আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

স্বতন্ত্রে হেভিওয়েট রয়েছে

চাঁদপুরে কাল ৩০ জনের ভোটের লড়াই শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে।। নির্বাচনের মাত্র একদিন বাকি

এস আর শাহ আলম, চাঁদপুর :

৩০ জনের নির্বাচনী লভাই চাঁদপুরে

চাঁদপুরে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারের লভাই হবে আাওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা, পথসভা ও উঠোন বৈঠকের মধ্যে দিয়ে সকল প্রচার প্রচারণা শেষ করলো চাঁদপুর জেলার ৩০ জন পদ প্রার্থী , আর এই ৩০ জনই ভোট যুদ্ধের লড়াই করবে, কিন্তু এদের মধ্যে ৫ জনকে বেছে নিবে জেলার ভোটাররা, ভোটারদের স্বপ্ন পূরণে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয় করে জনগণের দায়িত্ব দিবেন। এমনটাই জেলা বাসির ইচ্ছে ও প্রত্যাশা, তবে কাকে বিজয় করবে বা কোন প্রতিকে ভোট দিবে, তাহা এখনো ভোটারদের মুখে ফুটে আসেনি, তার পরও মাঠ জরিপে চাঁদপুর ৫ টি আসনেই নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবে দলীয় নেতাকর্মী।

এদিকে গত কয়েক দিন নির্বাচন উৎসবমুখর এবং সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে চাঁদপুর জেলা রিটার্নিং অফিস পুরোদমে কাজ করেছেন। এবং ভোটাররা নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাওয়ার সকল উৎসাহিত করেছিলেন। ফলে ভোটাররাও নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি ভোটের মাঠে থাকা এমপি প্রার্থী এবং তাদের পক্ষের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণার সাথে ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে সরকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত এবং ইসলামী আন্দোলনসহ বেশকিছু রাজনীতিক দল নির্বাচনে না থাকায় ভোটের এ উৎসবে কিছুটা ভাটা পড়েছে। নির্বাচন হবে এটি সবাই জানলেও ভোট দেয়ার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের একাংশের মধ্যে নেই তেমন কোনো উৎসাহ ও আগ্রহ। সাধারণত নির্বাচনের সময় ভোটারদের কদর বারে এমনটাই বলেন অনেকে, আর ভোটের পরে প্রার্থীদের দরজায় দারিয়ে কড়া নারতে নারতে অস্হির হন জনগন, তাহা বলতেও কাল কৃপন করেননি।

চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন । গত কয়েক দিনে প্রার্থীদের প্রচারণায় ছড়িয়ে পড়েছে ভোটের উত্তাপ। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থীদের নির্বাচনী গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা সবচাইতে বেশি পরিলক্ষিত ছিলো,

স্বতন্ত্রসহ অন্য প্রার্থীদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার মতো শক্তি তেমনটা দেখেন নি সাধারণ ভোটারা। তারা এই নির্বাচনে চাঁদপুরের পাঁচটি আসনেই নৌকার বিপুল বিজয়ের সম্ভাবনা দেখছেন। এবারের সংসদ নির্বাচনে ৫টি আসনে ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়েছে ৩০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে নৌকার প্রতিপক্ষ হিসেবে বিভিন্ন দলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নৌকা বঞ্চিত একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা।

ভোটের মাঠে তারা নৌকা, ঈগল, ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়ে আসছেন । পাশাপাশি আছেন লাঙ্গল, মিনার, গোলাপ ফুল, মোমবাতি, মশাল, ফুলের মালাসহ অন্য প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকায় জেলার ৫ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২১ লাখ ৫৬ হাজার ৬০৯ জন। এদের প্রায় অর্ধেকই নারী ভোটার। এদের সংখ্যা ১০ লাখ ৪৪ হাজার ৩২ জন । পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ১২ হাজার ৫৭৭ জন।

চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে ভোটার সংখ্যা ৩লাখ ২৫ হাজার ৭শ’ ৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩শ’ ৩১ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪শ’ ২৮জন।

চাঁদপুর-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। এ আসন থেকে তিনি তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে এ আসনে এবার নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ। এ আসনে আরো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মনোনীত মোঃ সেলিম প্রধান চেয়ার ও জাসদ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম মশাল প্রতীক নিয়ে। তবে আওয়ামী লীগের ড. সেলিম মাহমুদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই এখানে। তাঁর বিজয়ী হওয়া অনেকটাই নিশ্চিত বলছেন স্থানীয়রা।

চাঁদপুর-২ (মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬৭ হাজার ২শ’ ২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬ শ’ ৩৪ জন এবং নারী ভোটার হচ্ছে ২ লাখ ২৮ হাজার ৫ শ’ ৯৪ জন। অতীতে এই আসন থেকে যে দলের প্রতিনিধি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, সেই দলই সরকার গঠন করেছে। রাজধানীর সন্নিকটে হওয়ায় এই আসনের গুরুত্ব বেশি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েট নেতা ও সরকারের আমলাদের জন্মস্থান এখানে। প্রায় সব সরকারের আমলে এই আসন মন্ত্রী পেয়েছে। তাই উন্নয়নও হয়েছে ব্যাপক। আগামী নির্বাচনেও তেমনটা চান তারা। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এ আসনেরই সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি অ্যাডঃ রুহুল আমিন রুহুল। তাঁকে এবার দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়নি।এখানে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মায়া চৌধুরীর জয়ী হবার সম্ভাবনা বেশি। অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির এমরান হোসেন মিয়া (লাঙ্গল), সুপ্রিম পার্টির মোহাম্মদ মনির হোসেন বেপারী (একতারা), স্বতন্ত্র এম. ইসফাক আহসান (ঈগল) ও জাসদের মোহাম্মদ হাছান আলী শিকদার (মশাল)।

চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৮ হাজার ৯ শ’ ৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৩ হাজার ৮ শ’ ৯৩ জন । নারী ভোটার ২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯ জন। চাঁদপুর-৩ আসনটি বিভিন্ন কারণে বেশ আলোচিত। আসনটিতে বর্তমান এমপি ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের কন্যা, বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নারী শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকও। জেলা সদর থেকে তিনি টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। চতুর্থবারের মতো এমপি হবার লাইম লাইটে আছেন তিনি। একটি পৌরসভা, ২ টি উপজেলা ও ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আসনটি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ২৬২ তম আসন। চাঁদপুর সদর উপজেলা ও হাইমচর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনী এলাকা।

চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের ডাঃ দীপু মনির নৌকা মার্কার বিপরীতে ভোটে লড়ছেন একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া (ঈগল) ও মোঃ রেদওয়ান খান বোরহান (ট্রাক)। ভোটাররা বলছেন, মূলত এ তিন জনের মধ্যেই হবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হবার লড়াই।

অন্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট মোঃ মহসীন খান (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের আবু জাফর মোঃ মাঈনুদ্দিন (মোমবাতি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মোঃ মিজানুর রহমান (ফুলের মালা) ও জাকের পার্টির মোঃ কাওছার মোল্লা (গোলাপ ফুল)।

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ ) আসনটি ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৯ হাজার ১২৯ জন । পুরুষ ভোটার হচ্ছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৬৮ জন। নারী ভোটার হচ্ছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩ শ’ ৬১ জন। চাঁদপুর জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ)। আসনটি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বলে জেলায় পরিচিত। ভোটার সংখ্যাও বেশি। দেশ স্বাধীনের পর থেকে এ আসনটি বেশিরভাগ সময় বিএনপির দখলে থাকলেও ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার মধ্য দিয়ে আসনটি হাতছাড়া হয়ে আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। মূলত এ আসনটিতে রয়েছে বিএনপির বড় ভোট ব্যাংক। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূইয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৎকালীন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন হারুন-অর রশিদকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমানের সঙ্গে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া (ঈগল), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ড. মোহাম্মদ শাহজাহান (নোঙ্গর), জাতীয় পার্টির সাজ্জাদ রশিদ (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র জালাল আহমেদ (ট্রাক), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুল গনি (আম), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী (ফুলের মালা) ও তৃণমূল বিএনপির মোঃ আব্দুল কাদের (সোনালী আঁশ)।

চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫ শ’ ৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছে ২ লাখ ৪৭ হাজার ৯ শ’ ৫১ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ৩৭ হাজার ৬ শ’ ১০ জন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে টানা তিনবারের এমপি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। এবারো দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর সাহসিকতার জন্যে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগেরই শীর্ষ নেতা গাজী মোঃ মাঈনুদ্দিন (ঈগল), মোঃ শফিকুল আলম (ট্রাক), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ-এর সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী (চেয়ার), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী (ফুলের মালা), জাসদের মনির হোসেন মজুমদার (মশাল) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের আক্তার হোসেন (ছড়ি)। এই আসনে নৌকার মেজর রফিকের সাথে স্বতন্ত্রসহ অন্য প্রার্থীরা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে চান।

উল্লেখ্য, চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে ৮ উপজেলায় ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৭ শতাধিক। চাঁদপুর-১ (কচুয়া)-১০৯ টি, চাঁদপুর-২ (মতলব দক্ষিণ ও উত্তরে)-১৫৫ টি, চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে)-১৬৫টি, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জে)-১১৮টি ও চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) ১৫৩টি । এই জেলায় ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব আসনেই নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যরা। জেলার ৭টি পৌরসভা ও ৮৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। পরিশেষে রাঁত শেষে আগামী কালকের দিনের আলোতেই, বিজয়ী ভাগ্যবানরা নির্বাচিত হবেন, তাই সেটা দেখার অপেক্ষায় কে হবেন চাঁদপুর জেলার ৫ জন কর্ণধার,

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পদক্ষেপ বাংলাদেশ এর বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত ।

পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর আয়োজন, কর্মসূচী ব্যতিক্রম ও বৈচিত্র্যময়। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার পরিবাগস্থ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের উন্মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সংগঠন ও শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাংস্কৃতিক পর্ব—দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে : শিল্পবৃত্ত, পদক্ষেপ বাংলাদেশ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে : কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, শিল্পবৃত্ত, ঢাকা স্বরকল্পন, মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র। একক আবৃত্তি করেন : মীর বরকত, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন : গোবিন্দলাল সরকার, মো: তাজুল ইসলাম, খাইরুল আলম।

উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা জেবা, উদয়ন স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক সবিতা সাহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর সভাপতি বাদল চৌধুরী। স্বাগব বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল্লাহ সাঈদ। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মতিয়ারা মুক্তা।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়- বহু ত্যাগ, সংগ্রাম আর প্রত্যাশার ফসল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ শুধু পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীত বদল নয়, খোল-নলচে সব পাল্টে নতুন এক আদর্শকে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নের নবযাত্রা। এই স্বপ্নের প্রধান এবং একমাত্র উপজীব্য মানুষ। মানুষের কল্যাণ, মানুষের মুক্তি, মানুষের মর্যাদা এবং মানুষের স্বাধীন ভূমিই শেষ কথা। কত মাতা, কত ভগ্নি, কত জানা-অজানা নারী তাঁর সম্ভ্রম হারিয়েছে শুধু এই মানুষকে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। মানুষ কল্পনাবিলাসী কিন্তু নিজেতো সে কাল্পনিক নয়Ñএ ভূমিতেই তার সৃষ্টি, বেড়ে ওঠা, ভালো-মন্দের স্বাদ নেয়া, অতঃপর ভূমিতেই মিলিয়ে যাওয়া। এ ভূমির প্রতি তার প্রচ- ভালোবাসা।

মাতৃক্রোড়ে যেমনিভাবে শিশু বেড়ে ওঠে; একইভাবে কাদা-মাটি গায়ে মেখে আলো-বাতাসে অবগাহন করে এই ভূমিকেই মাতৃক্রোড় ভেবে একদিন চিরবিদায় নেয় প্রতিটি মানবশিশু। জন্ম আর মৃত্যুতে যে ভূমিকে কখনো আলাদা করা যায় নাÑতারই অমার্যাদা করবে ভিনদেশী তস্কর! তা কি করে মেনে নেয় ধুলো-বালি গায়ে মেখে বেড়ে ওঠা এ জনপদের মানুষেরা। এ ভূমিরই সাহসী-ত্যাগী- পোড়খাওয়া এক নামÑশেখ মুজিব। মাটি আর মানুষের সাথে ছিলো যাঁর আজন্ম সখ্য, ভিনদেশী হায়েনার হিংস্র থাবায় বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর হৃদপি-; তবুও ভূমি আর মানুষের স্বাধীনতায় অবিচল থেকেছেন তিনি।

তাঁরই অঙ্গুলী হেলনে সাড়ে সাত কোটি মানুষ পরিণত হয়েছে এক একজন নেতাজী সুভাষ বসু, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, তিতুমীর, বাঘাযতিন, লক্ষ্মীবাই, ভগৎসিং, রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার, সালাউদ্দিন, বরকত, আসাদ, মনুমিয়া’য়। এ গাঙ্গেয় বদ্বীপের তেরোশত নদীর জোয়ার আর পাখিদের কলতানে উচ্চারিত হয়েছে ভিনদেশী হায়েনার বিনাশ- ধ্বনি। লাঙলের ফলা থেকে তৈরি উর্বর মাটির প্রতিটি চাকা পরিণত হয়েছে শত্রুবিনাশী আনবিক বোমায়। বাঁশঝাড় উজাড় করে তৈরি হয়েছে চকচকে বেয়নেট।

নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার অগ্নিপুরুষ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছে সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রতিটি রক্ত কণিকায়Ñবিজয় অর্জিত হয়েছে মানুষের সংগ্রাম আর আত্মদানের। বিজয় মাসের সূচনালগ্নে আমরা নতুন করে উদ্দীপ্ত হতে চাইÑমাটি আর মানুষের কল্যাণ কামনায়। আমরা বিনাশ চাই সেই নরপশুদের যারা মাটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ভিনদেশী হায়েনাদের সঙ্গী হয়েছিলো মনুষত্বের বিনাশ সাধনে। সেই সাথে চাই আজকের এই দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’-এর সরকারি স্বীকৃতি। মাটি আর মানুষের জয় হোক, জয় হোক শুভ চিন্তা আর আদর্শের।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা পরিবারের দানে গড়ে উঠছে এতিম শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন কেন্দ্র 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পরিবারের দান করা জমিতে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ও নারীর স্কিল ডেভলপমেন্টের জন্য গড়ে উঠছে মির্জা রুহুল আমিন এন্ড ফাতেমা মেমোরিয়াল কমপ্লেক্স। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের আদর্শ কলোনিতে কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ চলছে। 

 আর কমপ্লেক্সটি বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে শত শত এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার পাওয়ার ঠিকানা হিসেবে পরিণত হবে। যেখানে এতিম শিশুরা খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারগুলো বিনামূল্যে নিশ্চিৎ হবে। নারীদের স্কিল ডেভলপমেন্টে কাজ করবে। 

গত এক বছর যাবৎ এ কমপ্লেক্সটির কাজ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চার ভাগের তিন ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক এতিম শিশুকে নিয়ে কমপ্লেক্সটিতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন  কমপ্লেক্সে দায়িত্বে থাকা  বাসমাহ অরফানস হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ আহম্মেদ আমিন।

তিনি আরও জানান, এই কমপ্লেক্সে বাসমাহ অরফানস হোম, বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার এবং বাসমাহ ওমেন্স এন্ড স্কিল ডেভলপমেন্ট সেন্টার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ। এক কক্ষে চলছিলো একটি দোয়ার আয়োজন। জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও দেশের মঙ্গল কামনায় মির্জা পরিবারের উদ্যোগে এতিম শিশুদের নিয়ে এ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। 

ঠাকুরগাঁওয়ে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার  ও নারীদের ডেভলপমেন্টের জন্য এমন একটি উদ্যোগকে বাস্তবায়নের পেছনের ব্যপারে জানতে চাইলে অরফান হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ বলেন, আমাদের বাসমাহ ঠাকুরগাঁও সহ সারা দেশে পাঁচটি শাখা আছে। নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁর একটি শাখাতে মির্জা ফখরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যগণ পরিদর্শন করেন।  আমাদের কার্যক্রেম তাদের ভালো লাগে এবং এতিম শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ ঠাকুরগাঁওয়ে বাস্তবায়নের জন্য তারা উৎসাহ প্রকাশ করেন এবং ৭৫ শতক জমি এতিমদের জন্য দান করেন৷ এই কর্মকর্তা বলেন বাসমাহ’র  সমস্ত পক্রিয়া মেনেই এটি গড়ে উঠছে।

বাসমাহর সিইও মীর সাখাওয়াত হোসাইন এর বরাতে প্রতিষ্ঠানটির এডুকেশন ইনচার্জ আরও বলেন  বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্ত্ববধানে সারা দেশ জুড়ে সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার,বাসমাহ ওরফান্স হোম,বাসমাহ উইমমেন্স স্কিল এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।এ ছাড়াও শীতকালীন শীত বস্ত্র বিতরণ,কুরবানি প্রোগ্রাম,ইফতার প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ