আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

জাল ভিসা দিয়ে কুয়েত নিয়ে প্রতারণা, দিশেহারা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার 

দেবহাটা প্রতিনিধি:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সাতক্ষীরায় জাল ভিসা দিয়ে বিদেশ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। এঘটনায় ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই ভিক্টিমের চাচা কালিগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের মৃত বাহার আলীর পুত্র নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আমলী-০২ নং আদালতে মামলা করে। এতে প্রধান আসামী করা হয় কালিগঞ্জ উপজেলার মহতপুর গ্রামের মৃত মমতাজ গাজীর ছেলে নজরুল ইসলামকে। একই মামলায় আসামী করা হয় নজরুল ইসলামের স্ত্রী হাফিজা খাতুন, ভাই মতিয়ার রহমানকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী (জয়াখালি) গ্রামের মৃত বাহার আলী গাজীর ছেলে রুহুল আমিন গাজী ইংরেজি ১৯৯৬ সালে কাজের জন্য কুয়েতে যায়। রুহুল আমিনের স্ত্রী দীর্ঘদিন যাবত ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। স্ত্রীর চিকিৎসায় উপার্জিত টাকা শেষ হওয়ায় রুহুল আমিন তার ছেলেকে কুয়েতে পাঠাতে বলেন। বিদেশ পাঠনোর জন্য মাধ্যমে হিসাবে কালিগঞ্জ উপজেলার মহৎপুর গ্রামের মৃত মমতাজ গাজীর পুত্র নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে তারা। বিদেশ পাঠাতে ভিসা, বিমানের টিকিট, ম্যানপাওয়ার সহ ২০নং ভিসা ২ বৎসরের আকামা সহকারে কুয়েতের ২৪’শ দিনার সমপরিমান বাংলাদেশী মূল্য ৬লক্ষ ৬০ হাজার টাকা গ্রহন করে যোগাযোগকারী নজরুল ইসলাম। পরে নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী হাফিজা খাতুন ও ভাই মতিয়ার রহমানকে নিয়ে ২০১৬ সালের  পহেলা ফেব্রুয়ারী তারিখে টাকা গ্রহন করে। সেই সাথে ঐ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে ভিক্টিমের (ওমর ফারুক) এর নামে ভিসা প্রদান করেন। ওমর ফারুক ভিসা নিয়ে কুয়েতে যাওয়ার পরে জানতে পারে তার ভিসা টি নকল। পরে তাকে কুয়েত জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এরপর সাজা শেষে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। পরে এঘটনায় ভিক্টিম ওমর ফারুক ২০২২ সালের ৭ মার্চ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে ভিক্টিমের পিতা ভিসা জালিয়াতি ও মানব পাচারকারী বাংলাদেশী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দূতাবাস কাউন্সিলর (শ্রম), কুয়েত এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবাসী কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল আমিন স্বাক্ষরিত এক পত্রে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের জেলা বিশেষ শাখায় নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়া ২২ মালের ৯ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসকের প্রবাসী কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার সজিব তালুকদারের পাঠানো পত্রে প্রতারকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। অপরদিকে কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান গত ২২ সালের মার্চ মাসের ২১ তারিখে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সেখানে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাল ভিসা প্রদানের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। তদন্তে আরো উল্লেখ করা হয় যে, নজরুল ইসলাম একজন চিহ্নিত দালাল। তিনি যাদেরকে বিদেশ পাঠিয়েছেন সবার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ক্ষতিপূরণ টাকা ফেরৎ না পেয়ে পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। আর তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে টাকা ফেরৎ সহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে ইরান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ