আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

জমে উঠছে ফটিকছড়িতে নবীন-প্রবীণের লড়াই

মাসুদুল ইসলাম মাসুদ ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম জেলা:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

 

আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যাচ্ছে ২য় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলায় ২ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করে যাচাই বাছাই এ মনোনয়ন নিশ্চিত হয়। এরা হলেন আওয়ামী ঘরনার দুই প্রভাবশালী নেতা ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  নাজিম উদ্দীন মুহুরী এবং উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য ও সাবেক উত্তর জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি বখতেয়ার সাঈদ ইরান।

সিনিয়র ও জুনিয়র একই ঘরনার দুই নেতার মধ্যেই হবে মূল ভোট যুদ্ধ।  এছাড়া পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়বেন মোট ৫ জন। এরা হলেন সাংবাদিক নেতা সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এড. সালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহিন, নাজিম উদ্দীন সিদ্দিকী, আনোয়ারুল হক, জসীম উদ্দীন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন লড়াই হবে  বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান জেবুন নাহার মুক্তা ও  ফটিকছড়ি মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন নপুরের মধ্যে। মোট প্রার্থী সংখ্যা ৯ জন। এবার ভোট আমেজ হবে অন্য রকম। ওপর মহলের সিদ্ধান্তের প্রভাব উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, চায়ের দোকানে,পাড়ার মোড়ে মোড়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।  রাজনীতিতে কার কখন কোথায় উত্থান হয় তা বোঝা বড়ই মুশকিল। দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তে  হয়ত কারো কপাল খুলে আবার কারো কপাল পুড়ে। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের সিদ্ধান্ত ছিল দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে। এতে যার রাজনীতির ওপর মহলে যত শক্ত  অবস্থান প্রতীক পাওয়া তার জন্য তত নিশ্চিত ছিল। যার হাত যত লম্বা ছিল তার জন্য নৌকা প্রতিক তত সহজ ছিল। অথবা অর্থের একটা প্রভাবও ছিল কিন্তু এইবার প্রতিক বিহীন নির্বাচন সব হিসাব নিকাশ উল্টে দিয়েছে।

 

এইত মাত্র ক’মাস আগে জাতীয় নির্বাচন গেল। উত্তাপ এখনো কমেনি। তার রেশ না কাটতেই শুরু হল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের পাওয়া না পাওয়ার অনেক হিসাব নিকাশ জমা রয়েছে নেতাদের মধ্যে। জাতীয় নির্বাচনেও ছিল এক ভিন্ন চিত্র। দলের সিদ্ধান্তে হয়েছেন একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী। সেই হিসাব মতে ফটিকছড়িতে ছিল একজন হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী।  উপজেলা চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ করে এম পি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন এক কালের রাজপথের ত্যাগী নেতা, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবু তৈয়ব একাই লড়াই করেছিলেন ফটিকছড়ি পুরো আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ,যুবলীগ সহ সমস্ত আম জনতার সাথে। ভোটের হিসাব নিকাশে জয় পরাজয়ের ভাগ্য মেনে নিয়ে তিনি পরাজিত প্রার্থী হিসেবে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। নির্বাচনের পরে আবু তৈয়ব কৌশলী পন্থা অবলম্বন করে চুপচাপ থাকেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার তরমুজ প্রতীকে ভোট পরেন ৩৫ হাজারের মত। পক্ষান্তরে দলীয় মনোনীত নৌকা প্রতিক নিয়ে রফিক কন্যা বিশাল ভোট ব্যবধানে জয়ী হয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়। বর্তমান এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি চট্টগ্রাম হতে সর্বপ্রথম নারী হিসেবে সরাসরি জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে সংসদে পা রাখেন। জাতীয় নির্বাচনের পর পর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন এম পির জন্য নিঃসন্দেহে একটি বাড়তি স্নায়ুযুদ্ধ। কারণ চেয়ারম্যান প্রার্থী সব আওয়ামী ঘরনার।  আবার দলীয় হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাচনে কোনো এম পি সরাসরি কাউকে সমর্থন বা কাজ করতে পারবেন না। সেই দিক হতে তিনি রয়েছেন কিছুটা চাপমুক্ত। তারপরও মানুষের জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।  লোকমুখে বিরাজমান মরহুম রফিকুল আনোয়ারের সৃষ্টি আজকের এই বখতিয়ার সাইদ  ইরান। রফিক পরিবারের সাথে রয়েছে ইরানের আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক। সুখে দুঃখে পাশে ছিলেন ইরান। সেই হিসাবে এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি কি সিদ্ধান্ত নিবে তার আগ্রহের শেষ নেই ভোটারের। পক্ষান্তরে নাজিম উদ্দীন মুহুরীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছে একটি শক্ত অবস্থান। দীর্ঘদিন রয়েছে ফটিকছড়ির মাঠে ময়দানে।  সেই সুযোগ তিনি কতটুকু কাজে লাগাতে পারেন তা ভোটাররা পর্যবেক্ষণ করছেন।
এখন ভোটার বা ভোট বিশ্লেষকের তথ্য মতে হিসাব নিকাশের মধ্যেখানে রয়েছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তৈয়ব। তথ্যমতে অনেকে বলেন জাতীয় নির্বাচনে পাওয়া আবু তৈয়ব সমর্থনে তরমুজ মার্কার ৩৫ হাজার ভোট যে দিকে ঝুঁকে হয়ত সেই দিকের পাল্লা কিছুটা ভারী বা এগিয়ে থাকবে। এছাড়াও আবু তৈয়বের রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। অনেকের ধারণা হয়ত আবু তৈয়বের নির্দেশ পেলে তার নেতা ও কর্মী বাহিনী গুলো সেই দিকেই কাজ করবে। তারপরও ভোটের রাজনীতি বড়ই জটিল ও রাজনীতির শেষ বলতে কিছুই নেই। উপজেলা নির্বাচন ঘিরে উপজেলা ভিত্তিক অনেক আওয়ামী লীগ নেতা তাদের শেষ হিসাব নিকাশ কষতে শুরু করেছেন। কেউ কারো অবস্থান হতে ছাড় দিতে নারাজ।  বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আগামীর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন সেই হিসাব শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে বখতিয়ার সাইদ ইরান রয়েছে হিসাবের বাইরে কারণ তার অবস্থান জেলা পর্যায়ে। তুলনামূলক বয়সে ছোট হিসেবে আগামীর ভবিষ্যৎ হয়ত আরো অনেক বাকি রয়েছে। সবকিছু চাপিয়ে ফটিকছড়ির উপজেলা জেলা নির্বাচনে রয়েছে এবার ভিন্নতা। গতবারের নির্বাচনে হয়ছে শিয়ানে শিয়ানে লড়াই।  আবু তৈয়ব ও নাজিম উদ্দীন মুহুরী ছিল সহযোদ্ধা। জয় পরাজয়ে তেমন হিসাব ছিলনা কারণ মুহুরীর দখলে ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এর পদবী। পক্ষান্তরে আবু তৈয়বের লড়াই টা ছিল অস্তিত্বের লড়াই। সেই লড়াইয়ে তিনি জয়লাভ করে ফটিকছড়িতে তার অবস্থান জানান দে কিন্তু এই বার দেখার পালা ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে কে জয়ী হয়ে জনপ্রিয়তার অবস্থান জানান দে। সেই অবস্থান জানার জন্য ফটিকছড়ি বাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২১ মে পর্যন্ত।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ