
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আছকির মিয়া বলেছেন, শ্রীমঙ্গলের সম্মান রক্ষার স্বার্থে আমি নির্বাচনে আসছি। আজ শ্রীমঙ্গলে কার কাছে যাবেন, কে জানে। পুলিশ যখন সুযোগ পায়, তখন মানুষের ওপর নির্যাতন করে। সামরিক আইনে আমি থানায় ঢুকেও ওসিরে পিটাইছি। আপনারা সবাই জানেন। এসব আপনাদের জানা আছে, এ কারণে তিনদিন হাজত খাটলেও নিরপরাধ প্রমাণিত হয়ে আসছি। আমরা চাই, সকল অপরাধমুক্ত সমাজ হোক। সমাজে কোনো অপরাধী না থাকুক, মানুষ শান্তিতে থাকুক।

গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হুগলিয়া বাজারে নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ভানুলাল রায়কে ইঙ্গিত করে তিনি এ কথা বলেন। তার বক্তব্যের পর উপজেলা জুড়ে এক ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। সাথে যোগ হয়েছে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ভিন্ন মাত্রার এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এতে নির্বাচনী মাঠে বেশ উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।
আছকির মিয়া বলেন, সরকারি বরাদ্দ আসে আপনাদের জন্য। তা যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয়। পিকনিকে নয়। এবারের পিকনিক হয়েছে সরকারি টাকায়। তখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। এখন একটা পিকনিক করুক, এখন তো আর ক্ষমতা নাই। সরকারি টাকাও নাই। কোটি টাকা সরকারের অপচয় হয়েছে। এই হিসাব সে ক্ষমতা থেকে যাক, তারপর আপনাদের সঙ্গে নিয়ে হিসাব বের করা হবে।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবরা অফিসে বসে অনেক হানাহানি করছে। তর্কবিতর্ক করেছে। ভূনবীরের চেয়ারম্যান, কালাপুরের চেয়ারম্যান দু’জন অনেক তর্কবিতর্ক করেছে। সরকারি টাকা আসলো আমাদের বরাদ্দ কোথায়? সরকারি টাকা ইউনিয়নে সঠিকভাবে বরাদ্দ না দিয়ে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিকে বরাদ্দ দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করেছেন। দালাল কেনার চেষ্টা করেছেন। আমাদের সাবধান হতে হবে। আমরা আমাদের সরকারি বরাদ্দের টাকা সঠিকভাবে যাতে ব্যবহার করতে পারি, কাজে লাগাইতে পারি এবং মানুষ ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারে সে জন্য নির্বাচনে প্রার্থী এবার হয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আছকির মিয়া এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তিনি এরশাদ জমানায় প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য। এর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

দ্বিতীয় দফায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৯শে মে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের আরও তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তারা হলেন- বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চা জনগোষ্ঠীর সন্তান প্রেম সাগর হাজরা ও শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হক।
এ প্রসঙ্গে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রার্থী ভানুলাল রায় বলেন, উনি এসব বিভ্রান্তিকর মিথ্যা ও বানোয়াট কাল্পনিক তথ্যের ওপর বক্তব্য দিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত আছেন। পুলিশ প্রশাসনের একজন কর্মকর্তাকে থানায় ঢুকে তিনি মেরেছেন, এ ধরনের বক্তব্য রেখে নিজেকে কি জাহির করতে চেয়েছেন? যা তার অতীত রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস পর্যালোচনা করে শ্রীমঙ্গলবাসী জানতে পারবেন। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হোক এমন বক্তব্য তিনি সব জায়গায় রাখছেন। যাতে সংখ্যালঘু ভোটারগণ শঙ্কিত হয়ে সেন্টারে না আসেন। ভুনবীরে এক সংখ্যালঘু নারীকে নানাভাবে হুমকি ধামকি প্রদানের বিষয়ে থানায় জিডিও করা হয়েছে।