আজঃ শুক্রবার ৭ নভেম্বর, ২০২৫

কনকনে শীত ও ঘনকুয়াশায় বোরো আবাদ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় কৃষকরা

মশিউর রহমান রাসেল ঝালকাঠি প্রতিনিধি

কনকনে শীত ও ঘনকুয়াশায় বোরো আবাদ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় কৃষকরা
মশিউর রহমান রাসেল
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ-
কনকনে শীত, ঘন কুয়াশা, বৈরি আবহাওয়া, পানির অভাব আর শ্রমিক সংকটে ঝালকাঠিতে বোরো আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। কুয়াশার কারনে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানের বীজতলা হলদে হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে সার, কীটনাশক ও উপকারণের মূল্য বৃদ্ধিতে হতাশায় ভুগছেন চাষীরা। এ অবস্থায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, ঝালকাঠি জেলায় চলতি মৌসুমে ১৩ হাজার ৭৫০ হেক্টক জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে ৭৬৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করেন কৃষকরা। শুরুতেই সার, কীটনাশক এবং বীজসহ উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারনে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এদিকে ঘন কুয়াশা এবং শীতের প্রভাবে বীজতলায় উৎপাদিত চারার ডগা হলদে হয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে কোন কোন বীজতলা ফেটে চৌচির। পানি না থাকায় সেচ ব্যাহত হচ্ছে অনেক জায়গায়। অন্যদিকে তীব্র শীতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ঠান্ডায় অনেক শ্রমিকই ক্ষেতে কাজ করতে চাচ্ছেন না। শ্রমিক সংকটের কারনে বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, জমি তৈরি এবং রোপন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকরা জানিয়েছে প্রতি বছর বোরো মৌসুমে যশোর, সাতক্ষীরা, নাজিরপুরসহ পার্শ¦বর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এখানে আসত। এবছর প্রচÐ শীতে তাঁরা আসতে পারেনি। ফলে আবাদ কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, শীত এবং কুয়াশার কবল থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খালে ভাটার সময় পানি সংকট থাকে, তাই জোয়ারের সময় সেচ দিলে কৃষকদের উপকার হবে বলেও জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সার ও কীটনাশকসহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য কমিয়ে সহনশীল করার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। অন্যথায় বোরো আবাদে এ জেলায় লক্ষমাত্রা অর্জন ব্যাহত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
নলছিটির মালিপুর গ্রামের কৃষক সিদ্দিক তালুকদার বলেন, এ বছর এক একর জমিতে বোরো চাষাবাদের জন্য ক্ষেত প্রস্তুত করেছি। বীজবপণও সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রচÐ শীতে চারা হলদে হয়ে যাচ্ছে। এ চারা রোপণ করলে কোন কাজে আসবে না।
সদর উপজেলার চরভাটারাকান্দা গ্রামের কৃষক আল আমিন হোসেন বলেন, সার, কীটনাশক ও উপকারণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছি। অন্যদিকে শীতে শ্রমিক সংকটের কারণে বীজতলা করেও চারা রোপণের লোক পাচ্ছি না। নিজেদের মাঠে নিজেদেরই কাজ করতে হচ্ছে। এ বছর বাইরে থেকেও শ্রমিক আসছে না।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, শীত এবং কুয়াশার কবল থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশাকরি শীত ও কুয়াশা কেটে গেলে কৃষকদের আর সমস্যা হবে না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে প্রবাসীর ১৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট, আসামি গ্রেফতার

চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে ডাকাতি মামলার পলাতক আসামি মো. সাদ্দাম হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭। চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সাদ্দাম হোসেন ভোলার লালমোহন থানার দুলা মিয়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে।

র‌্যাব-৭’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন জানান, গত ২১ জুলাই সাড়ে ৮টায় দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ সামসুদ্দিন চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে এ কে খান বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে লিংক রোড় এলাকায় ডাকাতদল নগদ টাকাসহ ১৯ লাখ ৮২ হাজার ২০০ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি ৩/৪ জনকে আসামি করে হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে এ মামলার আসামি সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তা প্রতিবেদনে অভিজ্ঞতা সনদ জাল প্রমাণিত, ফের পদোন্নতির তদবির।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে জাল অভিজ্ঞতা সনদ দিয়ে চাকুরী নেন সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবদুল আজিজ। পরবর্তীতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিজ্ঞতার সনদটি জাল প্রমানিত হলে তিনি বরখাস্তও হন। পরে তদন্ত কমিটি মানবিক কারণ দেখিয়ে তাকে চাকুরীতে ফের যোগদানের সুপারিশ করেন। এখনও বহাল রয়েছেন তিনি। বর্তমানে নির্বিঘ্নে পদোন্নতির তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন ওই কর্মকর্তা।

এদিকে অবৈধ পন্থায় আজিজকে টাইম স্কেল প্রদান করায় বোর্ডের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান। অপরাধের পরও সনদ জালিয়াতকারী আজিজের কোন শান্তি না হওয়ায় অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, কোন বিধান আছে কি না জানি না, চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর সাময়িক বরখাস্ত আপাতত প্রত্যাহারে পদোন্নতি, সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেল নিতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে সেকশন অফিসার পদে লোক নিয়োগের জন্য ১৯৯৫ সালে ৫ ডিসেম্বর পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। সেকশন অফিসার পদে নিয়োগে ডিগ্রি পাসসহ ৪ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। আবদুল আজিজ নামে এক ব্যক্তি ১৯৯২ সালের ১ মার্চ থেকে ১৯৯৬ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত কানায় কানায় ৪ বছর দেখিয়ে এলজিইডি অফিসের জাল অভিজ্ঞতা সনদ তৈরি করে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করে।তবে আবদুল মালেক নামে এক ব্যক্তি আজিজের সনদ জালিয়াতির বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর এক হাজার টাকা ফি দিয়ে আবদুল আজিজ, সেকশন অফিসার-এর বিরুদ্ধে ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ দাখিল করে।

অভিযোগ পেয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব প্রফেসর নুরুল হুদার স্বাক্ষরে প্রফেসর সুচারু বিকাশ বড়ুয়া, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রামকে আহ্বায়ক ও জনাব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, সহযোগী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম এবং জনাব এনামুল হক খন্দকার, উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শককে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন ২০১০ সালের ১৪ ডিসেম্বর। গঠিত কমিটি ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর দাখিলকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে আবদুল মালেক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম-এর চেয়ারম্যান বরাবরে ডাকযোগে প্রেরিত এক পত্রের মাধ্যমে অভিযোগ করে, মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ০১/০৩/১৯৯২ইং হতে ০১/০৩/১৯৯৬ইং পর্যন্ত এলজিইডি অফিসে দৈনিক ভিত্তিক অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন মর্মে ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ প্রদান করে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত করে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ উপস্থাপন করেন।

এতে রয়েছে এলজিইডি, চট্টগ্রাম অফিস থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা সনদ যথার্থভাবে যাচাইয়ের জন্য তদন্ত কমিটি ২০১০ সালের ৩ মার্চ নির্বাহী প্রকৌশলী, এলজিইডি, চট্টগ্রাম বরাবরে সরেজমিনে তদন্তের জন্য পত্র প্রেরণ করেন। সে মোতাবেক ওই বছরের ১৪ মার্চ তদন্ত কমিটির আহ্বায়কসহ সকল সদস্য এলজিইডি, চট্টগ্রাম অফিসে উপস্থিত হন। এলজিইডি, চট্টগ্রাম-এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিষয়টি তখনকার সহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। সহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমান তদন্তের বিষয়ে মোতাবেক মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক-এর এলজিইডি অফিসে চাকরির মেয়াদকাল, চাকরি থেকে অব্যাহতিপত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের কোন কিছুই দেখাতে সক্ষম হয়নি।

এদিকে আবদুল আজিজকে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিপরীতে কোন প্রমাণাদি আছে কিনা তা তদন্ত কমিটির নিকট উপস্থাপনের জন্য ওই বছরের ২৪ মার্চ পত্র প্রেরণ করা হলে তিনি ৩১ মার্চ কমিটির সমুখে উপস্থিত হন। এতে মোহাম্মদ আবদুল আজিজ এলজিইডি অফিসের চাকরির নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র, চাকরি থেকে অব্যাহতিপত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের কপি উপস্থাপন করতে পারেনি।

তদন্ত কমিটি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, আবদুল আজিজ অভিজ্ঞতা সনদ জাল করে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করেন। ২০১০ সালের ৬ এপ্রিল তদন্ত কমিটি কর্তৃক দাখিল প্রতিবেদনে সনদ জালের অভিযোগ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ার পরও বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই বছরের ১৫ মে আবদুল আজিজকে এলজিইডি অফিসে চাকরির প্রমাণপত্র দাখিলের জন্য ইস্যু করা হয়। পত্রে উল্লেখ করেন, আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এলজিইডি অফিস, চট্টগ্রাম হতে আপনি

০১/০৩/১৯৯২ইং থেকে ০২/০৩/১৯৯৬ইং তারিখ পর্যন্ত ৪ বছর চাকরি দাবি করেন। উক্ত অফিসের কোন প্রমাণ বা রেকর্ডপত্র তদন্ত কমিটির কাজে প্রদর্শন করতে পারেনি। যদি আপনার দাবি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে গ্রহণযোগ্য যে কোন দালিলিক প্রমাণ যেমন চাকরির নিয়োগপত্র, অব্যাহতিপত্র, মজুরি/বেতন গ্রহণের প্রমাণপত্র ইত্যাদি০৩ কর্মদিবসের মধ্যে চেয়ারম্যান বরাবরে দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় নিশ্চিতভাবে ধরে নেওয়া হবে যে, আপনি এলজিইডি অফিস, চট্টগ্রামে কখনো চাকরি করেননি এবং চাকরি না করেই আপনি কথিত অভিজ্ঞতা সনদ সংগহ করে বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে প্রতারণা করেছেন।

আজিজ কোন দালিলিক প্রমাণ দাখিল করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হওয়ায় অসদাচরণের দায়ে স্মারক নং-২০০৪(৬), তারিখ: ২০/০৬/২০১০ মূলে আজিজের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা ১৯৮৫-এর বিধি-৩(বি) ও (ডি) অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুষ্ঠুভাবে বিভাগীয় মামলা পরিচালনার স্বার্থে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে আজিজের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্মারক নং-২১৩০(৪), তারিখ: ১২/০৮/২০১০ মূলে মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন উপ-পরিচালককে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তবে মানবিক কারণের কথা বলে তাড়াতাড়ি করে কমিটির এখতিয়ার বহির্ভূত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি নথিতে উপস্থাপন করলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ নথিতে এই মর্মে অনুমোদন দেন, বিভাগীয় তদন্ত কমিটি তদন্তের গভীরে না গিয়ে মানবিক দিক বিবেচনায় এনেছিল। বিষয়টি অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।

এদিকে শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে, আপাতত প্রত্যাহার করা সাময়িক বরখাস্ত আদেশ কত দিন, কত মাস, কত বছর থাকবে কোন বিধিতে আছে জালিয়াতকারী প্রমাণিত না হওয়ার পর মানবিক কারণে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ আপাতত প্রত্যাহারের নিয়ম? শুধু তাই নয়, সাময়িক বরখাস্ত আদেশ আপাতত প্রত্যাহার করার পর আজিজ তথ্য গোপন করে সুকৌশলে টাইম স্কেলের জন্য আবেদন করেন। টাইম স্কেল কমিটির আহ্বায়ক ঠিক সেই ব্যক্তি, যাকে আহ্বায়ক করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তার দ্বারা রহাস্যজনক কারণে আজিজের পক্ষে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে টাইম স্কেল প্রদানে সহায়তা করেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেকশন অফিসার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতা দেখিয়ে ফ্যাসিস্ট আজিজ সনদ জালিয়াতি, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরিচয়ে শিক্ষার্থীদের পাশ করিয়ে দেওয়ার নামে টাকা গ্রহণ, টেন্ডার করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলের ফলাফল জালিয়াতি, নারায়ণ গংদের সাথে ১৮ কোটি টাকার খাতা ক্রয়, ঘুষ নেওয়াসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে আজিজ জড়িত। বর্তমান যে অস্থির হয়ে আছে সকল তথ্য গোপন করে পদোন্নতি পেতে। তা যদি হয় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে বলে কর্মচারীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবদুল আজিজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ