আজঃ মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

১০ মাঘের গাউসুল আযম মাইজভান্ডার দরবার শরীফ দেশের সর্ববৃহৎ স্বতঃস্ফূর্ত জনসমাবেশ

লেখক ঃ নাজমুল হাসান চৌধুরী হেলাল আওলাদে গাউসুল আযম মাইজভান্ডারি

১০ মাঘ ১৪৩০ বাংলা ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ বুধবার বাংলাদেশে প্রবর্তিত একমাত্র ত্বরিকা,বিশ্বসমাদৃত ‘ত্বরিকা-ই-মাইজভা-ারীয়া’র প্রবর্তক গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভা-ারী (ক.) কেবলা কাবার ১১৮তম মহান ১০ মাঘ উরস শরিফ ১০ মাঘ। বাংলা সনের এ তারিখ চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের বর্ষপঞ্জির এক উল্লেখযোগ্য তাৎপর্যময় দিন।এ তারিখটি সারা বাংলাদেশের জন্যই সাংবাৎসরিক গুরুত্বপূর্ণ তারিখ হিসেবে প্রতিষ্টিত।১০ মাঘ,হযরত গাউসুল আযম মাইজভান্ডারি শাহসূফি হযরত মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহর (ক.)ওফাত দিবস।বাংলা ১৩১৩ সনের ১০ মাঘ মোতাবেক ইংরেজী ১৯০৬ সনের ২৩ জানুয়ারী তিনি ওফাত প্রাপ্ত হন। (সুত্র মাসিক আলোকধারা) এ তারিখে প্রতি বছর মাইজভান্ডার দরবার শরীফে মহাসমারোহে উরস শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর মাঘ মাস শুরু হবার আগে থেকেই চট্টগ্রাম তথা সমগ্র বাংলাদেশের নিভৃত পল্লী জনপদগুলো ঢোলক, খরতাল প্রভৃতি রখমারী বাদ্যের তালে তালে জেগে উঠে অকস্মাৎ। মুখরিত হয়ে ওঠে গ্রাম বাংলার কৃষকের শান্ত উঠোন,প্রশান্ত আঙিনা। বাদ্যের তালে তালে অনুরণিত হতে থাকে মাইজভা-ারী গানের সুর। ‘মানুষ ধরা কল বসাইছে আমার বাবা ভান্ডারী, সেই কলেতে পড়লে ধরা আর থাকেনা ঘর-বাড়ী’ নানান ধরনের তকরীর দিতে দিতে সারিবদ্ধভাবে চলে মানুষ। পাড়ায় পাড়ায় ঘরে ঘরে গিয়ে সংগ্রহ করে উরস উপলক্ষে চাউল টাকা। ঢোলকের তাল, সানাইয়ের সুর শুনেই বৌ-ঝিরা বুঝতে পারে ওরশের নজরানা যোগাড়ে বেরিয়েছেন ভক্তরা। এসব দলে থাকেন এক কিম্বা একাধিক মাস্তান।শুধু চট্টগ্রামে নয়,বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামেই,এমনকি প্রতিটি মহল্লাতেই পাওয়া যাবে কয়েকজন করে ভান্ডারী-পাগল এমন মাস্তান। তাদের কারো মাথায় লম্বা বাবড়ী কাটা ঝাকড়া চুল। কারো হাতে লোহার কিম্বা গাছের বড় লাঠি,কারো হাতে লোহা বা তামা পিতলের বালা। পোশাকে-আশাকে নিতান্তই সাধারণ। কিন্তু প্রথম দর্শনেই এদের স্বকীয় একটা বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে। এদের দেখলে যে কেউই সহজে বুঝতে পারে। এরা ভান্ডারীর পাগল-মাস্তান। হক ভান্ডারীই এদের মুখের বুলি, জপমন। সারা দুনিয়াই যেন এদের ঘর। কেউ এদের পর নয়। উরস শরীফের নজরানা সংগ্রহের মিছিলে এদের উপস্থিতি পরিবেশকে করে তোলে আরো বৈচিত্র্যময়। যেখানে সেখানে এরা হালকায়ে জিকির শুরু করে দেয়। ঢোলক বাঁশীর আওয়াজ পেলে তো কথাই নেই এদের ভাবের সাগরে যেন তুফান উটে। বাল্যকালে এমন মিছিলে দু একজন মাস্তান কে ঢোলকের তালে তালে গাইতে শুনেছি “ফকিরী সহজ কথা না,লম্বা চুলে তেল মাখিলে ফকিরী পাবা না” কিম্বা ভান্ডারী! কি যাদুতে আমায় ভুলাইলি, গোস্ত দিবার আশা দিয়া কত্তি কিনালি (কত্তি অর্থ মাটির বদনা) “দেখে যারে মাইজভান্ডারে হইতাছে নুরের খেলা, নুরের মাওলা বসাইছে প্রেমের মেলা” আরো দেখেছি গান শুনে শ্রদ্ধা ও বিস্ময়ের অশ্রুসিক্ত অভিব্যক্তি।
১০ মাঘের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয় মাইজভান্ডার শরীফ অভিমুখে জনগ্রোত। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায় দুর দুরান্ত থেকে শত শত বাস ভাড়া করে আসেন লাখ লাখ মানুষ। সে এক অপরূপ দৃশ্য। ট্রেনে বাসে পায়দলে কেবল মানুষের মিছিল।কিসের টানে কোন সে মোহিনী আকর্ষণে কাতারে কাতারে লক্ষ লক্ষ মানুষ এদিকে ছুটে আসেন।তা আল্লাহপাকই ভাল জানেন। সুফি কবি আবদুল হাদীর ভাষায় চল গো প্রেম সাধুগণ প্রমেরী বাজার,প্রেম হাট বসিয়াছে মাইজভান্ডার মাঝার। নারী পুরুষ, শিশু যুবক সকল বয়সের সকল স্তরের মানুষের সে এক মিলনমেলা মহাসম্মিলন। সমগ্র বাংলাদেশ যেন ভেঙে পড়ে মাইজভান্ডার শরীফ গ্রামে। মাইজভান্ডার শরীফ হয়ে ওঠে সমগ্র বাংলাদেশের মহামিলন তীর্থ। গোটা দেশের সাংস্কৃতিক আর্থিক ঐক্যের প্রতীক- প্রতিভু। লাখো লাখো মানুষ শুধু যায় আর আসে, পিঁপড়ের ঝাকের মত। সে দৃশ্য চোখে না দেখলে বলে বুঝানো যাবেনা।১০ মাঘ এভাবে পরিনত হয় বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম স্বতঃস্ফূর্ত জনসমাগম স্থলে। শুধু জনসমাগম নয়,এই গোটা বিশাল গ্রামটিই তখন পরিনত হয় এক সুবিশাল এবাদতগাহে।সর্বক্ষণ চলে হালকায়ে জিকির,মিলাদ মাহফিল।দরবারের স্থানে স্থানে অজিফা পাঠ। আল্লাহর হামদ, মহনবীর নাত, আওলিয়া কেরামদের শানে গজল কাওয়ালী। ধর্মীয় পবিত্রতা, নিবেদিত প্রানের আকুতি যেন জড়িয়ে রাখে সমগ্র মাইজভান্ডার শরীফ কে। মানুষ নিজের অজান্তেই এতে হারিয়ে যায়, বিলীন হয়ে যায় মিশে যায় সেই অনাদি অনন্ত মহাশক্তির দরদী বুকে, মরমী সত্তায়। ১০ মাঘ উপলক্ষে মাইজভান্ডার শরীফে বসে এক বিরাট মেলা।বর্তমানে ঐ তারিখে দরবার শরীফের আশে পাশে বাজারগুলো যথা নাজিরহাট, নানুপুর লেলাং ফরহাদাবাদ প্রভৃতি জমে উঠে। হস্তশিল্পজাত বহু সামগ্রী এখানে বেচা কেনা হয়। চালুনি কুলা বেলুনি দা চুরি কোদাল বাঁশ বেতের অন্যান্য সামগ্রী। মাটির তৈরি তৈজস খেলনাপাতি মৌসুমি ফসল মূলা খীরা বরই হরেক রকম জিনিস পত্রের পসরা বসে। হালদা নদীর ভেতর চরে জম্মানো সাত/আট থেকে বার/চৌদ্দ কেজি ওজনের বিশাল বিশাল মুলা কাঁধে ঝুলিয়ে ঘরে ফেরেন ওরশার্থীরা। ১০ মাঘের কয়েকদিন আগে পিছে চলে চলে বেচাকেনা। ১০ মাঘ হয়ে ওঠে বাংলাদেশের হরেক রকম কুটির শিল্পের এক প্রদর্শনী ও বিপণন কেন্দ্র। আবহমান বাংলাকে পরিপূর্ণ রূপে খুঁজে পাওয়া যায় এখানে।
মাইজভান্ডার দরবার শরীফে সকল ঘরে চলে এ উপলক্ষে জেয়াফত। দরবারে আগত লক্ষ লক্ষ মানুষ এখান থেকে খালি মুখে ফিরে যেতে পারেন না ফিরে যান না। তারা কেউ খালি হাতে আসেন না। প্রত্যেক দল সাথে করে নিয়ে আসেন মহিষ গরু ছাগল মোরগ চাউল রান্নার মসল্লা সামগ্রী। জমা দেন দরবারে। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চলে রান্না বান্না ও পরিবেশনের কাজ।যে যার নিয়ত ও মানত করে খায়। এ দরবারের তবররুক খেয়ে জটিল রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন এমন লোকের সংখ্যাও অগণিত। রান্না বান্নার খানা পিনার এ বিশাল আয়োজন প্রকৃত অর্থে এক বিষ্ময়কর ব্যাপার লক্ষ লক্ষ মানুষেরা সারিবদ্ধভাবে শৃঙ্খলার সহিত খেয়ে এখান থেকে যান।এর বৈশিষ্ট্য হলো এ খানা পিনায় ধনী গরীব সকলের জন্য একই ব্যবস্থা।খানা পিনা সরবরাহ করা হয় মাটির সানকিতে (বছি) বর্তমানে মেলামাইনের বাসনে (প্লেট)।হাজার হাজার মাটির সানকির প্রয়োজন হয় মাইজভান্ডার উরশ এ। এই মাইজভান্ডার শরীফই বলতে গেলে চট্টগ্রামের শত শত কুমোর পরিবারকে টিকিয়ে রেখেছে দীর্ঘদিন।অনেকেরই জানতে ইচ্ছে হয়, এখানে ১০ মাঘ কত মহিষ গরু ছাগল জবাই হয়? হিসেব করে এর জবাব দেওয়া সম্ভব নয়।বলতে গেলে হাজারো হাজার। সে এক এলাহি কান্ড। কেবল মাইজভান্ডার দরবার শরীফে নয় ১০ মাঘ সারা বাংলাদেশে এমন কি দেশের বাইরে যেখানে ভক্ত অনুসারীরা আছেন কিন্তু কোনো না কোনো কারণে দরবারে হাজির হতে পারেন নাই। তারা নিজ নিজ অবস্থানে সমবেতভাবে উরশ শরীফের আয়োজন করেন।এই উরশ শরীফ বাঙালির জাতীয় অনুষ্টানের দাবীদার। বিশেষ করে জাতি ধর্ম দল মত বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের নিঃসংকোচ ও অবাধ অংশগ্রহন এ উরশ শরীফকে সার্বজনীনভাবে গৌরবের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।

লেখক ঃ নাজমুল হাসান চৌধুরী হেলাল
আওলাদে গাউসুল আযম মাইজভান্ডারি

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

এনায়েতপুর ব্রজধাম স্মৃতি সংসদের ৩১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত।

হাটহাজারী থানার এনায়েতপুর ব্রজধাম স্মৃতি সংসদের ৩১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রায় একশত প্রতিযোগি অংশ গ্রহন করেন। অনুষ্ঠান সংসদের সভাপতি বিধান বনিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রজধাম স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শুভাশীষ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রজধাম রমণী মোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পম্পা বসু, ব্রজধাম স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক পংকজ মিত্র উজ্জ্বল, পুতুল দে, তাপস দে, সুমিত্র সেন রাজু, বিকাশ চৌধুরী, বিকাশ বণিক, তুষার দে, সুকান্ত ভৌমিক। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, এই সংসদ শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি অনুভব, একটি স্মৃতি, এবং আমাদের সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। যখন এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তখন কিছু স্বপ্নবান মানুষ এই বিশ্বাসে এগিয়ে এসেছিলেন যে, ব্রজধামের স্মৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হবে, নতুন প্রজন্মের মাঝে তা ছড়িয়ে দিতে হবে।

আজ আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি, ব্রজধাম স্মৃতি সংসদ তার সেই আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে এক চুলও সরে আসেনি। নাটক, সংগীত, আবৃত্তি, লোকজ সংস্কৃতি সবকিছুতেই আমাদের সংসদ অসাধারণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এই পথচলা সহজ ছিল না, তবে সদস্যদের নিষ্ঠা, ভালোবাসা ও একাগ্রতার ফলে আজ আমরা এই অবস্থানে পৌঁছেছি। আমরা চাই, আগামী দিনগুলোতে আমাদের এই সাংস্কৃতিক পরিবার আরও বিস্তৃত হোক, আরও প্রাণবন্ত হোক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তুষার সেন, কাজল দে, নিলয় দে, মুন্না চৌধুরী, প্রণাম দে, সুকান্ত ভৌমিক, অন্তু পাল, নিশু পাল, অন্তু সেন, প্রান্ত চৌধুরী, শান্ত চৌধুরী, অন্তু চৌধুরী, লিংকন দে, মুগ্ধ দাশ, সিপ্ত দে, বাবু দে, অর্নব বনিক, প্রশান্ত মজুমদার, বিজন শীল, অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন বেতার ও টেলিভিশন শিল্পী তুর্না দে তৃষা, তৃষা চৌধুরী, রিমু চৌধুরী, শান্তনা দে, স্বীকৃতি বনিক, দিয়া দে, শ্রেয়া মজুমদার প্রমূখ।

যেখানে উম্মাহর দেহে যন্ত্রণা, সেখানে ফিলিস্তিন এক রক্তাক্ত হৃৎপিণ্ড।

“মুমিনগণ এক দেহের মতো—যদি দেহের এক অঙ্গ ব্যথিত হয়, গোটা শরীর তার ব্যথায় কাঁপে।” — (হাদীস, সহীহ মুসলিম।ফিলিস্তিন—পৃথিবীর মানচিত্রে ক্ষুদ্র এক ভূখণ্ড। অথচ ইতিহাসের সবচেয়ে ভারী অশ্রুগুচ্ছে নাম লিখিয়ে রেখেছে বহু শতাব্দী ধরে। গাজার ধূলোমলিন বাতাসে আজ আর বালুকণার ঘ্রাণ নেই, সেখানে শুধু বারুদের গন্ধ। আকাশে প্রজাপতির বদলে ড্রোন, শিশুর খেলনার স্থানে রকেটের ধ্বংসাবশেষ। ফিলিস্তিন আজ একটি জাতির নয়, বরং গোটা উম্মাহর হৃদয়ে গেঁথে থাকা এক দীর্ঘতর আর্তনাদ।

প্রতিদিন সূর্য ওঠে, কিন্তু গাজার মানুষ দেখে না আলো—দেখে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া স্বজনের হাত। প্রতিটি ভোর যেন এক নতুন শোকাবহ অধ্যায়। ঘুম ভাঙে বোমার শব্দে, আবার ঘুম পাড়ায় কান্নার চাপে। মৃত শিশুদের জন্য কাঁদে পৃথিবীর বিবেক, আর মুসলিম উম্মাহর মাঝে জন্ম নেয় এক প্রশ্ন—আমরা কী এখনো এক দেহ, নাকি শুধুই নামের উম্মাহ?

রাসূল (সা.) বলেছেন, “তোমরা যদি এক দেহের মতো না হও, তবে তোমাদের ঈমান অপূর্ণ।” কিন্তু আজ ফিলিস্তিন যখন পুড়ে যায়, আমরা দাঁড়িয়ে থাকি কেবল নীরব প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে। বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজস্ব স্বার্থের পাল্লায় ফিলিস্তিনকে মাপে। আর মুসলিম রাষ্ট্রগুলো—তারা হয়তো সম্মেলন ডাকে, বিবৃতি দেয়, দোয়া করে। কিন্তু ফিলিস্তিনের শিশুরা কি তাতে বাঁচে?

আমরা কি ফিলিস্তিনিদের জন্য শুধু আহারে ব্যস্ত, নাকি অন্তরে তাদের বেদনা বয়ে চলেছি? যদি তারা আমাদের ভাই হয়, তবে কেন আমাদের প্রতিবাদ এত মৃদু? কেন আমাদের জবান এত জড়তা পূর্ণ, কেন আমাদের হৃদয় এত নির্লিপ্ত?

এই কলাম কোনো সাময়িক রাজনীতি বা সংবাদ বিশ্লেষণ নয়—এ এক অভ্যন্তরীণ আত্মপ্রকাশ। এক লেখকের নয়, এক মুসলিমের হাহাকার। ফিলিস্তিনকে আজ দয়ায় নয়, দায়িত্বে দেখতে হবে। এই ভূমি আমাদের কেবল দুঃখ দেয় না—এ আমাদের ঈমানের আয়না। সেখানে দেখা যায়, আমরা কতটা মুসলিম, কতটা মানুষ।

গাজা যখন পোড়ে, তখন মক্কার বাতাসও কাঁদে।
জেরুজালেম যখন কাঁদে, তখন মদিনার মসজিদও শিউরে ওঠে।
কিন্তু আমরা কি কান পেতে শুনি সেই কান্না?

‘এক উম্মাহ, এক দেহ’—এই পবিত্র বাণী যেন আর কেবল হাদীসের পাতায় না থাকে।
এই বাণী হোক হৃদয়ের স্পন্দন। যেন ফিলিস্তিনের কান্না আমাদের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়,
জেগে তোলে আমাদের বিশ্বাস, উদ্দীপনা, প্রতিবাদ—আর সর্বোপরি, ভালোবাসা।

কারণ ফিলিস্তিন এখন শুধু নির্যাতনের নাম নয়, এ এক রক্তাক্ত হৃৎপিণ্ড, যা উম্মাহর বুকে প্রতিনিয়ত ধুকপুক করে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ