীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
মেরিনা খাতুন মাগুরার শালিখা উপজেলার সামিয়ারপাড়া গ্রামের মন্টু মন্ডলের মেয়ে। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। অন্যদিকে আরেক স্বামী পরিত্যক্তা রিপা কর্মকার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাতলামারী গ্রামের রবি কর্মকারের মেয়ে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবারে এই দুই যুবতী নিজেদের ভিণœ ভিন্ন ঠিকানার পরিচয় দেন। এদিকে এ ঘটনায় আরো এক নারীকে পুলিশ খুজছে। রহস্যজনক ওই নারী সেলিমের দুর্ঘটার খবরটি মেরনা ও রিপাকে প্রথম ফোন করে জানায়।

প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবু সেলিম মিয়া ঝিনাইদহ শহরের হামদহ আলফালাহ হাসপাতালের সামনে এক নারীর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় মটরসাইকেল আরোহী অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে মাথায় আঘাত করে দ্রæত গতিতে চলে যায়। এরপর থেকে আবু সেলিম মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে প্রচার করা হয়। তার স্বজনরাও বিষয়টি নিয়ে ছিল অন্ধকারে। সেলিমের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌছালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেরানা ও রিপার গতিবিধি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়। প্রথমে তারা নিজেদের ভুল ঠিকানায় পরিচয় দেন। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে তারা সেলিমের হামদহ এলাকার ফ্লাটে পাশাপাশি বসবাস করতেন এবং অজ্ঞাত এক নারীর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে অজ্ঞান ও মুমুর্ষ অবস্থায় সেলিমকে হাসপাতালে নিয়ে যান বলে জানান।

অজ্ঞাত ওই নারীর সঙ্গে সেলিমের কেন এবং কি নিয়ে বাদানুবাদ হলো তা নিয়ে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন থাকার কথা কিন্তু সেলিমের শরীরে মাথার পেছনে গভীর আঘাত ব্যতিত আর কোন ক্ষত চিহ্ন নেই বলে পুলিশ জানায়। নিহত’র জামাই ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, বগুড়া থেকে ফিরে এসে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আলফালাহ হাসপাতাল এলাকায় যান তার শ^শুর। কাজ শেষে করে রাস্তা উপরে তাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে কে বা কারা। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক রাত ২ টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত’র স্ত্রী মমতা বেগম জানান, তার স্বামীকে হত্যা করা হতে পারে। তিনি সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘাতকদের চিহ্নি করার দাবী জানান। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান জানান, প্রাথমিক ভাবে এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও আশপাশের সিসি ক্যামেরা যাচাই করে হত্যার রহস্য উন্মোচন করা হবে।

তিনি জানান এ ঘটনায় মেরিনা ও রিপা নামে দুই নারীকে আটক করা হয়েছে। আরো এক নারীকে আমরা খুজছি। আশা করা যায় দ্রুত মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার হবে। এ ঘটনায় নিহত’র স্ত্রী মমতা খাতুন বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের একাধিক সুত্র মনে করছে ব্যবসায়ীক শত্রুতা অথবা নারীঘটিত কারণে সেলিম মিয়াকে হত্যা করা হতে পারে।

এদিকে বুধবার সকালে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন তার গ্রামের বাড়িতে যান শোক সন্তপ্ত পরিবারকে শান্তনা দিকে। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান টিপু সাংবাদিক আবু সেলিম মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা এক বিবৃতিতে তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। প্রবাসি ছেলে সবুজ মিয়া দেশে ফিরলে বুধবার রাতে তাকে হলিধানী গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম মহানগরে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার-৪০

চট্টগ্রাম মহানগরে ২৪ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার অভিযানে নগরীর ১৬ থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে বলে নগর পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এদের অধিকাংশই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলাকারী আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা আছে।

গ্রেফতার ৪০ জনের মধ্যে নগরীর কোতোয়ালী থানায় সাতজন, পাঁচলাইশ থানায় দুইজন, চকবাজার থানায় একজন, বায়েজিদ বোস্তামি থানায় চারজন, আকবরশাহ থানায় চারজন, সদরঘাট থানায় একজন, হালিশহর থানায় তিনজন, খুলশী থানায় দুইজন, ইপিজেড থানায় দুইজন, ডবলমুরিং থানায় এক শিশুসহ চারজন, পতেঙ্গা থানায় একজন আছেন।এ ছাড়া নগরীর বন্দর থানায় একজন, পাহাড়তলী থানায় দুইজন, চান্দগাঁও থানায় একজন, বাকলিয়া থানায় তিনজনজন এবং কর্ণফুলী থানায় একজন আছেন।

নেত্রকনায় আলোচিত রফিকুল হত্যার মূলহোতা রূপগঞ্জে গ্রেপ্তার

আলোচিত রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলার মূল হোতা হৃদয় মিয়া (২৭)কে ৫ মাস পর গ্রেপ্তার করেছে পূর্বধলা থানা পুলিশ। নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত হৃদয় মিয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের আবদুল কদ্দুস এর ছেলে।

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধে গত ৬ সেপ্টেম্বরে শিবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফের ছেলে রফিকুল ইসলামের মোটরসাইকেল গতিরোধ করে দুলাল মিয়ার হুকুমে প্রতিপক্ষ হৃদয় মিয়া গং রফিকুলকে বেধরকমারপিট করে রক্তাক্ত জখম করতঃ হাত-পা ভেঙ্গে দেয়। জখমী রবিকুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে ওইদিন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্তায় মৃত্যুবরণ করেন।

ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই আবদুল সাত্তার বাদী হয়ে দুলাল মিয়াকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ঘটনার পর আসামি হৃদয় মিয়া আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় অবশেষে ৫ মাস পর গত শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পূর্বধলা থানার এসআই (পুলিশ উপ-পরিদর্শক) রাশেদ হাসান এর নেতৃত্বে প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ এলাকা থেকে হৃদয় মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে রফিকুল ইসলাম হত্যার প্রধান আসামী দুলাল মিয়া ও তার পুত্র মোঃ রাজিব ওরফে বাবুকে গত (১৯ অক্টোবর) গ্রেপ্তার করা হয়।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রিয়াদ মাহমুদ গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক জবাবদিহিকে জানান, আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ