আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

রাত পোহালে ভোট দিনাজপুরে ২৬ জনের ভোটের লড়াই

মু. রিয়াজুল ইসলাম লিটন দিনাজপুর :

রাত পোহালেই ভোট। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুরে এবারের লড়াই হবে আাওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। সকল প্রচার প্রচারণা শেষ করেছে জেলার ২৬ জন পদ প্রার্থী , আর এই ২৬ জনই ভোট যুদ্ধের লড়াই করবে, কিন্তু এদের মধ্যে ৬ জনকে বেছে নিবে জেলার ভোটাররা, ভোটারদের স্বপ্ন পূরণে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয় করে জনগণের দায়িত্ব দিবেন। এমনটাই জেলা বাসির ইচ্ছে ও প্রত্যাশা, তবে কাকে বিজয় করবে বা কোন প্রতিকে ভোট দিবে, তাহা কাল ভোটারদের ভোটের রায়ে জানা যাবে।গত কয়েক দিনে প্রার্থীদের প্রচারণায় ছড়িয়ে পড়েছে ভোটের উত্তাপ।
নৌকার প্রার্থীর মধ্যে প্রতিপক্ষ হিসেবে দলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা।
ভোটের মাঠে তারা নৌকা, ঈগল, ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়ে আসছেন । পাশাপাশি আছেন লাঙ্গল, মিনার, গোলাপ ফুল, মোমবাতি, মশাল, ফুলের মালাসহ অন্য প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
দিনাজপুর জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকায় জেলার ৬ টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ লাখ ০৯ হাজার ৫৪৯ জন। এদের প্রায় অর্ধেকই নারী ভোটার। এদের সংখ্যা ১২ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৬ জন । পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ জন। এদের মধ্যে ২০ জন হিজড়া ভোটার রয়েছে।
এদিকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগের দিনাজপুরের ৬ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৪টি আসনের প্রার্থীরা। এ আসন গুলো হচ্ছে জেলার ১, ৩, ৪ এবং ৬ আসন। এ নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও কেন্দ্রীয় ভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উন্মুক্ত করে দেয়াই নীরব রয়েছে আওয়ামী লীগের এসব প্রার্থীরা। মনোনয়ন বন্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
দিনাজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপালের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন একই দলের বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া জাকা।
দিনাজপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ইকবালুর রহিমের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ কুমার।
দিনাজপুর-৪ আসনে সাবেক মন্ত্রী ও ৩ বারের সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলীর বিপক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম তারিক এবং দিনাজপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শিবলী সাদিকের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজিজুল হক চৌধুরী।
এ বিষয়ে দিনাজপুর-১ আসনের প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, এতে করে জন নেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীরা বিব্রত হচ্ছে।
দিনাজপুর-৩ আসনের প্রার্থী ইকবালুর রহিম বলেন, যারা বংগবন্ধুর আদর্শ ধারন করে তারাই শেখ হাসিনার কর্মী এবং ভোটার।
দিনাজপুর-৪ আসনের প্রার্থী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, আমি কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করি না। যিনি আমার বিপক্ষে দাড়িয়েছেন তিনি আমাদের দলেরই লোক।
দিনাজপুর-৬ আসনের প্রার্থী শিবলী সাদিক বলেন, মূলত যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিল তাদের মধ্যে মনোনয়ন বন্চিত ঐ গ্রুপটা নৌকার বিরোধিতা করছে। এটা অত্যন্ত বেদনার বিষয় মনে করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে জেলা কমিটির নীরব ভুমিকা আছে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাফুজ্জামান মিতা বলেন, নিজ দলের লোকেরাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থী উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদেরও হাত পা বাধা আছে। আমাদের করার কিছু নেই।
সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আসনগুলোতে যোগ্যরাই জয়লাভ করবে এমনটাই আশা স্হানীয় ভোটারদের।
সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখানকার সব আসনেই নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যরা। পরিশেষে রাত শেষে আগামী কালকের দিনের আলোতেই, বিজয়ী ভাগ্যবানরা নির্বাচিত হবেন, তাই সেটা দেখার অপেক্ষায় কে হবেন দিনাজপুর জেলার ৬ জন কান্ডারী ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ