আজঃ সোমবার ১০ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে তীব্র লোডশেডিং বিপর্যস্ত জনজীবনে স্বস্তি দিতে জাতীয় গ্রিড থেকে দ্রুত বিদ্যুত সরবরাহ বাড়ানোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র মাহে রমজানের আগে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বারংবার নগরবাসীতে আশ্বস্ত করেছিলো সেবা সার্ভিসের কোন সংকট হবে না। কিন্তু মাস পেরুনের আগেই চট্টগ্রামে ইফতার-সেহরিতেও নিস্তার নেই, তীব্র্ লোডশেডিং। নগরীতে দিনে ৬-৮ ঘণ্টা, গ্রামে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি ভয়াবহ লোডশেডিং এ বিপর্যস্ত জনজীবন। বিদ্যুত বিভাগ বলছে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমেছে। আর সেকারনে চট্টগ্রামে দৈনিক ৩শত থেকে ৪ শত মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে সবসময়। রমজানের শুরু থেকে শুরু হয়েছে ওয়াসার পানি সংকট ও লবনাক্তা। এখন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং। পুরো দিনে বার থেকে চৌদ্দ বার লোডশেডিং হচ্ছে। অনেক সময় ঘন্টায় দুই থেকে তিন বারও লোডশেডিং, যা তীব্র গরমে জনজীবনকে চরম অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এঅবস্থায় বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে চট্টগ্রামে জরুরিভাবে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুত সরবরাহ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।

১ এপ্রিল ২০২৪ চট্টগ্রামে ভয়াবহ লোডশেডিং এ বিপর্যস্ত জনজীবনে স্বস্তি আনতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুত সরবরাহ বাড়ানোর দাবিতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

বিবৃতিতে নেতৃবন্দ বলেন, বিদ্যুত বিভাগ একসময় লোডশেডিং শব্দটি বাদ দিয়ে বিদ্যুত লাইনে ত্রুটি বা বিদ্যুৎ বিভ্রাট ব্যবহার করলেও গ্রীষ্মকাল শুরুর সময়ে ভয়াবয় আকারে লোডশেডিং এর ফিরে এসেছে। যার কারণে চট্টগ্রামের বাকলিয়া ও কল্পলোক আবাসিক এলাকা, পাথরঘাটা, স্টেডিয়াম, ষোলশহর, কালুরঘাট, বাকলিয়া, মাদারবাড়ি, আগ্রাবাদ, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, রামপুর, নিউমুরিং বিদ্যুৎ বিতরন কেন্দ্রগুলো ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং করছে। নগরীর বাইরে ফৌজদারহাট, হাটহাজারী, মোহরা, বাড়বকুন্ড, সন্দ্বীপ, পটিয়া, সাতকানিয়া, দোহাজারী, বাশখালীতে ঘণ্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। একইভাবে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার বিতরণ বিভাগ এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এলাকাগুলোতেও ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কারনে গ্রামাঞ্চলের মানুষের জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত। দিন-রাত মিলিয়ে কোথাও কোথাও ছয় থেকে আট ঘণ্টা, কোথাও ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না।

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একসময় বিদ্যুত বিভাগ থেকে বলা হয়েছিলো বিদ্যুত উৎপাদন উদ্বৃৃত্ত আছে। যার কারনে ভাড়া ভিত্তিক ও কুইকরেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোকে বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে বাধ্য হয়েছিলো। যার ফলে বিদ্যুত উৎপাদনে সরকারের  ভর্তুকির বোঝা ও খরচের পাল্লা দিন দিন বেড়েগেছে। যার পুরো দায়ভারই জনগনকে বহন করতে হচ্ছে। সরকার প্রতিনিয়তই ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ালেও জনগনের নিরবিছিন্ন বিদ্যুত প্রাপ্তির বিষয়টি সুদর পরাহত হচ্ছে। চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)র তথ্য অনুযায়ী  চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় এক হাজার ২৮০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৯০০ মেগাওয়াট। ফলে প্রতিনিয়তই চট্টগ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে ৩ শত ৮০ থেকে ৪ শত ২০ মেগাওয়াট পর্যন্ত।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন বিদ্যুতের লোডশেডিং ও বিদ্যুত বিভ্রাট নিয়ে সরকারি তথ্য গোজামিলে ভরপুর, প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ এবং অনেক বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। যেখানে মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনজীবিকার খরচ বাড়িয়ে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বেসরকারী ভাড়াভিত্তিক ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রের নামে ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে উৎপাদন সক্ষমতার অধিক মূল্য দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে। যা কোন ভাবেই কাম্য নয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রায়পুরায় ১০০০ ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

নরসিংদীর রায়পুরায় অভিযানে ১ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মাহমুদাবাদ লিজা জর্দা কোম্পানির সামনে থেকে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জ এলাকার ওবায়েদ উল্লাহর ছেলে সৌরভ মিয়াকে (২৬) ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, আটক আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মাদক, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

আওয়ামী লীগের এমপিরা লুটেপুটে খেয়েছে,মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেনি-আশরাফ উদ্দিন বকুল।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক ও আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেছেন, আওয়ামীলীগ যা করেছে আমরা তার বিপরীত করবো। তারা চরাঞ্চলে ঝগড়া লাগিয়েছে, বিভিন্ন ভাবে টাকা পয়সা নিয়েছে, তারা যেসকল অপকর্ম করেছে আমরা সেটা করবো না। চর আড়ালিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আশরাফ উদ্দিন বকুল আরও বলেন, ১৭ বছরের নিপিড়ন নির্যাতনের পরে সুযোগ এসেছে আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মা বোনদের সাথে নিয়ে নির্বাচনের দিন ধানের শীষকে বিজয়ী করার। আওয়ামীলীগের এমপিরা সাতবার নির্বাচিত হয়েও লুটেপুটে খেয়েছে কিন্তু মানুষের ভাগ্য বা রাস্তার কোনো উন্নয়ন করেনি এমনকি এলাকায় কোনো শিল্প কারখানা করেনি। এসময় তিনি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখার জন্য আহ্বান জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান সরকার, চর আড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদা জামান, রায়পুরা পৌর বিএনপি সভাপতি ইদ্রিস আলী মুন্সি, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পলাশ, চর আড়ালিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী মেম্বার, সিনিয়র সহ সম্পাদক কেবল সরকার সহ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ