আজঃ রবিবার ৯ নভেম্বর, ২০২৫

ঘুমধুম ও টেকনাফ সীমান্তের ওপারে ফের গোলাগুলির শব্দ, এপারে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক।

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজার:

মিয়ানমারে অভ্যন্তরে আরকান রাজ্য চলা সংঘাত থেকে ছোঁড়ে আসা মর্টারশেল ও গুলির শব্দে দিনের পর দিন এপারের সীমান্তবর্তী মানুষের মধ্যেই আতঙ্ক বেড়ে চলছে। ফের ঘুমধুম ও টেকনাফ সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দে এপার কেঁপেছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ওপারের সংঘাত থেকে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত পেরিয়ে এপারে মানুষের বসত ঘরে এসে পড়লো ৪টি গুলি ও ঘুমধুমে পড়ে মর্টারশেল।

এরপর কিছুটা ফায়ার বন্ধ থাকলেও রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভোর ও সকালে ঘুমধুম ও টেকনাফের হোয়াইক্যং ও দমদমিয়া পয়েন্টের ওপারে ফের গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা গেছে।
ঘুমঘুমের বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, গত শনিবার মিয়ানমারের ওপার থেকে অবিস্ফোরিত একটি মর্টারশেল এপারে তুমব্রুে এসে পড়েছে। এরপর রাতে তুমব্রু হিন্দি পাড়ার ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির ফায়ারের শব্দ এপারে ভেসে আসলো। এর আগে গত দু সপ্তাহ জুড়ে ওপারে চলা সংঘাত থেকে এপারে গোলা পড়া ও হতাহতের ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষ নিরাপদে সরে গিয়েছিল।পরে কিছুটা পরিবেশ শান্ত দেখা দিলে আবারো মর্টারশেল পড়লে বা গোলাগুলির ঘটনা ঘটলে নতুন করে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা গেছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদে আনোয়ারী বলেন, আজ রোববার সকাল হতে হোয়াইক্যং সীমান্ত পয়েন্টের মিয়ানমারের ওপারে তোতার দ্বীপ এলাকায় এক ঘণ্টার মতো গোলাগুলির হয়েছে।সেখানকার ফায়ারের শব্দে এপারে শোনা গেছে।
দমদমিয়া এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ নুর বলেন, মিয়ানমার আরকান রাজ্য চলা ফায়ারের শব্দে এপারে দমদমিয়া এলাকায় আমরা শুনতে পেয়েছি। সকাল থেকে এ গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসলো।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় দাবিদাওয়ার ঝড়, কিন্তু নীরব প্রবাসীরা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশের রাজপথ দাবিদাওয়ার ঝড়ে সরব। সরকারি কর্মকর্তা থেকে শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শ্রমিক—সবাই নিজ নিজ দাবি তুলে ধরছেন সরকারের কাছে।

তবে এই আন্দোলনের স্রোতের বাইরে রয়েছেন দেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী—প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হয়েও তারা এখন পর্যন্ত কোনো দাবি আদায়ে রাস্তায় নামেননি, কিংবা বিদেশে থেকেও কোনো সংগঠিত প্রতিবাদ জানাননি।

দেশে প্রতিদিনই নতুন নতুন দাবির ব্যানারে মিছিল-মিটিং দেখা যাচ্ছে। সরকারি চাকরিজীবীরা বেতন সমন্বয়ের দাবি তুলেছেন। শিক্ষার্থীরা নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতা চাচ্ছেন। স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষকরা বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর আহ্বান সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু প্রবাসীদের মধ্যে তেমন কোনো সাড়া নেই। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকা, কিংবা পূর্ব এশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে দাবি আদায়ের আন্দোলন বা সংগঠিত বক্তব্য এখনও অনুপস্থিত।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই নীরবতার পেছনে রয়েছে একাধিক বাস্তব কারণ।

১. ভৌগোলিক দূরত্ব ও আইনি বাধা:
বিদেশের মাটিতে অবস্থানরত শ্রমিক বা চাকরিজীবীরা স্থানীয় আইনের কারণে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না।
২. অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা:

অনেকে আশঙ্কা করেন, কোনো প্রকার রাজনৈতিক বক্তব্য বা প্রতিবাদ তাদের চাকরি বা ভিসার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৩. সংগঠনের সীমাবদ্ধতা: যেসব প্রবাসী সংগঠন আছে, তাদের বেশিরভাগই সামাজিক বা কল্যাণমূলক কাজে সীমাবদ্ধ—দাবি আদায়ে তাদের ভূমিকা দুর্বল।

৪. দেশীয় রাজনীতিতে আস্থাহীনতা: প্রবাসীদের একটি বড় অংশ মনে করেন, সরকার বদলায় কিন্তু নীতি বদলায় না—তাই আন্দোলনে অংশ নেওয়াকে তারা সময়ের অপচয় ভাবেন।

তবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিমান টিকিটের মূল্যহ্রাস, রেমিট্যান্স পাঠানোর পদ্ধতি নিরাপদ ও সহজিকরণ, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সেবার মানোন্নয়ন, দেশে বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করে কর-ছাড় ও প্রণোদনা, কর্মস্থলে দুর্ঘটনা বা মৃত্যুর পর ক্ষতিপূরণের কার্যকর ব্যবস্থা, বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের কর্মসংস্থান ব্যবস্থা ও পেনশন সুবিধার আওতায় আনা, দেশে প্রবাসী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তায় বিশেষ আইনের ব্যবস্থা করা এবং এয়ারপোর্টে হয়রানি বন্ধ সহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া জানিয়ে আসছেন। তবে এসব এখনো আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ; কোনো বাস্তব রূপ নেয়নি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্বায়িত্ব নেয়ার পর একজন উপদেষ্টা বলেন, “প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির প্রাণ। তাদের সমস্যা ও দাবি নিয়ে আলাদা একটি টাস্কফোর্স গঠনের চিন্তা চলছে। তবে প্রবাসী সমাজ মনে করে, আগেও অনেক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার। এই বিপুল অঙ্কের রেমিট্যান্সই দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভকে টিকিয়ে রেখেছে।

বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবাসীরা যদি সংগঠিতভাবে তাদের নীতিগত দাবি তুলে ধরতে পারতেন, তবে শুধু তাদের কল্যাণ নয়, দেশের অর্থনীতিও আরও সুসংহত হতে পারত। দেশের রাজনীতিতে যখন নতুন রূপান্তরের সময় চলছে, তখন প্রবাসী সমাজের এই নীরবতাই একদিন নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। তারা হয়তো এখন আন্দোলনে নেই, কিন্তু তাদের রেমিট্যান্সই প্রতিদিন দেশের চাকা ঘোরাচ্ছে—নীরবে, নিয়মিতভাবে, অবিরাম। এটা ভূলে গেলে চলবেনা। প্রবাসীদের সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই ভেবে দেখা উচিৎ।

শারজাহ বাংলাদেশ সমিতি: ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শাহাদাত হোসেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবাসী সংগঠন শারজাহ বাংলাদেশ সমিতিতে নেতৃত্বের রদবদল।
দীর্ঘদিন ধরে সমিতির কার্যক্রমে সক্রিয় থাকা এবং প্রবাসীদের মাঝে জনপ্রিয় মুখ, শাহাদাত হোসেন, আনুষ্ঠানিকভাবে শারজাহ বাংলাদেশ সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

জানা যায়, তিনি এর আগে সমিতির সহ-সভাপতির পদে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। সভাপতির অনুপস্থিতিতে তিনি একাধিকবার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সংগঠনের কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনাও করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহাদাত হোসেন দায়িত্ব পেয়ে বলেন, আমি আনন্দিত এবং একই সাথে সম্মানিত বোধ করছি পাশাপাশি বাংলাদেশ সমিতি’র আবুধাবির সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি সমিতির কার্যকরী কমিটি ও আজীবন সদস্য এবং শারজাহ ও ইউএই’র বসবাসরত প্রবাসী ভাই-বোনদের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করে যাব। সকলের সহযোগিতা নিয়ে এবং বাংলাদেশি প্রবাসীদের দোয়া নিয়ে আমি এই ঐতিহ্যবাহী সংগঠনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। এ সমিতি এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমি বাংলাদেশ প্রবাসীদের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।

​এই দায়িত্ব গ্রহণের ফলে শারজাহতে প্রবাসীদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং কল্যাণমূলক কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে বলে আরব আমিরাত কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা প্রত্যাশা করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ