আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফিলিস্তিনিরা ওপেন-এয়ার কারাগারে

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ফিলিস্তিন বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর ফ্রাঁসেসকা আলবানিজ বলেছেন, ফিলিস্তিনে মৌলিক মানবাধিকারকে পদদলিত করছে ইসরাইল। তারা গণহারে মানুষকে জেলে পাঠিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ফির্লিস্তিনকে একটি ‘ওপেন-এয়ার কারাগারে’ পরিণত করেছে। তারা যা করছে তা যুদ্ধাপরাধ। এই অপরাধ তদন্তের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদেরকে অব্যাহতভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নজরদারি করা হচ্ছে। দখলীকৃত ভূখ-ে ৫৬ বছর ধরে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে রেখেছে ইসরাইল। নতুন এক রিপোর্টে এসব কথা বলেছেন আলবানিজ। ওই রিপোর্টে তিনি আরও বলেছেন, ১৯৬৭ সালের পর থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুসহ কমপক্ষে ৮ লাখ ফিলিস্তিনিকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধীনে তাদেরকে আটকে রেখেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এই কর্তৃত্ববাদী শাসন কার্যকর করা হয়েছে। তারা বিচার করছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। রিপোর্টে আলবানিজ আরও বলেন, ১৬০টি শিশু সহ কমপক্ষে ৫ হাজার ফিলিস্তিনি এখন আটক আছেন ইসরাইলের হাতে। তার মধ্যে ১১০০ ফিলিস্তিনিকে আটকে রাখা হয়েছে কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়া। আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের সুরক্ষায় মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। মত প্রকাশ, সমাবেশে যোগ দেয়া, রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার মতো ঠুনকো কারণে খেয়ালখুশিমতো আটক করা হয় ফিলিস্তিনিদের। ইসরাইলিরা ধরেই নেয় ফিলিস্তিনিরা অপরাধী। এক্ষেত্রে তাদের কাছে কোনো তথ্যপ্রমাণ থাকে না। এ অবস্থায়ই কোনো পরোয়ানা ছাড়া তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ বা বিচার ছাড়া আটকে রাখে। ইসরাইলি হেফাজতে নিয়ে তাদের ওপর চালানো হয় নৃশংসতা। সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে জাতিসংঘ সদর দফতরে এ রিপোর্ট প্রকাশ করেন ফ্রাঁসেসকা আলবানিজ। এ সময় তিনি বলেন, ইসরাইলি দখলদারিত্বের অধীনে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ফিলিস্তিনিরা পর্যায়ক্রমিকভাবে স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের জীবন ও মৌলিক মানবিক অধিকার চর্চার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, ইসরাইলি দখলদারিত্বের কয়েক দশকে ফিলিস্তিনিরা যেসব সহিংস কর্মকা- করেছেন তা তিনি প্রশ্রয় দেন না। বেশির ভাগ দোষী অভিযুক্ত হয়েছেন আন্তর্জাতিক আইন লংঘনের মধ্য দিয়ে। এর ফলে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের ন্যায়বিচারের প্রশাসনিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। দখলদারিত্বের বিরোধিতায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, ইরাইলি সেনাবাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষা, ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য গণহারে মানুষকে কারাবন্দি করা হয়েছে। ফ্রাঁসেসকা আলবানিজ আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদেরকে সামষ্টিকভাবে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখে ইসরাইল। এ জন্য যারা মৌলিক অধিকার চর্চা করে তাদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য কুখ্যাত সেনা নির্দেশ ব্যবহার করছে। এসব পদক্ষেপকে পুরো একটি জনগোষ্ঠীকে দমিয়ে রাখার হাতিয়ার বানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনিদেরকে নিজেদের অধিকার চর্চা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। বর্ণবাদকে জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। শক্তি প্রয়োগ করে ভূখ- দখল করা হচ্ছে। এই রিপোর্টে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় জেলে ফিলিস্তিনিরা যে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকারে পরিণত হয়েছেন তার বিস্তৃত উদাহরণসহ প্রামাণ্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে নির্যাতন, নোংরা ও গাদাগাদি করে সেলে আটকে রাখা, ঘুম এবং খাবার থেকে বঞ্চিত রাখা, চিকিৎসা না দেয়া, ভয়াবহ এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রহার এবং সব রকম অসদাচরণ। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ১৯৯২ সাল থেকে ফিলিস্তিনিদের এসব বিষয় আমলে নিয়েছে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিট্রারি ডিটেনশন। তারা বার বার ব্যাপক ও পর্যায়ক্রমে স্বাধীনতা বঞ্চিত রাখাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বলে এসেছে। মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘনের জন্য ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন ফ্রাঁসেসকা আলবানিজ। এসব অপরাধ যুদ্ধাপরাধ। এ অপরাধ তদন্তের জন্য তিনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরাইলের দখলদারিত্ব ও ফিলিস্তিনের ভূখ- দখল করে তা সম্প্রসারণের ক্রমবর্ধমান উদ্যোগকে স্বীকৃতি এবং সহায়তা না দিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে তাদের বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে জাতিসংঘ সনদের অধীনে বিদ্যমান সব কূটনৈতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ব্যবহার করে এই পরিস্থিতির ইতি ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আইন লংঘনের জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যাপক এবং পর্যায়ক্রমে খেয়ালখুশিমতো ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী দখলদারিত্বকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেয়া আরেকটি বর্ণবাদী আচরণ। অবিলম্বে এর ইতি ঘটা উচিত। আরব নিউজ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

যুক্তরাষ্ট্রে পরিক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিবর্ষণে নিহত ২ শিক্ষার্থী।


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছেব২ শিক্ষার্থী।যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালে ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বন্দুকধারীর হামলায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং অন্তত আটজন গুরুতর আহত হয়েছেন।স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে ।


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ