আজঃ শনিবার ১৪ জুন, ২০২৫

আওয়ামী লীগ আগামী ৫ বছরে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী।

ঢাকা অফিস:

জাতীয়:

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন তাঁর সরকার আগামী পাঁচ বছরে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, সুদূরপ্রসারী কার্যক্রম ও গঠনমূলক পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ বিগত ১৫ বছরে সর্বক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা আগামী ৫ বছরেও অব্যাহত রাখতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারী) তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার দলকে আগামী পাঁচ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার আরেকটি সুযোগ দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের ২০ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে আমরা তা টেকসই করতে চাই। জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোটের মাধ্যমে ম্যান্ডেট দিয়ে উন্নয়নের সুযোগ দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে ২০৪১ সাল নাগাদ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যার উদ্দেশ্য হলো স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ। এই চার স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে টেকসই ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রসারের মাধ্যমে অন্তর্ভূক্তিমুলক উন্নয়ন নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও দারিদ্রশুন্য রাষ্ট্রে পরিণত করা।
সরকার প্রধান বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি ‘স্মার্ট উন্নত দেশ’, যেখানে বর্তমান মূল্যে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫শ’ মার্কিন ডলারেরও বেশি এবং যা হবে ডিজিটাল বিশে^র সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের ১ম সভা গত ৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৪টি স্তম্ভভিত্তিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং এ কার্যক্রম আরো সুচারু রুপে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন খাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয়/ বিভাগ এবং মন্ত্রীগণকে আহবায়ক করে ১৫টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে এবং বর্তমানে জিইডি কতৃর্ক নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২৬-২০৩০) প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরুর আগে শেখ হাসিনা বলেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের জন্য অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র ছিল।
আমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে এদেশের ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গিয়েছে। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। নির্বাচনে আমাদেরকে জয়ী করে দেশ সেবার সুযোগ দিয়েছে। তাই নির্বাচনের যারা আয়োজক ছিল যেমন নির্বাচন কমিশন, আইন-শৃঙ্খলা সংস্থা, সশস্ত্র বাহিনী, জনপ্রশাসন, বাংলাদেশের জনগণ, সকলকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমি যে এলাকা হতে নির্বাচিত হয়েছি, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া-টুঙ্গিপাড়ার জনগণের প্রতি। নির্বাচনে আমার খুব খাটতে হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও স্থানীয় জনগণ সকলেই মিলে নির্বাচনে আমাকে ভোট দিয়ে, নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মত বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশনে পরিণত হয়েছে। সরকারের পদক্ষেপ এবং উদার ও গণতান্ত্রিক মনোভাব, আইনের শাসনের প্রতি আকুণ্ঠ শ্রদ্ধাশীল থাকার কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বের ৪৮টি দেশের রাষ্ট্র/সরকার প্রধান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। ২৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশকে অভিবাদন জানিয়েছে।
বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় পড়ে গেলাম, যার ফলে আমাদের কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমাদের কিছু খরচের ব্যাপারে মিতব্যয়ী হতে হয়েছে, কিছু সংকুচিত করতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা এখন অতটা খারাপ নেই। ডলারের সংকট যথেষ্ট ছিল, এখন ঠিক সেরকম সংকট নেই।
তিনি বলেন, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা মনিটরিং বাড়িয়েছি। অনেক ক্ষেত্রে এলসি খোলার নামে যতটা প্রয়োজন নয় তার চেয়ে বেশি দিয়েও অনেকেই এলসি খোলে। কিন্তু ওই টাকাটা ফেরত আসে না। এ কারণে সরকার পণ্য কেনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ব্লুমবার্গের মূল্য তালিকা দেখে সেটা মনিটর করে এলসি খুলতে দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এলসি খুলতে যে অসুবিধার কথা বলা হচ্ছে তা নয়, আগে যেভাবে যখন-তখন খোলা হত, এখন সেটা ইচ্ছেমত হচ্ছে না, সেটা নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে।
রপ্তানি আয় খুব একটা কমেনি বলেও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, যেসব দেশে আমরা রপ্তানি করি, এমনকি যেগুলো খুব ধনী দেশ তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। বাজার সংকুচিত হয়েছে, সেখানে অর্ডার কমেছে। অর্থনৈতিকভাবে তারা খুব চাপে আছে, তাদের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তারাই কারণে হয়তো কিছুটা কমেছে। আর পদ্মা ব্যাংকের মতো যেসব ব্যাংক চালাতে পারছে না সেসব ব্যাংকে একীভূত করার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা বসে নেই, কাজ করে যাচ্ছি।
রপ্তানি আয় বাড়াতে সরকার বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিকল্প বাজার খুঁজে বেড়ানো, রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে ব্যবস্থা নিয়েছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষক যথাযথ উৎপাদিত পণ্যের মূল্য না পেলে সমস্যা হবে। মূল্য বৃদ্ধি পেলে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ কষ্ট পাবে। নিত্য পণ্যের কারণে দেশের সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য এক কোটি পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকী দিয়ে আমরা স্বল্পপণ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছি।
বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও আইনি ব্যবস্থা
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের চার বছরের নাশকতামুলক কর্মকান্ডে এক হাজার ৯৬৭টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এতে এক হাজার ২৪১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
এর আগে শাজাহান খান তাঁর প্রশ্নে ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর হতে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন পর্যন্ত তথাকথিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামুলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চান।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর হতে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন পর্যন্ত তথাকথিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের হাতে ১৮৮ জন নিহত ও চার হাজার ৯৭৩ জন আহত হয়। এসব নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এ সময়ে আট হাজার ১০৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৯৬৭টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এতে এক হাজার ২৪১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর হতে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়েরকৃত মামলাগুলোর বিষয়ে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহ’র প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা অগ্নিসংযোগ, হরতাল ও অবরোধের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে সারা দেশে সহিংস ও অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা, ট্রেনের লাইন উপড়ে ফেলা ও ফিশপ্লেটের ক্ষতিসাধণ, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও যানবাহন ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ বিভিন্ন নাশকতামূলক ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে তারা জনগণের জীবন ও সম্পদের বিপুল ক্ষতিসাধন করে।
সংসদ নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অশুভ শক্তি জোট নির্বাচন প্রতিহত করার নামে সারা দেশে এক নজিরবিহিন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে মেতে ওঠে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ভূলুণ্ঠিত করার অভিপ্রায়ে গণপরিবহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষের ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর ২০২৩ হতে সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে ৬শ’র ও বেশি যানবাহন ভাংচুর করা হয়। ১৮৪টি যাত্রীবাহী বাস, ৪৮টি ট্রাক, ২৮টি কাভার্ড ভ্যান, ৩টি সিএনজি, ৪টি প্রাইভেট কার, ১১টি পিকআপ, ৫টি ট্রেন, ১৫টি মটর সাইকেল, ৩টি লেগুনা, ১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস, ১টি অটো রিক্সা, ১টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি বসতঘর, ১টি বৌদ্ধমন্দির, ১টি নৌকাসহ ৩২৮টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তাদের হরতাল-অবরোধে চালক, হেলপার, পুলিশ, বিজিবি, শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বহুলোক নিহত, আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছে। ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ট্রেনের নাশকতায় নিহত ৯ জন।
অগ্নি-সংযোগ, নাশকতা, অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকান্ড প্রভৃতি অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য দেশে দক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা ও প্রচলিত আইন রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরতাল ও অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিভিন্ন আইনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে ৬০ গ্রামে ঈদুল আজহা পালিত।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও আশপাশের অন্তত ৬০টি গ্রামের মানুষ পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন শুক্রবার (৬ জুন)। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে গ্রামগুলোতে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট দরবার শরীফ ও গ্রামগুলোতে প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী মির্জাখীল দরবার শরীফ (সাতকানিয়া) ও জাহাঁগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ (চন্দনাইশ)–এর অনুসারীরা সৌদি আরবের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদসহ ইসলামি সব ধর্মীয় অনুশাসন পালন করে আসছেন। এই ধারার প্রবর্তক ছিলেন সুফি সাধক মাওলানা মোখলেসুর রহমান (রহ.), যিনি প্রায় ২০০ বছর আগে এ রীতির প্রচলন করেন।দরবার শরীফের দায়িত্বশীলরা জানান, তাদের অনুসারীরা হানাফি মাযহাব অনুসরণ করেন এবং আরব বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে থাকেন।

চন্দনাইশ পৌরসভা ও উপজেলার বুলার তালুক, হরিনারপাড়া, জামিজুরি, কুন্দুপাড়া, মোহাম্মদপুর, সাতবাড়িয়া, বরকল, বাইনজুরি, ধোপাছড়ি, কাঞ্চননগর, জুনিঘোনা, কেশুয়া, শ্রীমাই, রুপকানিয়া, গুনাগরি, বারখাইন, তৈলারদ্বীপ, চরণদ্বীপ, খরণদ্বীপ, চুনতি, পুটিবিলা, ছৈয়দাবাদ, উত্তর হাশিমপুর, বড়হাতিয়া, বাজালিয়া, কাঞ্চনা, পুরানগড়সহ প্রায় ৬০টি গ্রামে লক্ষাধিক অনুসারী শুক্রবার ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

এছাড়াও বোয়ালখালী, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, বান্দরবানের আলীকদম, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, খুলনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী ও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা মুরিদানরাও একই দিন ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন।

ঈদের জামাতের সময়সূচি অনুযায়ী, চন্দনাইশের জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের পীর সৈয়্যদ মো. আলীর ইমামতিতে সকাল ৭টায় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফে সকাল ৯টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সৈয়্যদ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহমান শাহ জাহাঁগিরীর ইমামতিতে এবং সকাল সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় জামাত পরিচালনা করবেন ড. সৈয়্যদ মাওলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান জাহাঁগিরী।

চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন বিকলে যাত্রীদের দুর্ভোগ, পরে স্বাভাবিক।

চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর তূর্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে সোমবার ভোররাতে কুমিল্লার লাকসাম-নাউটি সেকশনে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। দীর্ঘ চার ঘণ্টা ট্রেনটি আটকে থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। পরে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী লোকোশেড থেকে রিলিফ ইঞ্জিন এনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৩টা ২০ মিনিটে ৭৪২ নম্বর তূর্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাকসাম থেকে নাউটি সেকশনে পৌঁছালে ট্রেনের ৩০০০ সিরিজের ইঞ্জিনটি হঠাৎ বিকল হয়ে যায়। ফলে ট্রেনটি ওই সেকশনে দাঁড়িয়ে পড়ে এবং সড়কের অন্য ট্রেন চলাচলেও প্রভাব পড়ে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী লোকোশেড থেকে একটি রিলিফ ইঞ্জিন পাঠানো হয়। ভোর ৭টা ৩০ মিনিটে বিকল্প ইঞ্জিনটি এসে সংযুক্ত করার পর ট্রেনটি নাউটি থেকে ছেড়ে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে নাঙ্গলকোট পৌঁছায়।

সেখানে সান্টিং প্রক্রিয়া (ইঞ্জিন পুনঃসংযুক্তি ও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম) সম্পন্ন করে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে পুনরায় যাত্রা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছায়।

এ বিষয়ে লাকসাম স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ইঞ্জিন বিকলের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং রিলিফ ইঞ্জিন পাঠিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

রেলওয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইঞ্জিনটি পুরোনো হওয়ায় মাঝে মধ্যেই ত্রুটি দেখা দেয়। এই ধরণের ঘটনা রোধে রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ