
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। যুবলীগ কর্মীকে তুলে নিয়ে ওয়ার্ড কার্যালয়ে আটকে মারধরের মামলায় গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সরকার হাসান শাহরিয়ার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিন কাউন্সিলর টিনু পাঁচলাইশ থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন।
নুর মোস্তফা টিনু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নগর যুবলীগ নেতা ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী। নির্বাচিত কাউন্সিলরের মৃত্যুতে ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে টিনু জয়ী হন।

মারধরের শিকার মেহেদী হাসান রাকিব আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনির অনুসারী। রনিও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নিশান চাকমা বলেন, অপহরণের পর মারধরের অভিযোগে দায়ের হওয়া এক মামলায় কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে।
এর আগে গত ৩ মার্চ রাতে মেহেদী হাসান রাকিব নামে চকবাজার এলাকার এক যুবলীগ কর্মীকে নিজের অনুসারী সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে তুলে ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন নুর মোস্তফা টিনু। আহত রাকিব ওই রাতেই টিনুসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে রাকিবের ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার রাতে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে তার বন্ধু অভিজিৎ সেনের মালিকানাধীন ‘একুশে ড্রাগ হাউজ’ ফার্মেসিতে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। রাজনৈতিক বিরোধের জেরে টিনু প্রথমে তাকে মোবাইলে হুমকিধমকি দেন এবং একপর্যায়ে ১৫-২০ সন্ত্রাসী পাঠিয়ে জোরপূর্বক তুলে চকবাজার ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে রাকিবকে একটি চেয়ারে বসিয়ে কয়েকজন যুবক ঘিরে ধরেন এবং কাউন্সিলর তাকে মারধর করেন ও হত্যার হুমকি দেন।এ ঘটনার পরদিন পাঁচলাইশ থানার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন মেহেদী হাসান রাকিবের রাজনৈতিক সহকর্মীরা। সেখানে হামলায় ৫-৬ জন গুরুতর আহত হন। রাকিব হামলার জন্য টিনুর অনুসারীদের দায়ী করেছিলেন।