আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে চবি উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব
‘এই বৈশাখে বৈশ্বিক বৈভবে’এঅন্চলের গানগুলোকে ধারণ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বাঙালির শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘বাংলা নববর্ষ’ দিনব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উদ্যাপন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখের গান ও নৃত্য, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা, কাবাডি খেলা, বউচি খেলা, জারুলতলার বৈশাখী মঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ব্যান্ডদল ‘বে অব বেঙ্গল’-এর মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশনা। সকাল ১০:৩০ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ চত্বর (জিরো পয়েন্ট) থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের এর নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে চবি জারুলতলায় বৈশাখী মঞ্চে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে চবি জারুলতলার বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বৈশাখী মঞ্চে জাতীয় সংগীত, বৈশাখের গান ও নৃত্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী পর্বের সূচনা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ কেন্দ্রীয় উদ্যাপন পরিষদের আহবায়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোঃ সেকান্দর চৌধুরী ও চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে। আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ কেন্দ্রীয় উদ্যাপন পরিষদের সদস্য-সচিব ও চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চবি সিনেট সদস্য ও চবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান, চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আবদুল হক, চবি আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক, চবি অফিসার সমিতির সভাপতি রশিদুল হায়দার জাবেদ, চবি কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোঃ সুমন (সুমন মামুন) এবং চবি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী হোছাইন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চবি ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য ও চবি অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তন্ময়ী হাসান। সকাল ৯ টায় ‘বাংলা নববর্ষ’ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের। এতে চবি মাননীয় উপ-উপাচার্যদ্বয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত সকলকে বাংলা নববর্ষের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। বাংলা নববর্ষ আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবন ধারার সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। বিশ্বায়নের প্রভাবে আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য-মূল্যবোধ সাংস্কৃতিক চর্চাকে উৎসাহিত করতে পহেলা বৈশাখের প্রভাতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আজ আনন্দে উদ্বেলিত। উপাচার্য বলেন, “বিগত বছরের সমস্ত গ্লানিকে মুছে ফেলে অতীতের গৌরব ও সৌন্দর্যকে পুজিঁ করে বর্তমান কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও ভবিষ্যত অগ্রযাত্রায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। সামনে থাকা অফুরন্ত স্বপ্ন ও অনন্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলতে হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ’। তিনি আরও বলেন, “এসো সবাই বৈশাখের নবজাগরণে নতুন উদ্যেমে জেগে উঠি। উপাচার্য নতুন বছরের নতুন দিনে এ বিশ^বিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে এবং বিশ্ব র‌্যাংকিংএ নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে প্রত্যেকে দ্বায়িত্ব স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্পাদনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

দিনব্যাপি কর্মসূচির অংশ হিসেবে চবি মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা, বুদ্ধিজীবী চত্বরে কাবাডি খেলা ও চাকসু প্রাঙ্গণে বউচি খেলা। বিকেলে জারুলতলার বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ব্যান্ডদল ‘বে অব বেঙ্গল’-এর মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশনা। সবশেষে মাননীয় উপাচার্য গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী আয়োজন সমূহে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, চবি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, অনুষদ সমূহের ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, কলেজ পরিদর্শক, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি এবং ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, অফিস প্রধানবৃন্দ, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে হাল্ট প্রাইজ ২০২৫ রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম।

হাল্ট প্রাইজ ২০২৫/২৬ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে নিবন্ধন বুথ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং ক্লাস প্রমোশন চালু করা হয়েছে। এ বছর প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত ও দলীয়—উভয়ভাবেই অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত নিবন্ধন ১০ ডিসেম্বর (বুধবার) এবং দলীয় নিবন্ধন ১৫ ডিসেম্বর (সোমবার) তারিখে সমাপ্ত হবে।

এবারের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ থিম “আনলিমিটেড”-যা শিক্ষার্থীদের জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করার সুযোগ করে দিচ্ছে।এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা দক্ষতার মাধ্যমে দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, অসমতা এবং শিক্ষার মতো বৈশ্বিক সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করতে পারবেন। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্ল্যাটফর্ম যেখানে সীমাহীন চ্যালেঞ্জের ভিত্তিতে তাদের ধারণাগুলোকে বাস্তবায়নে রূপ দেওয়া যাবে।

এ বছরের ক্যাম্পাস ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ অনিক, চিফ অব স্টাফ কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম মুনাজ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট কারিন সাফফানা—তাদের নেতৃত্বে প্রতিযোগিতাটি সফলভাবে আয়োজনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রতিযোগিতায় ২–৪ সদস্যের দল অংশ নিতে পারবে এবং সকল অংশগ্রহণকারীর বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হবে। প্রতিটি দলে অন্তত একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা বাধ্যতামূলক। দলের অন্যান্য সদস্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণ করতে পারবে।এছাড়া এ বছর দল না থাকলেও শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করতে পারবেন; পরবর্তীতে তাদের নিয়ে দল গঠন করা হবে।

রেজিস্ট্রেশন বুথ অথবা অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দলীয় অথবা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনে কোনো ফি নেই।দলীয় সদস্যরা যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আসুন না কেন, প্রতিযোগিতায় তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গভীর রাতে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমণিষা বাজারে বুধবার গভীর রাতে একদল দুর্ধর্ষ ডাকাত দল চার-পাঁচ টি স্বর্ণের দোকানে ও একটি বাড়িতে ডাকাতি করে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অষ্টমণিষা বাজারের শ্রী রতন কুমার কর্মকার, তপন কুমার কর্মকার, উত্তম কুমার কর্মকার, ইউসুফ আলী ও আত্তাব আলীর স্বর্ণের দোকানগুলোর তালা ভেঙে দুর্বৃত্ত ডাকাত দল প্রায় ৩০/৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে ডাকাত দল রতন কুমার কর্মকারের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে তার স্ত্রী ও ছেলে রঞ্জন কর্মকার কে মারধর করে আরও ১০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

শ্রী রঞ্জন কুমার কর্মকার বলেন,একটি ডাকাত দল বাজারে নেমে দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রথমেই বেঁধে ফেলেন।রতন কর্মকার বলেন, ‘ডাকাতেরা বাড়িতে ঢুকতেই আমি তিন তলায় উঠে প্রতিবেশীদের ফোন করি। কিন্তু কেউ আসেনি। পরে দীপকে ফোন করলেও বের হতে পারেনি, কারণ তার দরজার সামনে দুইজন অস্ত্রধারী দাঁড়িয়ে ছিল।’

তারপর প্রায় ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল প্রথমে স্বর্ণের দোকানগুলোতে হামলা চালায় এবং কিছুক্ষণ পরে তারা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা সব লুট করে। তার মা স্বর্ণের গহনা খুলে দিতে দেরি করলে তাকে অনেক মারধর করে। রঞ্জন কর্মকার বাধা দিলে তাকেও বেদম প্রহার করা হয়। দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের হাতে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র সহ সাপল,লোহার রড ছিলো বলে তারা জানান।

স্থানীয়রা আরও জানান,দুর্ধর্ষ ডাকাত দল স্পিডবোট যোগে গভীর রাতে বাজারে এসে স্বর্ণের দোকানগুলোতে ডাকাতি করে গুমানী নদীর ভাটির দিকে চলে যায়।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া সার্কেল) আবু বকর সিদ্দিক, পাবনা ডিবির ওসি রাশিদুল ইসলাম, ডিবির একটি টিম এবং ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কারা জড়িত, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

পাবনা ডিবি পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাজ। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে গ্রেপ্তার করা হবে।’অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে বিস্তারিত জানা যাবে।’

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ