আজঃ মঙ্গলবার ২০ মে, ২০২৫

কালুরঘাট সেতুতে গাড়ি চলতে পারে জুন-জুলাইয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জুন বা জুলাইয়ে কালুরঘাট সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে। গত সপ্তাহে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর তাণ্ডবে কালুরঘাট সেতুর ৯ ও ১০ নম্বর স্প্যানে কর্ণফুলী নদীতে নোঙর করা একটি লাইটার জাহাজ বেপোরোয়া গতিতে ধাক্কা দেয়। এতে সেতুর আন্ডার স্ল্যাং গার্ডার, ওয়াকওয়ে ও রেলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা সারাতে আরো মাস খানেক সময় লাগবে। সব মিলিয়ে পুরো সংস্কারকাজ শেষ করে গাড়ি চলাচল শুরু করতে দুই মাস লেগে যেতে পারে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, কোন দিন থেকে গাড়ি চলবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, জুন-জুলাই থেকে গাড়ি চলতে পারে। তবে এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য (চট্টগ্রাম-৮) আবদুচ ছালাম বলেন, আমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কথা হয়েছে। শিগগিরই সংস্কারকাজ শেষ হবে। কোরবানির ঈদের আগেই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরুর আগে বড় মাথাব্যথার কারণ ছিল শতবর্ষী জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু। ২০২৩ সালের ১ আগস্ট থেকে সেতুর ওপর যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। শুরুতে তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে ৫ নভেম্বর কক্সবাজারের পথে ট্রেন চলাচল শুরু করে দেওয়া হয়। এরপর দফায় দফায় ঘোষণা দিয়েও সেতুটি যানচলাচলের উপযোগী করে তুলতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এটি নিয়ে খুব একটা ‘মাথাব্যথা’ দেখা যাচ্ছে না সংস্থাটির কর্তাব্যক্তিদের।
সূত্রে জানা গেছে, কালুরঘাট সেতুর বিকল্প হিসেবে বর্তমানে দেওয়া হয়েছে তিনটি ফেরি। এর মধ্যে একটি বিকল। বাকি দুটির মধ্যে প্রায় সময় অচল হয়ে পড়ে একটি। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় দুপারের চালক-যাত্রীদের। এপার থেকে ওপারে যেতে যেমন সময় বেশি লাগে, ঠিক তেমনি রোদ বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ২০১০ সালে তৃতীয় শাহ আমানত সেতু উদ্বোধনের আগ পর্যন্ত কালুরঘাট সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচলের কারণে সেতুটি আরও নাজুক হয়ে পড়ে। ২০০১ সালে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পর ২০০৪ ও ২০১২ সালে দুদফা সেতু বন্ধ রেখে সংস্কার করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। সেই সময়ও অন্যান্য যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি চালু করা হয়েছিল। ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় ৭০০ গজ দীর্ঘ কালুরঘাট রেল সেতু। ১৯৫৮ সালে এ সেতু সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। ১৯৯০ এর দশকে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে ট্রেন চলাচল সীমিত হয়ে পড়লে কালুরঘাট সেতুতে যান চলাচলে চাপ বাড়ে। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু ভেঙে গেলে কালুরঘাট সেতু হয়ে পড়ে বন্দরনগরীর সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ছয় উপজেলা ও কক্সবাজার-বান্দরবান জেলার যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম।
এ প্রসঙ্গে ভোক্তাদের জাতীয় সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সময়ক্ষেপণ করা মানে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেওয়া। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা উচিত। তারা যদি এভাবে কাজের সময় বাড়াতেই থাকে; তাহলে মানুষের দুর্ভোগের পাল্লাও বাড়বে। এছাড়া সময় যেভাবে বাড়বে তেমনি খরচও বাড়বে। এ প্রকল্পের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা যদি সঠিক সময়ে কাজ শেষ না করেন; তাহলে জনগণের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি রাষ্ট্রের-সরকারেরও লোকসান হচ্ছে। কেননা, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়া মানে খরচ বেড়ে যাওয়া।
সেতুর সংস্কারে জোড়াতালির কাজেও ঠিকমতো যোগান দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কালুরঘাট সেতুর দাবিতে আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, সেতু নির্মাণে যেমন দীর্ঘসূত্রতা, সংস্কার কাজেও ঠিক তেমনি দীর্ঘসূত্রতা।
বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুল মোমিন বলেন, দিনের পর দিন কাজ পেছাচ্ছে। এতে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে। বিকল্প হিসেবে যে ফেরি দেওয়া হয়েছে তাতেও কম ভোগান্তি নেই। প্রাণহানিসহ দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভোলা- বরিশাল সেতু দ্রুত বাস্তবায়নসহ ৮ দাবি নিয়ে মানববন্ধন

চট্টগ্রামস্থ ভোলাবাসীর সর্ব ঐক্য মানববন্ধন সোমবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা জেলা সমিতি-চট্টগ্রাম এর সহযোগিতায় মানববনআধন থেকে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

দাবিগুলো হলো, ভোলা-বরিশাল সেতুর কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন, চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল ভোলাবাসীর সুবিধার্থে ইলিশা-মতিরহাট ফেরী ঘাটের কাজ বাস্তবায়ন, ভোলার প্রত্যেক ঘরে ঘরে গ্যাস লাইন দ্বারা ভোলায় উত্তোলিত গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় ভোলার চতুর্দিকে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ,

বিদ্যমান জরাজীর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারি মেডিকেল কলেজ ও উন্নতমানের হাসপাতাল স্থাপন, পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারি উদ্যোগ, গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কলকারখানা স্থাপন, চরাঞ্চলের উন্নয়নে গবেষণা ভিত্তিক উদ্যোগ।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামস্থ ভোলাবাসির সর্ব ঐক্য মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক লায়ন আতিকুল্লাহ বাহার। যুগ্ম আহবায়ক মো: ফিরোজ চৌধুরীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক কিরন শর্মা, সদস্যসচিব- মাহবুবুর রহমান সেলিম, যুগ্ম সচিব আলী আজগর, সদস্য (অর্থ) কাঞ্চন মাঝি,সদস্য (মিডিয়া) নুরুন্নবী শাওনসহ ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। মানবন্ধনে ভোলা জেলা সমিতি-চট্টগ্রাম সহ ভোলার ২৫ টি পেশাজীবী সংগঠন অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন -অন্তবর্তী সরকার ভোলা – বরিশাল সেতু আগামী জানুয়ারি ২০২৬ উদ্বোধন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এজন্য একনেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন দেয়ার জন্য মানব বন্ধন
থেকে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

জেলা ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাস খনি রয়েছে। এখানকার গ্যাস সম্পদ রয়েছে ব্যবহারের জন্য জনপদের মানুষ দাবিদার।

শিবগঞ্জে খুনের আসামীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রকাশ্য দিবালোকে গোলাম আজম হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শিবগঞ্জ সরকারি মডেল হাই স্কুলের সামনে ৬নং ওয়ার্ডবাসীর ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

গোলাম আজমকে হত্যার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও আসামিদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ১৮ রমজান (১৯ মার্চ) বিকেলে কুখ্যাত সন্ত্রাসী মো. আলমগীর ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা চালায় গোলাম আজমের ওপর। পরিবারের সামনেই তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাকে উদ্বার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ২২ মার্চ রাতে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জামায়াত কর্মী গোলাম আজম। পরদিন তার বাবা আব্দুল খালেক শিবগঞ্জ থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ঘটনার এক মাস ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও একজন আসামিও আটক করেনি পুলিশ।

বক্তারা আরোও জানান, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। উল্টো আসামিরা এখনও নিহতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এনিয়ে মামলা করে উল্টো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পরিবারটি। মানববন্ধনে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসামি আটক না হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

গোলাম আযমের বোন খালেদা বেগম জানান, এপর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেফতার হলো না, কি করছে পুলিশ? এখনও আমাদের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা শুধুমাত্র ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। খুনিদের ফাঁসি ছাড়া আমরা আর কিছুই চাইনা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্কার জেলা শাখা সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মোয়াজ্জেম হোসেন মেহেদী, শিবগঞ্জ পৌর শাখার সভাপতি এসএম মহিউদ্দিন, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আসলাম-উদ-দৌলা, নিহত জামায়াত কর্মী গোলাম আজমের বাবা আব্দুল খালেক, মা রহিসা বেগম, বোন খালেদা বেগম, স্ত্রী হালেমা খাতুন, স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াহেদ আলীসহ এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, গোলাম আজম হত্যা মামলার আসামিদের ধরতে আমরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ