আজঃ সোমবার ১০ নভেম্বর, ২০২৫

ডিমলায় ভূট্রা মাড়াই কলের চাকা ভেঙে দুই সন্তানের জননীর মৃত্যু।

আনোয়ার হোসেন ডিমলা নিলফামারী:

নিলফামারী:

 নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ভুট্টা মাড়াই করা মেশিনের ওয়েট চাকা ভেঙ্গে নাসিমা বেগম (২৫) নামের দুই সন্তানের জননীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১০ মে) বিকাল চারটার দিকে উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের নাউতারা পূর্বপাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নাসিমা বেগম নাউতারা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের লিটন মিয়ার স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার নিহতের বাড়িতে ক্ষেতের ভুট্টা মাড়াই করার জন্য ভাড়ায় ভুট্টা মাড়াই মেশিন চলছিল। ভুট্টা মাড়াই চলা অবস্থায় হঠাৎ ওয়েট চাকা ভেঙ্গে শয়ন ঘরে প্রবেশ করে। দুই সন্তানসহ বিছানায় শুয়ে থাকা নিহত নাসিমা বেগমের মাথায় আঘাত লাগে। মুহূর্তের মধ্যে মাথা ফেঁটে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তার  মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের বাড়িতে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবাশীষ কুমার রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীর কৃষক জামালের লাখ টাকার বেগুন চাষের স্বপ্ন

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে আগাম সবজি চাষ করে দ্বিগুণ লাভের মুখ দেখছেন কৃষকেরা। বোয়ালখালী ১০ নং আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক মো. জামাল উদ্দিন এ বছর ২০ শতক উঁচু জমিতে আগাম বেগুন চাষ করে লাখ টাকার আয়ের স্বপ্ন দেখছেন।

চলতি বছরের আগস্টের শুরুতে বেগুন চারা রোপণ করেন জামাল। দুই মাসের মাথায় ক্ষেত থেকে বেগুন বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে কেজি প্রতি ৭০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করে ইতিমধ্যে প্রায় ১২ হাজার টাকা আয় করেছেন।

জামাল জানান, ২০ শতক জমিতে বেগুন চাষে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ছয় মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। সপ্তাহে দুই দিন ফলন সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করছেন।

তিনি আরও বলেন, “ক্ষেতে নিয়মিত পোকা দমন, রোগবালাই নাশক ও সার প্রয়োগ করতে হয়। শুরুতে কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন দাম কমে ৭০ থেকে ৫০ টাকায় নেমে এসেছে। তবে রমজান মাসে দাম আবারও বাড়বে বলে আশা করছি।

প্রতিবছরই আগাম বেগুনসহ বিভিন্ন শাকসবজির চাষ করেন এই কৃষক। বেগুনের পাশাপাশি আগাম শিমের চাষ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে শিমের মাচা ফুলে ভরে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ফলন আসবে। এ ছাড়া তিনি ৬০ শতক জমিতে সরিষা চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সরকারি প্রণোদনা পেলে সরিষার আবাদ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তার।

জামাল বলেন, “আমাদের এখানের সবজি শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, দূরদূরান্তেও যায়। যদি সরকার সহযোগিতা ও অনুদান দেয়, তাহলে আমরা আরও ভালোভাবে চাষ করতে পারব।

বোয়ালখালী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বোয়ালখালীতে প্রায় ১০ একর জমিতে আগাম বেগুনের চাষ হয়েছে। এছাড়া ৮ একর জমিতে ফুলকপি, শিম, লাউ, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা জাতের সবজির আবাদ চলছে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শিবু কান্তি নাথ বলেন, “উপজেলার করলডেঙ্গা, আমুচিয়া, শ্রীপুর খরণদ্বীপ ও সারোয়াতলী এলাকায় আগাম সবজি চাষ হয়। আগাম উৎপাদন করলে কৃষকেরা বাজারে ভালো দাম পেয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন।

নেত্রকোণায় ব্রি ধান১১০-এর বাম্পার ফলন

নেত্রকোণার কলমান্দায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত ধানের নতুন জাত ব্রি ধান১১০-এর শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (০১ নভেম্বর ২০২৫) সকালে নতুন ০৬ টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন (এলএসটিডি) প্রকল্পের অর্থায়নে ও ব্রি, আঞ্চলিক কার্যালয়, নেত্রকোণার আয়োজনে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের কেবলপুর গ্রামে কৃষক মোখশেদ আলীর আঙিনায় উক্ত মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রি, নেত্রকোণার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান মোঃ খালিদ হাসান তারেক-এর সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের প্রণয়ণকারী ও পরিচালক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন। সভার সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, নেত্রকোণার উপপরিচালক মোঃ আমিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম, এলএসটিডি প্রকল্পের বিজ্ঞানী মোঃ খালিদ হাসান সৌরভ, মোঃ রবিন ইসলাম সহ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভুঁইয়া প্রমুখ। এছাড়াও ব্রি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয় শতাধিক কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে উপস্থিত অতিথি ও কৃষক-কৃষাণীদের নিয়ে শস্য কর্তন অনুষ্ঠিত হয়। পরে তা মাড়াই করে উপস্থিতির সামনে পরিমাপ করে বিঘাপ্রতি ২২-২২.৫ মণ ফলন পাওয়া যায়। ফলনে ব্যাপক উচ্ছাস প্রকাশ করেন কৃষকগণ।

উল্লেখ্য, ব্রি ধান১১০ ও ব্রি ধান৫১ আকস্মিক বন্যা সহিষ্ণু জাত। উক্ত অঞ্চল সীমান্তবর্তী হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে আকস্মিক বন্যায় কৃষকগণ যখন নতুন জাতের প্রত্যাশায় ছিলেন, তখন ব্রি, নেত্রকোণার প্রধান মোঃ খালিদ হাসান তারেক এই অঞ্চলে বন্যা সহিষ্ণু জাতসমূহের প্রাযোগিক পরীক্ষণ স্থাপন করেন। মূলত দ্বিফসলি উক্ত ফসলের মাঠকে ত্রিফসলিতে রুপান্তর করতে স্বল্পমেয়য়াদি িএ জাত স্থাপন করেন তিনি। পরে স্বল্প মেয়াদি সরিষা চাষের পর পুণরায় বোরো ধান রোপণে উপযোগী করতেই ব্রি, নেত্রকোণার এ প্রয়াস।
উপকারভোগী কৃষক মোখশেদ জানিয়েছেন, আমি ধান গবেষণার প্রতি কৃতজ্ঞ। বন্যায় আমার জমি ১০ দিন ডুবে থাকার পরও কাঠা প্রতি (৮ শতাংশ) ৫.৫ মণ ফলন পেয়েছি, যা বোরো মৌসুমেও সাধারণত পাওয়া যায়না। আমি উক্ত জমির সকল ধান বীজ ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করব। স্থানীয় কৃষকরা যাতে আর আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য বীজ তাদেরকে সরবরাহ করব।

বিজ্ঞানী ড. আনোয়ার হোসেন জানান, এলএসটিডি প্রকল্পের উদ্দেশ্যই হলো স্থানীয় আবহাওয়া, মাটির ধরণ ও জলবায়ুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তা মাঠ পর্যায়ে এর প্রচলন করা। এরই ধারাবাহিকতায় এবারই প্রথম আমন মৌসুমে কলমান্দার মতো সীমান্ত অঞ্চলে এমন নতুন একটি জাতের প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছে। কৃষকের সাফল্যে আমরা বিজ্ঞানীরাও আনন্দিত।
পরে বিকেলে প্রকল্প অফিস পরিদর্শন শেষে জেলা শহরের ছোটগাড়ায় ব্রি ধান৮৭ জাতের একটি মাঠ দিবস ও শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেন পিডি ড. আনোয়ার হোসেন। কার্যালয়ের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি এবং এ ধারা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ