আজঃ বুধবার ১৪ মে, ২০২৫

জাল ভিসা দিয়ে কুয়েত নিয়ে প্রতারণা, দিশেহারা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার 

দেবহাটা প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরায় জাল ভিসা দিয়ে বিদেশ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। এঘটনায় ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই ভিক্টিমের চাচা কালিগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের মৃত বাহার আলীর পুত্র নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আমলী-০২ নং আদালতে মামলা করে। এতে প্রধান আসামী করা হয় কালিগঞ্জ উপজেলার মহতপুর গ্রামের মৃত মমতাজ গাজীর ছেলে নজরুল ইসলামকে। একই মামলায় আসামী করা হয় নজরুল ইসলামের স্ত্রী হাফিজা খাতুন, ভাই মতিয়ার রহমানকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী (জয়াখালি) গ্রামের মৃত বাহার আলী গাজীর ছেলে রুহুল আমিন গাজী ইংরেজি ১৯৯৬ সালে কাজের জন্য কুয়েতে যায়। রুহুল আমিনের স্ত্রী দীর্ঘদিন যাবত ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। স্ত্রীর চিকিৎসায় উপার্জিত টাকা শেষ হওয়ায় রুহুল আমিন তার ছেলেকে কুয়েতে পাঠাতে বলেন। বিদেশ পাঠনোর জন্য মাধ্যমে হিসাবে কালিগঞ্জ উপজেলার মহৎপুর গ্রামের মৃত মমতাজ গাজীর পুত্র নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে তারা। বিদেশ পাঠাতে ভিসা, বিমানের টিকিট, ম্যানপাওয়ার সহ ২০নং ভিসা ২ বৎসরের আকামা সহকারে কুয়েতের ২৪’শ দিনার সমপরিমান বাংলাদেশী মূল্য ৬লক্ষ ৬০ হাজার টাকা গ্রহন করে যোগাযোগকারী নজরুল ইসলাম। পরে নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী হাফিজা খাতুন ও ভাই মতিয়ার রহমানকে নিয়ে ২০১৬ সালের  পহেলা ফেব্রুয়ারী তারিখে টাকা গ্রহন করে। সেই সাথে ঐ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে ভিক্টিমের (ওমর ফারুক) এর নামে ভিসা প্রদান করেন। ওমর ফারুক ভিসা নিয়ে কুয়েতে যাওয়ার পরে জানতে পারে তার ভিসা টি নকল। পরে তাকে কুয়েত জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এরপর সাজা শেষে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। পরে এঘটনায় ভিক্টিম ওমর ফারুক ২০২২ সালের ৭ মার্চ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে ভিক্টিমের পিতা ভিসা জালিয়াতি ও মানব পাচারকারী বাংলাদেশী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দূতাবাস কাউন্সিলর (শ্রম), কুয়েত এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবাসী কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল আমিন স্বাক্ষরিত এক পত্রে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের জেলা বিশেষ শাখায় নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়া ২২ মালের ৯ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসকের প্রবাসী কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার সজিব তালুকদারের পাঠানো পত্রে প্রতারকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। অপরদিকে কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান গত ২২ সালের মার্চ মাসের ২১ তারিখে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সেখানে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাল ভিসা প্রদানের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। তদন্তে আরো উল্লেখ করা হয় যে, নজরুল ইসলাম একজন চিহ্নিত দালাল। তিনি যাদেরকে বিদেশ পাঠিয়েছেন সবার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ক্ষতিপূরণ টাকা ফেরৎ না পেয়ে পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। আর তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে টাকা ফেরৎ সহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

যেখানে উম্মাহর দেহে যন্ত্রণা, সেখানে ফিলিস্তিন এক রক্তাক্ত হৃৎপিণ্ড।

“মুমিনগণ এক দেহের মতো—যদি দেহের এক অঙ্গ ব্যথিত হয়, গোটা শরীর তার ব্যথায় কাঁপে।” — (হাদীস, সহীহ মুসলিম।ফিলিস্তিন—পৃথিবীর মানচিত্রে ক্ষুদ্র এক ভূখণ্ড। অথচ ইতিহাসের সবচেয়ে ভারী অশ্রুগুচ্ছে নাম লিখিয়ে রেখেছে বহু শতাব্দী ধরে। গাজার ধূলোমলিন বাতাসে আজ আর বালুকণার ঘ্রাণ নেই, সেখানে শুধু বারুদের গন্ধ। আকাশে প্রজাপতির বদলে ড্রোন, শিশুর খেলনার স্থানে রকেটের ধ্বংসাবশেষ। ফিলিস্তিন আজ একটি জাতির নয়, বরং গোটা উম্মাহর হৃদয়ে গেঁথে থাকা এক দীর্ঘতর আর্তনাদ।

প্রতিদিন সূর্য ওঠে, কিন্তু গাজার মানুষ দেখে না আলো—দেখে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া স্বজনের হাত। প্রতিটি ভোর যেন এক নতুন শোকাবহ অধ্যায়। ঘুম ভাঙে বোমার শব্দে, আবার ঘুম পাড়ায় কান্নার চাপে। মৃত শিশুদের জন্য কাঁদে পৃথিবীর বিবেক, আর মুসলিম উম্মাহর মাঝে জন্ম নেয় এক প্রশ্ন—আমরা কী এখনো এক দেহ, নাকি শুধুই নামের উম্মাহ?

রাসূল (সা.) বলেছেন, “তোমরা যদি এক দেহের মতো না হও, তবে তোমাদের ঈমান অপূর্ণ।” কিন্তু আজ ফিলিস্তিন যখন পুড়ে যায়, আমরা দাঁড়িয়ে থাকি কেবল নীরব প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে। বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজস্ব স্বার্থের পাল্লায় ফিলিস্তিনকে মাপে। আর মুসলিম রাষ্ট্রগুলো—তারা হয়তো সম্মেলন ডাকে, বিবৃতি দেয়, দোয়া করে। কিন্তু ফিলিস্তিনের শিশুরা কি তাতে বাঁচে?

আমরা কি ফিলিস্তিনিদের জন্য শুধু আহারে ব্যস্ত, নাকি অন্তরে তাদের বেদনা বয়ে চলেছি? যদি তারা আমাদের ভাই হয়, তবে কেন আমাদের প্রতিবাদ এত মৃদু? কেন আমাদের জবান এত জড়তা পূর্ণ, কেন আমাদের হৃদয় এত নির্লিপ্ত?

এই কলাম কোনো সাময়িক রাজনীতি বা সংবাদ বিশ্লেষণ নয়—এ এক অভ্যন্তরীণ আত্মপ্রকাশ। এক লেখকের নয়, এক মুসলিমের হাহাকার। ফিলিস্তিনকে আজ দয়ায় নয়, দায়িত্বে দেখতে হবে। এই ভূমি আমাদের কেবল দুঃখ দেয় না—এ আমাদের ঈমানের আয়না। সেখানে দেখা যায়, আমরা কতটা মুসলিম, কতটা মানুষ।

গাজা যখন পোড়ে, তখন মক্কার বাতাসও কাঁদে।
জেরুজালেম যখন কাঁদে, তখন মদিনার মসজিদও শিউরে ওঠে।
কিন্তু আমরা কি কান পেতে শুনি সেই কান্না?

‘এক উম্মাহ, এক দেহ’—এই পবিত্র বাণী যেন আর কেবল হাদীসের পাতায় না থাকে।
এই বাণী হোক হৃদয়ের স্পন্দন। যেন ফিলিস্তিনের কান্না আমাদের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়,
জেগে তোলে আমাদের বিশ্বাস, উদ্দীপনা, প্রতিবাদ—আর সর্বোপরি, ভালোবাসা।

কারণ ফিলিস্তিন এখন শুধু নির্যাতনের নাম নয়, এ এক রক্তাক্ত হৃৎপিণ্ড, যা উম্মাহর বুকে প্রতিনিয়ত ধুকপুক করে।

ভারত ব্রিকস মুদ্রা প্রত্যাখ্যান করছে

ব্রিকস সদস্য ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখ করে একটি সাধারণ ব্রিকস মুদ্রার বিষয়ে সন্দিহান। ভারতে নেতৃস্থানীয় আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসা এবং যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে তারা মার্কিন ডলারকে অক্ষত রাখতে চায়। ভারতীয় ব্যবসাগুলি এখন একটি সাধারণ মুদ্রা গ্রহণে সতর্ক কারণ এটি বাণিজ্যের স্বাভাবিক প্রবাহকে ব্যাহত করার ঝুঁকি রাখে।এরই মধ্যে ২৩টি দেশ ২০২৫ সালে ব্রিক্স যোগ দিতে আগ্রহ দেখায়।

ব্রিকস জোটের ক্রমবর্ধমান কাঠামো বাণিজ্যের জন্য একটি নতুন সাধারণ মুদ্রা গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে তবে একটি সাধারণ মুদ্রার দিকে ধাক্কা দেয় সাধারণত চীন এবং রাশিয়া। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন যে একটি সাধারণ ব্রিকস মুদ্রা চীনকে শক্তি দেয় এবং এর অর্থনীতিকে প্রভাবশালী করে তোলে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ