আজঃ শুক্রবার ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

কথা বলা শেখার আগেই কোরআনে হাফেজ ফিলিস্তিনি শিশু মাজিন

পুরো পবিত্র কোরআন শরীফ মুখস্তকরণ এটা ভাগ্যের ব্যাপারে। এটা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। পৃথিবীতে অনেকে চেষ্টা করেও হাফেজ হতে পারেননি। আবার কেউ কেউ এক্কেবারে শিশু বয়সেই হাফেজ হয়ে যান। এরকম এক ঘটনা ঘটেছে বর্তমান বিশ্বের সবেচেয়ে মজলুম জনগোষ্ঠী ফিলিস্তিনের এক শিশু। শিশুটি এখনো কথাই বলতে শিখেনি। অথচ বিস্ময়করভাবে কোরআনের হাফেজ হয়ে গিয়েছেন।

জানা যায়, ফিলিস্তিনি শিশু মাজিন হালাস। বয়স মাত্র ৬ বছর। এখনো ঠিকমতো কথা বলাই শিখতে পারেনি, কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো- এই ক্ষুদে বালকই মাত্র ৮ মাসে পবিত্র কুরআনে কারিম হিফজ সম্পন্ন করেছে।

মঙ্গলবার আলজাজিরা মুবাশির জানায়, শিশু মাজিনের আরবি শেখার হাতেখড়ি তার প্রিয় শায়খ মোহাম্মদ সাবিহের কাছে। এরপর তার হাত ধরেই পর্যায়ক্রমে সে প্রস্তুতি নিয়েছে, তেলাওয়াত শিখেছে এবং সবশেষ পবিত্র কুরআনের হাফেজ হয়েছে।

মাজিন হালাস কুরআন মুখস্থ করেছে একটি মসজিদের হিফজ বিভাগে। সেখানে তার সহপাঠীদের মধ্যে সে ছিল সর্বকনিষ্ঠ। নিজের অসাধারণ তীক্ষ্ম মেধার কারণে খুব সহজেই শায়খের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয় মাজিন এবং তার পাশে জায়গা করে নেয়।

আলজাজিরা মুবাশিরের এক প্রতিবেদক মাজিনের সাথে সাক্ষাৎ করে। ওই প্রতিবেদককে সে স্পষ্ট ও শুদ্ধ আরবিতে জানায়, শুরুতে প্রতিদিন সে দৈনিক দুই পৃষ্ঠা করে মুখস্থ করত। এরপর প্রতিটি ধাপেই তার মুখস্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে মাত্র ৮ মাসেই তার হিফজ সম্পন্ন হয়।

মাজিনের শায়খ মোহাম্মদ সাবিহ আলজাজিরা মুবাশিরকে বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি তার মধ্যে অসাধারণ প্রতিভা ও প্রখর মেধার আলামত লক্ষ্য করি। আর হিফজের ক্ষেত্রেও তার পরিশ্রম ছিল চোখে পড়ার মতো।’

ফিলিস্তিনি এই ক্ষুদে বালক হিফজযাত্রার শেষ দিকে প্রতিদিন ১০ পৃষ্ঠা করেও মুখস্থ করেছে বলে জানালেন তার শায়খ মোহাম্মদ সাবিহ।

এ প্রসঙ্গে মাজিন হালাসের দাদি জানান, তারা একটি কুরআনি পরিবার। তার ইচ্ছা- তার সব সন্তানকেই পবিত্র কুরআনের হাফেজ বানাবেন।

মাজিনের এত অল্প বয়সে হাফেজ হওয়ার পেছনে তার মায়ের অবদানও কম নয়। তিনিও মাজিনের শায়খের সাথে কিছু পারা ভাগ করে নিয়েছিলেন; শায়খ যেভাবে মাদরাসায় মাজিনকে কুরআন মুখস্থ করাতেন, অনুরূপ বাড়িতে তিনিও নিজের ভাগের অংশটুকু সন্তানকে মুখস্থ করাতেন।

মাজিন হালাস এখন প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। তার বয়স এখন ৬ বছর ৬ মাস। এত অল্প বয়সে হিফজ সম্পন্ন করায় সে এখন সবার প্রশংসায় ভাসছে।

-আলজাজিরা মুবাশির থেকে বেলায়েত হুসাইনের অনুবাদ

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রাণীশংকৈলে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী ‘র ১৪৩ তম প্রয়াণ দিবস পালিত


আমরা অসত্যকে ত্যাগ করে, সত্যকে ধারণ করি এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বারা বৈদিক আর্য সমাজের আয়োজনে বলিদ্বারা দূর্গা মন্দির চত্বরে মহর্ষিদয়ানন্দ সরস্বতী’র ১৪৩ তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে স্মৃতি তর্পণ শ্রদ্ধান্জলী ওশুভ দীপাবলির প্রদীপ প্রজ্বলন এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈদিক আর্য সমাজের সভাপতি বিনোদ চন্দ্র বর্ম্মনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, শুনিল চন্দ্র আর্য,শ্যামল চন্দ্র আর্য, বলিদ্বারা বৈদিক আর্য সমাজের সম্পাদক ধনেশ্বর রায়, মাষ্টার ছবিকান্ত দেব, ডাঃ কৃষ্ণ চন্দ্র রায়, মাষ্টার কৃষ্ণ রায়,ললিত মহন রায় প্রমূখ।

অনুষ্ঠান সার্বিক তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করেছেন সহকারী কৃষি অফিসার দিপংকর রায় ও প্রাসাদী
বর্ম্মন।মহর্ষি দয়ানন্দের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ৪টি হোম যোগ্যের মাধ্যমে মহর্ষির মঙ্গল কামনায় প্রায় ৫শতাধিক ভক্ত অংশ গ্রহণ করেন।

শ্রী শ্রী দক্ষিণেশ্বরী মাতৃশক্তি কালী মন্দিরে দীপাবলীতে বস্ত্র বিতরণ

নগরীর পাঁচলাইশ হরিপুরস্থ ডা. নলিনীর বাড়ির হরিপুর শ্রী শ্রী দক্ষিণেশ্বরী মাতৃশক্তি কালী মন্দিরের উদ্যোগে ২৪ অক্টোবর, শুক্রবার দীপাবলী উপলক্ষে এলাকার অসচ্ছল পরিবারের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা হয়। বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেবায়েত পণ্ডিত অরূপ আচার্য্য। প্রধান অতিথি ছিলেন লায়ন ডা. বরুণ কুমার আচার্য্য বলাই। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রীমতি রুমা আচার্য্য। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্দিরের ট্রাস্টি সভাপতি নন্দিতা আচার্য্য। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন পণ্ডিত জনি আচার্য্য, অর্পিতা আচার্য্য, অন্বেষা আচার্য্য, অনুপমা আচার্য্য। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিপ্রা পাল, শিল্পী আচার্য্য, ঝুমুর সর্দার, রুমা পালিত, নারায়ণ আচার্য্য, রাজীব শীল, ছোটন শীল। উক্ত অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত হন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী শিক্ষিকা সোমা সরকার।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ