আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

নেত্রকোনা:

কবরস্থানের জায়গা দখল নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা।

আব্দুল আওয়াল মদন নেত্রকোনা প্রতিনিধি:

নেত্রকোনার মদনে জোড়পূর্বক কবরস্থানের সরকারি জায়গায় মাটি কেটে দখলে নেয়ার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে একটি প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী লোকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের গোবিন্দশ্রী ভূঁইয়াহাটি গ্রামের বাসিন্দারা তাদের গ্রামের পাশে একটি সরকারি খাসজমিতে কবরস্থান নির্মাণ করেন। কয়েক যুগ আগে থেকে স্থানীয় লোকজনের কাছে গাছতলা কবরস্থান হিসাবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে গাছতলা কবরস্থানে ওই এলাকার মৃত ব্যাক্তিদের দাফন করা হয়েছে। সম্প্রতি গোবিন্দশ্রীর নসির উজ্জ্বল হাটি গ্রামের প্রভাবশালী গোলাপ খান, হাবিব খান রাহাত খান জোড়পূর্বক কবরস্থানের জায়গায় মাটি কেটে ঘর নির্মাণ করার পায়ঁতারা করছে। এর সাথে জায়গাটি বিক্রি করার জন্য সাইবোর্ড লাগানো হয়েছে। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করায় তাদেরকে নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। এ নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করায় যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।

গোবিন্দশ্রী ভূঁইয়াহাটি গ্রামের বাসিন্দা রনি খান, বুলবুল ইয়ার খান, রুবেল মিয়া, দুলাল মিয়াসহ অনেকেই জানান, ‘গাছতলা কবরস্থানটি সরকারি জায়গায়। এখানে আমাদের দাদা-দাদী, মা-বাবার কবর রয়েছে। নসির উজ্জ্বলহাটি গ্রামের প্রভাবশালী গোলাপ খান, হাবিব খান, রাহাত খান জোড়পূর্বক কবরস্থানের জায়গায় মাটি কেটে ঘর নির্মাণ করার পায়ঁতারা করছে। মা-বাবা, দাদা-দাদীর কবর রক্ষার্থে নিরুপায় হয়ে ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ করেছি।’

নজরুল ইসলাম গোলাপ খান জানান, ‘জায়গাটি কবরস্থানের ঠিক। কিন্তু কবরস্থানের সীমানায় আমার জমি রয়েছে। তাই এই জায়গাটি আমিই ভোগ করব।’

গোবিন্দশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম খান জানান, গোবিন্দশ্রী গ্রামে সরকারি জায়াগার কবরস্থানটি গোলাপ মিয়াসহ কয়েকজন মাটি কাটায় আমি নিষেধ করেছি। সরকারি জায়গা যাতে কেই ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে বলা হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান, ‘কবরস্থান দখল করার অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ