আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চুয়েট পরিস্থিতি এবার ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক

 চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) বাসের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনায় এবার ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।
গতকাল শনিবার (দুপুরে সংগঠনের কার্যালয়ে জরুরি সভা শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক মনজুরুল আলম চৌধুরী।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা জানিয়েছেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলায় বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও অটোটেম্পু চলাচল বন্ধ থাকবে। দূরপাল্লার কোনো বাস এসব জেলা ও মহানগর থেকে ছাড়বে না এবং ঢুকতেও পারবে না। মালিক-শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঐক্য পরিষদে যুক্ত সংগঠন পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ওয়েবিল চেকার-লাইনম্যানসহ পরিবহন শ্রমিকদের র‌্যাবের গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘন্টার ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছিল। এর মধ্যে চুয়েটের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার দুপুরে ঐক্য পরিষদ জরুরি সভায় বসে।
সভা থেকে চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘন্টা পরিবহন ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এসব দাবির মধ্যে আছে, চুয়েটে দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে ৪-৫টি গাড়ি ভাংচুর ও তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনায় মামলা গ্রহণ, ক্ষতিপূরণ দেয়া, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার এবং চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীকে বহনকারী মোটর সাইকেলটি নিবন্ধিত ছিল কি না, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না, তিনজন একইসঙ্গে মোটর সাইকেলে ওঠার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না ও তারা মাদকাসক্ত ছিল কি না- এসব বিষয় তদন্তে কমিটি গঠন।
মৃণাল চৌধুরী বলেন, চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আমরাও সমব্যাথী। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। বাসচালকের লাইসেন্স ছিল কি না, গাড়ির ফিটনেস ছিল কি না, চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন কি না- এসব বিষয় ওই কমিটি তদন্ত করবে বলা হয়েছে। আমাদের দাবি হচ্ছে, অনুরূপভাবে মোটর সাইকেলের ক্ষেত্রেও তদন্ত করতে হবে।
এছাড়া দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ করে দশ লাখ টাকা এবং আহত শিক্ষার্থীকে তিন লাখ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাস মালিক সমিতি। এরপরও চুয়েটের শিক্ষার্থীরা চারদিন ধরে সড়ক অবরোধ করে গাড়ি চলাচল করতে দেয়নি। চার-পাঁচটি গাড়ি ভাংচুর করেছে। তিনটি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের এসব কর্মকাণ্ডও তো আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ মামলা করতে গেলেও থানা সেটা গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় ঐক্য পরিষদ বাধ্য হয়ে ৪৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করেছে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের জিয়ানগর এলাকায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস মোটর সাইকেলকে ধাক্কা দেয়। মোটর সাইকেলে আরোহী হিসেবে চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী ছিলেন। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই শান্ত সাহা (২০) ও তৌফিক হোসেন (২১) নামে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। শান্ত চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের ও তৌফিক ২১ ব্যাচের ছাত্র। একই ঘটনায় জাকারিয়া হিমু আরেকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। ঘটনার পর ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে ২৫ এপ্রিল রাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। আন্দোলনের মধ্যে ২৫ এপ্রিল বিকেলে চুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চুয়েটের পরীক্ষাসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে ছাত্রদের বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। এ ঘোষণার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বরে থাকা ও মূল ফটকে রাখা শাহ আমানত পরিবহনের দুটি বাসে তারা আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়া বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এসময় উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার প্রায় দু’ঘন্টা ওই ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠকে বসে প্রশাসন। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ও হলত্যাগের নির্দেশনা পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেয় চুয়েট প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের হলে থাকারও অনুমতি দেয়া হয়। এরপর রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে করে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয়। এর মধ্য দিয়ে অবরোধ তুলে নিলে চারদিন পর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ২৬ এপ্রিল জরুরি সভায় বসে চুয়েট সিন্ডিকেট। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ১১ মে পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাসহ চুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবেন।
সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ায় গতকাল শনিবার থেকে চুয়েটের নিজস্ব যানবাহন চলাচলও শুরু হয়েছে। এদিন দুপুর আড়াইটায় চুয়েটের স্বাধীনতা চত্বর থেকে শিক্ষার্থী বহনকারী একটি বাস শহরের উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে হাল্ট প্রাইজ ২০২৫ রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম।

হাল্ট প্রাইজ ২০২৫/২৬ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে নিবন্ধন বুথ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং ক্লাস প্রমোশন চালু করা হয়েছে। এ বছর প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত ও দলীয়—উভয়ভাবেই অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত নিবন্ধন ১০ ডিসেম্বর (বুধবার) এবং দলীয় নিবন্ধন ১৫ ডিসেম্বর (সোমবার) তারিখে সমাপ্ত হবে।

এবারের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ থিম “আনলিমিটেড”-যা শিক্ষার্থীদের জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করার সুযোগ করে দিচ্ছে।এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা দক্ষতার মাধ্যমে দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, অসমতা এবং শিক্ষার মতো বৈশ্বিক সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করতে পারবেন। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্ল্যাটফর্ম যেখানে সীমাহীন চ্যালেঞ্জের ভিত্তিতে তাদের ধারণাগুলোকে বাস্তবায়নে রূপ দেওয়া যাবে।

এ বছরের ক্যাম্পাস ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ অনিক, চিফ অব স্টাফ কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম মুনাজ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট কারিন সাফফানা—তাদের নেতৃত্বে প্রতিযোগিতাটি সফলভাবে আয়োজনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রতিযোগিতায় ২–৪ সদস্যের দল অংশ নিতে পারবে এবং সকল অংশগ্রহণকারীর বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হবে। প্রতিটি দলে অন্তত একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা বাধ্যতামূলক। দলের অন্যান্য সদস্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণ করতে পারবে।এছাড়া এ বছর দল না থাকলেও শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করতে পারবেন; পরবর্তীতে তাদের নিয়ে দল গঠন করা হবে।

রেজিস্ট্রেশন বুথ অথবা অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দলীয় অথবা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনে কোনো ফি নেই।দলীয় সদস্যরা যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আসুন না কেন, প্রতিযোগিতায় তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গভীর রাতে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমণিষা বাজারে বুধবার গভীর রাতে একদল দুর্ধর্ষ ডাকাত দল চার-পাঁচ টি স্বর্ণের দোকানে ও একটি বাড়িতে ডাকাতি করে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অষ্টমণিষা বাজারের শ্রী রতন কুমার কর্মকার, তপন কুমার কর্মকার, উত্তম কুমার কর্মকার, ইউসুফ আলী ও আত্তাব আলীর স্বর্ণের দোকানগুলোর তালা ভেঙে দুর্বৃত্ত ডাকাত দল প্রায় ৩০/৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে ডাকাত দল রতন কুমার কর্মকারের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে তার স্ত্রী ও ছেলে রঞ্জন কর্মকার কে মারধর করে আরও ১০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

শ্রী রঞ্জন কুমার কর্মকার বলেন,একটি ডাকাত দল বাজারে নেমে দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রথমেই বেঁধে ফেলেন।রতন কর্মকার বলেন, ‘ডাকাতেরা বাড়িতে ঢুকতেই আমি তিন তলায় উঠে প্রতিবেশীদের ফোন করি। কিন্তু কেউ আসেনি। পরে দীপকে ফোন করলেও বের হতে পারেনি, কারণ তার দরজার সামনে দুইজন অস্ত্রধারী দাঁড়িয়ে ছিল।’

তারপর প্রায় ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল প্রথমে স্বর্ণের দোকানগুলোতে হামলা চালায় এবং কিছুক্ষণ পরে তারা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা সব লুট করে। তার মা স্বর্ণের গহনা খুলে দিতে দেরি করলে তাকে অনেক মারধর করে। রঞ্জন কর্মকার বাধা দিলে তাকেও বেদম প্রহার করা হয়। দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের হাতে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র সহ সাপল,লোহার রড ছিলো বলে তারা জানান।

স্থানীয়রা আরও জানান,দুর্ধর্ষ ডাকাত দল স্পিডবোট যোগে গভীর রাতে বাজারে এসে স্বর্ণের দোকানগুলোতে ডাকাতি করে গুমানী নদীর ভাটির দিকে চলে যায়।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া সার্কেল) আবু বকর সিদ্দিক, পাবনা ডিবির ওসি রাশিদুল ইসলাম, ডিবির একটি টিম এবং ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কারা জড়িত, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

পাবনা ডিবি পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাজ। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে গ্রেপ্তার করা হবে।’অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে বিস্তারিত জানা যাবে।’

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ