আজঃ শুক্রবার ৭ নভেম্বর, ২০২৫

হিটস্ট্রোকে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ হিটস্ট্রোকে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

চট্টগ্রামে গরমের তীব্রতায় নানা অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। গরমের ধকল থেকে বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। চট্টগ্রাম শিশু হাসপাতালে ফাঁকা নেই কোনো বেড। অন্যান্য হাসপাতালেও বেড়েছে রোগীর চাপ। মোবাইল অ্যাপে তাপমাত্রা গত ১ সাপ্তাহে ৩৭ থেকে ৩৮ ডিগ্রি দেখালেও তাপমাত্রা অনুভূতি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত।এইদিকে তিব্র গরমে স্কুল কলেজে চলছে শ্রেণী কার্যক্রম। সহনীয় মাত্রায় না কমলে স্কুল বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন অভিভাবকদের এক অংশ।

সিভিল সার্জন ডা.মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, এখন যে তাপপ্রবাহ এই সময়ে ১ থেকে ৭ বছরের শিশুদের কোনোভাবেই ঘরের বাইরে বের হতে দেওয়া ঠিক হবে না। সেইসঙ্গে, সব বয়সিদের জন্যই দিনের বেলায় বাইরে বের হতে হলে শেড (ছায়া) ব্যবহার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা পরামর্শ দেই তাপপ্রবাহের এই সময়ে বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ঘরের মধ্যে অবস্থান করতে পারলে ভালো। একইসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানিসহ তরল খাবার খেতে হবে।শারীরিক কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথাও বললেন তিনি।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত গরমে বিভিন্ন সময়ে ৮জন মারা গেছে। গত ১৯ এপ্রিল বোয়ালখালী উপজেলায় সাফা নামের ছয় মাস বয়সী এক কন্যা শিশুর মৃত্যু ঘটে। সে পশ্চিম শাকপুরা ২নম্বর ওয়ার্ড আনজিরমারটেক সৈয়দ আলমের নতুন বাড়ির মো. নিজাম উদ্দীনের মেয়ে। চিকিৎসকরা ধারণা করছেন সে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। একই দিন হিটস্ট্রোকে শাহজাদা ছালেহ আহমদ শাহ (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তিনি রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়া এলাকার হজরত আহমদ হাসানের ছেলে। ২২ এপ্রিল কর্নেলহাট শ্যামলী বাস কাউন্টারের সামনে হিটস্ট্রোকে শুকুর আলী নামের এক যুবক টেম্পোর মধ্যে মারা গেছেন। সে লক্ষ্মীপুর জেলার দালাল বাজারের হাজীবাড়ির মৃত মানিক মিস্ত্রির ছেলে। তিনি সীতাকুণ্ডে জলিলের সিডিএ এলাকার বুলু মেম্বারের ভাড়া ঘরে থাকতেন। এর আগের দিন
২১ এপ্রিল পটিয়া উপজেলার হাঈদগাঁও ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইব্রাহিম তালুকদারের বড় ছেলে জয়নুল আবেদীন দিদার (৫৮) হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন । একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সামশুল আলম (৭০) হিট স্ট্রোকে মারা যান। তিনি ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। এছাড়া ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামের আনোয়ারায় রোশমিয়া জেবিন (১৬) নামের এক স্কুলছাত্রীর হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা যায়। হিট স্ট্রোকে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারকে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। সে বটতলী এলাকার মনির আহমদ চেয়ারম্যান বাড়ির ফরিদ আহমেদের মেয়ে।২৬ এপ্রিল পটিয়ায় হিট স্ট্রোকে মোজাম্মেল হক (৭৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড মাঝের ঘাটার বাসিন্দা। অন্যদিকে ২৮ এপ্রিল সকালে মিরসরাইয়ে মঘাদিয়া ইউনিয়নে প্রচণ্ড গরমে মাথা ঘুরে পড়ে জাহাঙ্গীর আলম (৫৩) নামে এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন। জাহাঙ্গীর আলম মঘাদিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জাফরাবাদ গ্রামের কামাল চেয়ারম্যান বাড়ির দেলোয়ার হোসেনের পুত্র। এছাগা ২৮ এপ্রিল কালুরঘাট ফেরিতে মো. মোস্তাক আহমেদ কুতুবী আলকাদেরী নামে মাদ্রাসার এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বোয়ালখালীর খিতাপচর আজিজিয়া মাবুদিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক। চিকিৎসকদের ধারণা, হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

জামালপুরে অপহরণ মামলায় চারজনকে যাবাজ্জীবন

জামালপুরে অপহরণ মামলায় চারজনকে যাবাজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -১ এর বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ রায় প্রদান করেন। তারা হলেন, জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ভাংগুনী ডাংঙ্গা গ্রামের মুন্না@মোনাফ এর মজনু মিয়া(২৫), রান্ধনীগাছা গ্রামের মরহুম হাতেম আলী খন্দকারের ছেলে হানিফ খন্দকার (৫৯), মো: আবুল কাশেম এর ছেলে মো: মমিন মিয়া(৪০), ভাংগুনী ডাংঙ্গা গ্রামের মো: ইমান আলীর ছেলে জহুরুল ইসলাম (৩৭)।

রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -১ এর পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি)মো: ফজলুল হক সাংবাদিকদের জানান, ২০২২ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারী বিকাল সাড়ে পাচ টায় ভিকটিম স্বামীর বাড়ী থেকে বাবার বাড়ীতে আসার সময় জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর বাজারের পশ্চিম পার্শে থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা ভিকটিম মোছা: হাবিবা আক্তার চৈতিকে জোর পুর্বক অপহরণ করে নিয়ে গেলে ১১ ফেব্রুয়ারী ভিকটিমের বাবা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ২৭ এপ্রিল মজনু মিয়ার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ এর ৭ ধারায় মমিন মিয়া এবং একই আইনের ৭/৩০ ধারায় হানিফ খন্দকার,মমিন মিয়া, জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। তিনি আরো জানান, আমরা রাষ্ট্র পক্ষ ৪ জন স্বাক্ষী উপস্থাপন করেছি । প্রায় ৪ বছর আইনী লড়াই শেষে মামলায় আসামীরা দোষী প্রমানিত হওয়ায় আদালত ৪জনকেই যাবজ্জীবন এবং ৫০ হাজার করে টাকা জরিমানা করেছে। জরিমানার টাকা ভিকটিম পাবে।

চট্টগ্রামে প্রবাসীর ১৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট, আসামি গ্রেফতার

চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে ডাকাতি মামলার পলাতক আসামি মো. সাদ্দাম হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭। চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সাদ্দাম হোসেন ভোলার লালমোহন থানার দুলা মিয়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে।

র‌্যাব-৭’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন জানান, গত ২১ জুলাই সাড়ে ৮টায় দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ সামসুদ্দিন চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে এ কে খান বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে লিংক রোড় এলাকায় ডাকাতদল নগদ টাকাসহ ১৯ লাখ ৮২ হাজার ২০০ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি ৩/৪ জনকে আসামি করে হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে এ মামলার আসামি সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ