আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের ইফতার মাহফিলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিশেষ সাংবাদিক গোষ্ঠী সৃষ্টি করা হয়েছে

মোহ সাইফুল ইসলাম শিল্পী

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র যেভাবে চলছে, রাষ্ট্রের অঙ্গগুলো যেভাবে চলছে, সাংবাদিকতা তার চেয়ে ভালো অবস্থানে নেই। বিশেষ বিশেষ সাংবাদিক গোষ্ঠী এখানে সৃষ্টি করা হয়েছে, যারা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের সাংবাদিকতা পরিচালিত হয় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যারা চলে তারা সাংবাদিকতা করতে পারে না। সাংবাদিকদের হতে হবে ওয়াচডগ। এখন তারা হয়ে গেছে ল্যাপডগ মানে কোলের কুকুর। ওরা ওয়াচডগের বদলে এখন ল্যাপডগ হয়ে গেছে বাংলাদেশে।

তিনি নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন নেভাল এভিনিউস্থ মেরিটাইম মিউজিয়াম ক্যাপেতে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে)’র ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।

আমীর খসরু বলেন, যারা সাহস করে কথাবার্তা বলছে, লিখছে, তাদের বিরুদ্ধে একটা বড় ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। যেসব সাংবাদিক সংগঠন, মিডিয়ার, কিছু কথা বলার চেষ্টা করছে তারা কিন্তু এখন বড় চাপের মধ্যে আছে। ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এখনও যে সাংবাদিকগুলো দাঁড়িয়ে আছে, বিশেষ করে আজ এখানে যারা আছে, এখানে অনেক সাংবাদিক চেষ্টা করে যাচ্ছে, ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে অনেক সাংবাদিক চেষ্টা করে যাচ্ছে, অনেক বাধা অতিক্রম করে তারা কিন্তু করে যাচ্ছে, সাহসিকতার সাথে করে যাচ্ছে। আগে ভারতে আমরা শুনতাম ইন্দিরা গান্ধীর ইমার্জেন্সির সময় সরকার থেকে সাংবাদিকদের বলা হয়েছিল একটু বাঁকা হয়ে সরকারের পক্ষে কথা বলতে। কিন্তু তারা বাঁকা হয়ে হামাগুড়ি দিচ্ছিল। সরকার বলেছিল একটু ব্যাং হয়ে আমাদের পক্ষে লিখ, কিন্তু অতি উৎসাহী সাংবাদিকরা হামাগুড়ি দিচ্ছিল। বাংলাদেশ সরকার বলছে হামাগুড়ি দিতে, এরা এখন শুয়ে গেছে, সিজদায় পড়ে গেছে। বাংলাদেশ সরকার বলেছে হামাগুড়ি দাও, এরা সিজদায় পড়ে গেছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার অবস্থা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বেনিফিশিয়ারি সাংবাদিকরা ছাড়া বাংলাদেশের সাধারণ সাংবাদিকরা মুক্ত হতে চাচ্ছে। তারা মুক্তির পথ খুঁজছে। তারা যদি মুক্ত হতে না পারে এখন, তাহলে আগামীদিনে
বাংলাদেশে সাংবাদিকতা বলে কোনোকিছু থাকবে না। সাংবাদিকতা পেশা বলে যে কিছু আছে, এটাও ভুলে যেতে হবে।গণতন্ত্র ফেরানোর দায়িত্ব বিএনপির একার নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি সবাইকে বলি, বিএনপির একার দায়িত্ব না এটা। বিএনপি গুম হবে, খুন হবে, মৃত্যুর মুখে যাবে, চাকরি হারাবে, ব্যবসা হারাবে, শুধু বিএনপির একার দায়িত্ব না। সাংবাদিকদের দায়িত্ব আছে, পেশাজীবীদের দায়িত্ব আছে, সর্বস্তরের মানুষের আজ দায়িত্ব আছে। ৯৫ শতাংশ মানুষ যারা ভোটকেন্দ্রে যায়নি, তারা কিন্তু তাদের একটা দায়িত্ব পালন করেছে। বিএনপি এবং বিরোধী দলের ডাকে তারা দায়িত্ব পালন করেছে, তারা কথা বলেছে, ঘরে বসে কথা বলেছে।

আমীর খসরু বলেন, তারেক রহমান সাহেব অবশ্য ৯৭-৯৮ শতাংশ বলে থাকেন। ২-৩ শতাংশ কারা, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, কিন্তু ভোট পায়নি। তারা হালুয়া রুটির কারণে গিয়েছিল, কিন্তু হালুয়া রুটি পায়নি, এখানে ২-৩ শতাংশ আছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা ভোট করে জিততে পারেনি, তারাও বলছে ভোট হয়নি। আমি আর ডামি আর কী! কিছু কিছু আমি হেরে গেছে, কিছু কিছু ডামি হেরে গেছে। আমিও বলছে ভোট হয়নি, ডামিও বলছে ভোট হয়নি। আবার ভিক্ষকের দল জাতীয় পার্টির মতো যারা যারা হালুয়া রুটির জন্য গিয়েছিল, তারাও বলেছে ভোট হয়নি। শেষপর্যন্ত একমাত্র শেখ হাসিনা এবং তার কিছু লোকজন বলছে ভোট হয়েছে। তারেক সাহেবের হিসেব তাহলে ঠিক আছে। আমার ৯৫ শতাংশের পর উনার ৩ শতাংশ কোত্থেকে আসছে আমি এখন বুঝে গেছি। যারা গেছে ২-৩ শতাংশ বলছে ভোট হয়নি। তাহলে বাংলাদেশের ২ শতাংশ মানুষও আজকের এ নির্বাচনকে গ্রহণ করেনি, প্রত্যাখান করেছে।

তিনি বলেন, এটা নির্বাচন নয়, গণভোট হয়েছে। নির্বাচনে যাব কি যাব না ? আমরা বলেছি আপনারা নির্বাচনে যাবেন না। শেখ হাসিনা বলেছে যেতে হবে, না গেলে আপনার ভাতা কাটা যাবে, না গেলে এলাকায় থাকতে পারবেন না। পুলিশের ধমক, আওয়ামী মাস্তান লীগের ধমক। আমরা বলেছি, আপানার দেশের জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। এটা একটা গণভোট হয়েছে। এই গণভোটে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ এই নির্বাচন, এই রেজিম, এই নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখান করেছে। আর যারা অংশগ্রহণ করেছ, তাদের মধ্যে আরও ২-৩ শতাংশ প্রত্যাখান করার পর এখন আওয়ামী লীগ একা ছাড়া নির্বাচনের পক্ষে আর কেউ নেই।

তিনি আরও বলেন, আজ সমস্ত দেশ ঐক্যবদ্ধ। সুশীল সমাজ যারা কথা বলতো না, তারাও এখন কথা বলছে। আমাদের মধ্যে অনেকে বলেছেন, ভোটে অংশগ্রহণ করলে বোধহয় ইমরান খানের মতো কিছু হতে পারতো। আরে পাকিস্তানে তো কেয়ারটেকার সরকার কাজ করছে, পাকিস্তানে তো এখনও বিচার বিভাগ কাজ করছে বহুলাংশে, পাকিস্তানের সব রাষ্ট্রীয় সংগঠন দখল করেনি শতভাগ। এজন্য পাকিস্তানে ওরা কিছু করতে পেরেছে। বাংলাদেশে আমরা না গিয়ে যেটা করতে পেরেছি, ৯৫ শতাংশ মানুষকে যে আমরা ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার সুযোগ দিয়েছি, এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা। এই যে বিএনপি ১৫ বছরের নির্যাতন-নিপীড়ন, গুম-খুন, হত্যা, মিথ্যা মামলার পরও বিএনপি দাঁড়িয়ে আছে, বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে তারা নিতে পারেনি, এটা আরেকটা সফলতা। আন্দোলনের দুই সফলতা। মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে এ ভোটকে প্রত্যাখান করেছে, একটা গণভোটের মতো হয়েছে।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপি খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। বিএনপি আজ অনেক বেশি পরিণত। বিএনপি আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় অনেক বেশি শক্তিশালী দল। আমাদের এ যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আমাদের সঙ্গে যেসব বিরোধী দল আছে, সবাইকে সাথে নিয়ে, হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে মুক্ত করতে হবে। এটা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম। এ সংগ্রামে বিজয়ী হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম ভয়াবহ সংকটকাল পার করছে। গণমাধ্যমের টুঁটি এমনভাবে চেপে ধরা হয়েছে যে এর স্বাধীনতা এখন পুরোপুরি বিপন্ন। কথায় কথায় গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকদের জেলে ঢুকানো হচ্ছে। গত ১৫ বছরে ৬০জন সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। নানান কালা কানুন তৈরি করে গণমাধ্যমকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলা হয়েছে। চার শতাধিক গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যম শিল্পে একটা ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করায় গণমাধ্যম এখন সত্য তুলে ধরতে পারছে না। এসব কারণে গণমাধ্যম দিন দিন জনগনের আস্থা হারিয়ে ফেলছে।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম গণমাধ্যমের হতে পারছে না। গণমুখী চরিত্র হারিয়ে ফেলেছে। গণমাধ্যমের গণ শব্দটি মুছে গেছে। সত্য তুলে ধরতে না পারায় সংবাদমাধ্যম দিন দিন মানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলছে। যা সংবাদমাধ্যমকে অস্তিত্বের সংকটে ধাবিত করছে। গণমাধ্যম সব সময় জনগণের পক্ষে থাকার কথা। সাংবাদিকের ভালোর পক্ষে কল্যাণের পক্ষে থাকতে হবে। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলবে। কিন্তু কীভাবে জানি না, জনগণের সঙ্গে গণমাধ্যমের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কালে কালে সে দূরত্বটা বাড়ছেই শুধু। আমরা জানি না আমাদের মিডিয়া মালিকরা তা অনুধাবন করছেন কিনা! আমাদের সবচেয়ে বড় সঙ্কট হচ্ছে গণতন্ত্রের সঙ্কট। গণতন্ত্র না থাকলে গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা থাকে না তা আমরা হাঁড়ে হাঁড়ে টের পাচ্ছি।
এতে সন্মানিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর, মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, সিএমইউজের সাবেক সভাপতি ইস্কান্দার আলী চৌধুরী, শামসুল হক হায়দরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট কপিল উদ্দিন চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সাধারণ সম্পাদক ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, এ্যাবের সভাপতি ইঞ্জি. জানে আলম সেলিম, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন, ইঞ্জি. বেলায়েত হোসেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক নেতা অধ্যাপক শেখ মহিউদ্দিন ও আলী আব্বাস প্রমূখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ৩২ টি চেক বিতরণ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের উদ্যোগে বোয়ালখালীতে ৩২ টি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় শাকপুরা প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ উপলক্ষে এক সভা বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি রূবেল বড়ুয়া হৃদয় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি পল্টু কান্তি বড়ুয়া ও সমাজকর্মী রাজীব বড়ুয়ার উপস্থাপনায় এতে আশির্বাদক ছিলেন- শাকপুরা সার্বজনীন তপোবন বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বসুমিত্র মহাস্থবির, ভদন্ত বিপস্সী মহাথের, ভদন্ত পরমানন্দ মহাস্থবির, ভদন্ত দীপানন্দ থেরো। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন -চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আজিজুল হক চেয়ারম্যান,

জেলার সদস্য মোঃ শওকত আলম, বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক হাজী ইছহাক চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, পৌরসভা বিএনপি সাবেক আহবায়ক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রচার সম্পাদক সরোয়ার আলমগীর, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, শওকত আলী চেয়ারম্যান, আবদুল আওয়াল মঞ্জু, শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান, পৌরসভা বিএনপি নেতা হাজী আবু আকতার, বোয়ালখালী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ ইকবাল হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান চৌধুরী, শ্রমিক দল নেতা মোঃ মোঃ ইলিয়াসসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ,

বোয়ালখালী সম্মিলিত বৌদ্ধ পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ঐক্য ফাউন্ডেশন বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি বিকাশ বড়ুয়া, বৈদ্যপাড়া পঞ্চরত্ন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি দেশপ্রিয় বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট মহানগর-জেলা ও উপজেলা শাখার নেতা কমল জ্যোতি বড়ুয়া,তাপস বড়ুয়া , সুমন বড়ুয়া, রনি বড়ুয়া চৌধুরী, বিপ্লব বড়ুয়া, প্রকৌশলী দিক্ষিত বড়ুয়া, অর্ণব বড়ুয়া,সুমন বড়ুয়া ছোটন বড়ুয়া,পিপলু বড়ুয়া সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার/ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেছেন- বাংলাদেশ সম্প্রতির মেলবন্ধ, এদেশে সকল ধর্মের সহবস্থান ছিল -আছে- থাকবে। তাই ধর্মীয় সৌহার্দ্য বজায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এরিই ধারাবাহিকতায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট আমাকে নির্বাচিত করুন আমি আপনাদের সকলের আশির্বাদ প্রার্থী। তিনি এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাস্টি রূবেল বড়ুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এখন সরকারী টাকা দপ্তরে গিয়ে আনতে হয়না, রূবেল বড়ুয়াই সরকারী টাকা নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির। তার এ কর্মযজ্ঞকে আপনাদের আশির্বাদে রাখতে হবে।

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ