
রাত পোহালেই ভোট। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুরে এবারের লড়াই হবে আাওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। সকল প্রচার প্রচারণা শেষ করেছে জেলার ২৬ জন পদ প্রার্থী , আর এই ২৬ জনই ভোট যুদ্ধের লড়াই করবে, কিন্তু এদের মধ্যে ৬ জনকে বেছে নিবে জেলার ভোটাররা, ভোটারদের স্বপ্ন পূরণে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয় করে জনগণের দায়িত্ব দিবেন। এমনটাই জেলা বাসির ইচ্ছে ও প্রত্যাশা, তবে কাকে বিজয় করবে বা কোন প্রতিকে ভোট দিবে, তাহা কাল ভোটারদের ভোটের রায়ে জানা যাবে।গত কয়েক দিনে প্রার্থীদের প্রচারণায় ছড়িয়ে পড়েছে ভোটের উত্তাপ।
নৌকার প্রার্থীর মধ্যে প্রতিপক্ষ হিসেবে দলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা।
ভোটের মাঠে তারা নৌকা, ঈগল, ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়ে আসছেন । পাশাপাশি আছেন লাঙ্গল, মিনার, গোলাপ ফুল, মোমবাতি, মশাল, ফুলের মালাসহ অন্য প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
দিনাজপুর জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকায় জেলার ৬ টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ লাখ ০৯ হাজার ৫৪৯ জন। এদের প্রায় অর্ধেকই নারী ভোটার। এদের সংখ্যা ১২ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৬ জন । পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ জন। এদের মধ্যে ২০ জন হিজড়া ভোটার রয়েছে।
এদিকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগের দিনাজপুরের ৬ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৪টি আসনের প্রার্থীরা। এ আসন গুলো হচ্ছে জেলার ১, ৩, ৪ এবং ৬ আসন। এ নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও কেন্দ্রীয় ভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উন্মুক্ত করে দেয়াই নীরব রয়েছে আওয়ামী লীগের এসব প্রার্থীরা। মনোনয়ন বন্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
দিনাজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপালের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন একই দলের বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া জাকা।
দিনাজপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ইকবালুর রহিমের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ কুমার।
দিনাজপুর-৪ আসনে সাবেক মন্ত্রী ও ৩ বারের সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলীর বিপক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম তারিক এবং দিনাজপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শিবলী সাদিকের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজিজুল হক চৌধুরী।
এ বিষয়ে দিনাজপুর-১ আসনের প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, এতে করে জন নেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীরা বিব্রত হচ্ছে।
দিনাজপুর-৩ আসনের প্রার্থী ইকবালুর রহিম বলেন, যারা বংগবন্ধুর আদর্শ ধারন করে তারাই শেখ হাসিনার কর্মী এবং ভোটার।
দিনাজপুর-৪ আসনের প্রার্থী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, আমি কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করি না। যিনি আমার বিপক্ষে দাড়িয়েছেন তিনি আমাদের দলেরই লোক।
দিনাজপুর-৬ আসনের প্রার্থী শিবলী সাদিক বলেন, মূলত যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিল তাদের মধ্যে মনোনয়ন বন্চিত ঐ গ্রুপটা নৌকার বিরোধিতা করছে। এটা অত্যন্ত বেদনার বিষয় মনে করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে জেলা কমিটির নীরব ভুমিকা আছে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাফুজ্জামান মিতা বলেন, নিজ দলের লোকেরাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থী উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদেরও হাত পা বাধা আছে। আমাদের করার কিছু নেই।
সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আসনগুলোতে যোগ্যরাই জয়লাভ করবে এমনটাই আশা স্হানীয় ভোটারদের।
সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখানকার সব আসনেই নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যরা। পরিশেষে রাত শেষে আগামী কালকের দিনের আলোতেই, বিজয়ী ভাগ্যবানরা নির্বাচিত হবেন, তাই সেটা দেখার অপেক্ষায় কে হবেন দিনাজপুর জেলার ৬ জন কান্ডারী ।