আজঃ সোমবার ১০ নভেম্বর, ২০২৫

ওসিকে পিটাইছি এমন মন্তব্য উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী; আছকির মিয়ার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজার:

 

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আছকির মিয়া বলেছেন, শ্রীমঙ্গলের সম্মান রক্ষার স্বার্থে আমি নির্বাচনে আসছি। আজ শ্রীমঙ্গলে কার কাছে যাবেন, কে জানে। পুলিশ যখন সুযোগ পায়, তখন মানুষের ওপর নির্যাতন করে। সামরিক আইনে আমি থানায় ঢুকেও ওসিরে পিটাইছি। আপনারা সবাই জানেন। এসব আপনাদের জানা আছে, এ কারণে তিনদিন হাজত খাটলেও নিরপরাধ প্রমাণিত হয়ে আসছি। আমরা চাই, সকল অপরাধমুক্ত সমাজ হোক। সমাজে কোনো অপরাধী না থাকুক, মানুষ শান্তিতে থাকুক।

গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হুগলিয়া বাজারে নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ভানুলাল রায়কে ইঙ্গিত করে তিনি এ কথা বলেন। তার বক্তব্যের পর উপজেলা জুড়ে এক ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। সাথে যোগ হয়েছে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ভিন্ন মাত্রার এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এতে নির্বাচনী মাঠে বেশ উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।

আছকির মিয়া বলেন, সরকারি বরাদ্দ আসে আপনাদের জন্য। তা যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয়। পিকনিকে নয়। এবারের পিকনিক হয়েছে সরকারি টাকায়। তখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। এখন একটা পিকনিক করুক, এখন তো আর ক্ষমতা নাই। সরকারি টাকাও নাই। কোটি টাকা সরকারের অপচয় হয়েছে। এই হিসাব সে ক্ষমতা থেকে যাক, তারপর আপনাদের সঙ্গে নিয়ে হিসাব বের করা হবে।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবরা অফিসে বসে অনেক হানাহানি করছে। তর্কবিতর্ক করেছে। ভূনবীরের চেয়ারম্যান, কালাপুরের চেয়ারম্যান দু’জন অনেক তর্কবিতর্ক করেছে। সরকারি টাকা আসলো আমাদের বরাদ্দ কোথায়? সরকারি টাকা ইউনিয়নে সঠিকভাবে বরাদ্দ না দিয়ে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিকে বরাদ্দ দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করেছেন। দালাল কেনার চেষ্টা করেছেন। আমাদের সাবধান হতে হবে। আমরা আমাদের সরকারি বরাদ্দের টাকা সঠিকভাবে যাতে ব্যবহার করতে পারি, কাজে লাগাইতে পারি এবং মানুষ ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারে সে জন্য নির্বাচনে প্রার্থী এবার হয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আছকির মিয়া এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তিনি এরশাদ জমানায় প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য। এর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

দ্বিতীয় দফায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৯শে মে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের আরও তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তারা হলেন- বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চা জনগোষ্ঠীর সন্তান প্রেম সাগর হাজরা ও শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হক।

এ প্রসঙ্গে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রার্থী ভানুলাল রায় বলেন, উনি এসব বিভ্রান্তিকর মিথ্যা ও বানোয়াট কাল্পনিক তথ্যের ওপর বক্তব্য দিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত আছেন। পুলিশ প্রশাসনের একজন কর্মকর্তাকে থানায় ঢুকে তিনি মেরেছেন, এ ধরনের বক্তব্য রেখে নিজেকে কি জাহির করতে চেয়েছেন? যা তার অতীত রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস পর্যালোচনা করে শ্রীমঙ্গলবাসী জানতে পারবেন। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হোক এমন বক্তব্য তিনি সব জায়গায় রাখছেন। যাতে সংখ্যালঘু ভোটারগণ শঙ্কিত হয়ে সেন্টারে না আসেন। ভুনবীরে এক সংখ্যালঘু নারীকে নানাভাবে হুমকি ধামকি প্রদানের বিষয়ে থানায় জিডিও করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রায়পুরায় ১০০০ ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

নরসিংদীর রায়পুরায় অভিযানে ১ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মাহমুদাবাদ লিজা জর্দা কোম্পানির সামনে থেকে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জ এলাকার ওবায়েদ উল্লাহর ছেলে সৌরভ মিয়াকে (২৬) ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, আটক আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মাদক, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

আওয়ামী লীগের এমপিরা লুটেপুটে খেয়েছে,মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেনি-আশরাফ উদ্দিন বকুল।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক ও আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেছেন, আওয়ামীলীগ যা করেছে আমরা তার বিপরীত করবো। তারা চরাঞ্চলে ঝগড়া লাগিয়েছে, বিভিন্ন ভাবে টাকা পয়সা নিয়েছে, তারা যেসকল অপকর্ম করেছে আমরা সেটা করবো না। চর আড়ালিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আশরাফ উদ্দিন বকুল আরও বলেন, ১৭ বছরের নিপিড়ন নির্যাতনের পরে সুযোগ এসেছে আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মা বোনদের সাথে নিয়ে নির্বাচনের দিন ধানের শীষকে বিজয়ী করার। আওয়ামীলীগের এমপিরা সাতবার নির্বাচিত হয়েও লুটেপুটে খেয়েছে কিন্তু মানুষের ভাগ্য বা রাস্তার কোনো উন্নয়ন করেনি এমনকি এলাকায় কোনো শিল্প কারখানা করেনি। এসময় তিনি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখার জন্য আহ্বান জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান সরকার, চর আড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদা জামান, রায়পুরা পৌর বিএনপি সভাপতি ইদ্রিস আলী মুন্সি, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পলাশ, চর আড়ালিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী মেম্বার, সিনিয়র সহ সম্পাদক কেবল সরকার সহ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ