আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

ইছামতীর গর্ভে সীমান্তবর্তী জমি,ছোট হচ্ছে দেবহাটা উপজেলা

দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ফেরদৌসী বেগমের ৪০ বছরের সংসার। ভাতশালা গ্রামের ইছামতী পাড়ের বাসিন্দা এই নারী গত চার দশকে চোখের সামনে বসতবাড়ি, মাছের ঘের, খেলার মাঠ, মাছভরা পুকুর, চাষের জমি নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখেছেন। এবার ভাঙতে বসেছে তাঁর বসতবাড়ি। এ নিয়ে অনিশ্চয়তা রাতের ঘুম ছুটে গেছে তাঁর!
ইছামতীর গর্ভে ফেরদৌসী বেগমের মতো অনেক কিছুই হারিয়েছেন রফিকুল ইসলাম। প্রায় তিন বছরের ব্যবধানে তিনি হারিয়েছেন পূর্বপুরুষের কবরস্থান, মৎস্য ঘেরসহ অনেক জমি। চোখের সামনে বিলীন হতে দেখেছেন আব্দুল গফ্ফার সরদার, আব্দুর রউফসহ পাটনিদের বসতবাড়ি। একসময় নদীর দুই পাড়ের বেড়িবাঁধে বসে দুই দেশের মানুষ খোশগল্প করতেন। আজ সেই স্থান নদীগর্ভে। নদী বড় হতে হতে এপার থেকে ওপারে তাকালে ঝাপসা লাগে। নদীপাড়ের মানুষের যেখানে পারিবারিক কবরস্থান ছিল, তার বিপরীতে ছিল ভারতের জালালপুর ট্যাঁক নামক এলাকা। সেখানে এখন বিস্তীর্ণ চর। আর গোয়ালাটি, স্বৈতপুর, শাকচূড়া এলাকা বসবাসের উপযোগী হয়ে পড়েছে। আর বাংলাদেশের ভাতশালা, কোমরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার নদীর পাড় ক্রমেই ভেঙে একাকার হয়ে যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক ভাতশালা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানের বাড়ির প্রাচীর, গোয়ালঘরের দেয়ালে বড় ফাটল দেখে দেয়। সেই সঙ্গে নদীপাড়ের মাটি ধসে গিয়ে মূল বাঁধ চৌচির হয়ে গেছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তারা পরিদর্শনে এসে দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে যায়। পরে কিছু বালুর বস্তা ফেলে কোনো রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বাঁধ রক্ষায় এটি কিছুই নয় বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, যে পরিমাণ বরাদ্দ হয়, তা সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয় না। কোনো কাজই ঠিকঠাক করা হয় না, এ কারণে বছরের পর বছর ভাঙছে নদী। নদীর পাড় রক্ষায় যে বস্তা ব্যবহার করা হয় তা টেকসই হয় না।

আরও অভিযোগ রয়েছে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হলে ভাগ্য খোলে অনেকেরই। আর তাই ভেঙে যাওয়ার আগে কাজও শুরু হয় না। ফলে নদী পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ কোনো কালে ঘুচবে বলে কেউ আর আশা করেন না!

বাংলাদেশ-ভারত সীমানা ইছামতী নদী সাতক্ষীরা জেলার গা ঘেঁষে বয়ে গেছে। জেলার একমাত্র সীমান্তবর্তী নদী এটি। ইছামতী জেলার কয়েকটি বহমান নদীর মধ্যে অন্যতম। আর এই নদীর বড় একটি অংশ এলাকাজুড়ে রয়েছে দেবহাটা উপজেলা। কিন্তু বর্তমানে সর্বনাশা রূপ নিয়েছে ইছামতী। প্রতিবছর ইছামতীতে দেখা দেয় তীব্র ফাটল ও ভাঙন। নদীভাঙনের কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, ঠেলা জাল, অবৈধভাবে নদীর পাড় ঘেঁষে ছোট-বড় মৎস্য ঘের ও পুকুর খননের কারণেই ইছামতীর ভাঙন দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলন। এর ফলে দেবহাটা সীমান্তে ইছামতীর পাড়ের গ্রামগুলোর জনসাধারণ প্রতিনিয়ত উদ্বেগ আর আতঙ্কের মধ্য দিন কাটাচ্ছেন। বালু উত্তোলনের ফলে দেবহাটা সদর ইউনিয়নের রাজনগর ও চর দেবহাটা মৌজা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ২৪টি মৌজার স্থলে বর্তমানে আছে ২২টি।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে নদীর বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যায় পাঁচ-ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ধান, মৎস্য ঘের, খামার, বাড়ির আঙিনা ডুবে যায়। এরপর ২০১৩ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিবছরই ইছামতীর দেবহাটা সীমান্তে ছোট-বড় ভাঙন দেখা দেয়। প্রায় প্রতিবছর সংস্কারও হয়। কিন্তু তাতে তেমন কোনো লাভ হয় না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপা রানী সরকার বলেন, ইছামতী নদী দুই দেশের সীমান্তবর্তী হওয়ায় নদীর মাঝখান থেকে উভয় দেশের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। আর এতে বাংলাদেশের পাড়ের জমি নদীতে বিলীন হয়ে নদীর অংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জমি কমছে। অপর দিকে ভারতের পাড়ের জমি বেড়ে চলেছে। এভাবে এই সীমান্তে বাংলাদেশ ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে।

বাঁধ নির্মাণে ও সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) মাহাবুব রহমান বলেন, বিভিন্ন কারণে নদীভাঙন দেখা দেয়। আর নদীভাঙন রক্ষায় যেভাবে শিডিউল করা হয় সেভাবে কাজ হয়। কোনো অনিয়ম হয় না।

এদিকে, চলতি বছরের গত ১০ মার্চ জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আগামী পয়লা বৈশাখ থেকে নতুনভাবে বালুমহাল ইজারা নিতে একটি শ্রেণি বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করছে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ