আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে  যুবলীগের বর্ধিত সভায় মন্ত্রীর এপিএসে ছবি থাকায়  সভায় হট্টগোল, একাংশের বয়কট

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম 

′″চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের বর্ধিত সভার ব্যানারে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের এপিএস মোহাম্মদ রিদুওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েমের ছবি থাকায় হট্টগোল সৃষ্টি ও নেতারাও প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়েছেন। এ নিয়ে যুবলীগের একাংশ নেতাকর্মীরা হঠাৎ কিছু বুঝা উঠার আগেই বর্ধিত সভা বয়কট করে কনভেনশন হল ত্যাগ করেন।গতকাল রবিবার (১২ মে) রাত ৯ টায় শুরু হওয়া এ বর্ধিত সভা চলাকালে উপজেলার চরলক্ষ্যার একটি  কনভেনশন হলে বয়কটের ঘটনাটি ঘটে। কিছু নেতা সভা বয়কট করলেও রাত সাড়ে ১২ টায় এ সভা শেষ হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন ও অন্যান্য নেতারা। এসব বিষয় জানতে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা মাহবুব বর্ধিত সভায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লে কোন উত্তর না দিয়েই সভার প্রধান অতিথি জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী তাঁকে বাঁধা সৃষ্টি করে বলে দাবি করেন। এক পর্যায়ে হট্টগোল ও হইছই সৃষ্টি হলে বেশ কিছুক্ষণ সভার কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে সভা চালু হলেও বর্ধিত সভাস্থল বয়কট করে মূল অনুষ্ঠানের বাহিরে চলে যান কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা মাহবুব, শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ছৈয়দ, সহ-সম্পাদক মো. হানিফ, সদস্য সোলাইমান কবির ও চরপাথরঘাটা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ উদ্দিন চৌধুরী। তাঁদের পিছু পিছু আরো কিছু নেতাকর্মী বেরিয়ে যান। এসব যুবলীগ নেতাদের অনেকেই অর্থপ্রতিমন্ত্রীর অনুসারী বলে আখ্যায়িত করেন।
অন্যদিকে, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদকের উপস্থিতিতে সভা বয়কট করে যুবলীগ নেতারা এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় সর্বমহলে নিন্দিতও হচ্ছেন। কারণ এতে শুধু জেলা নেতাদের অপমানিত করা হয়নি। পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগের ভাবমূর্তিও মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে বলে তৃণমূল নেতারা অভিমত জানিয়েছেন।  অপরদিকে, সভায় বক্তব্যদান কালে  জুলধা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন ফরহাদ বলেন, ‘আমাকে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুলধার পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে আলোচনা সভা করতে বলেছিলেন। মাহে রমজান আসায় ঈদের পরে করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এরমধ্যে উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক সেলিম ভাই বারবার বলেন কমিটি থেকে আমাকে বাদ করে দেবেন। বহিষ্কার করে দেবেন। আমি সংগঠনে রাজনীতি করতে আসলাম সম্মানের জন্য। টাকা ইনকামের জন্য নয়। এখনো নাকি আমি বহিষ্কৃত। আবার অনেকেই বলেন স্থগিত আমার পদ। আমার একটা সম্মান আছে তো। আমি জেলা যুবলীগের সভাপতির কাছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। জুলধা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কারো চাকরি করি না। আমরা সংগঠন করি। কথায় কথায় আমাদের বলা হয় কমিটি বিলুপ্ত করে দেবেন। আমরা কি পয়সা ইনকাম করার রাজনীতি করি। আমাদের বারবার কমিটি বাতিলের ভয় দেখানো হয়। এমনকি দক্ষিণ জেলা যুবলীগের মিছিল মিটিং-এ কেন যাই সেটার জন্যও ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক। আমরা রাজনীতি করি। যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারি।
চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার সাদত মোবারক বলেন, ‘কোন একটা মিটিং হচ্ছে আমাকে লোকজন নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু ওয়ার্ডে কোন কিছু হলে আমাকে ডাকা হয় না। সুবিধার বেলায় আমরা নাই। দেওয়ার বেলায় আমরা আছি। রাজনীতি কারো বাপের সম্পদ নয়। আমাদের যখন অবমূল্যায়ন করা হয়। তখন আপনারা (জেলা-উপজেলা নেতারা) কোথায় থাকেন। আমাদের প্রাপ্ত সম্মানটা আমাদের দেওয়া হোক। সেটাই প্রত্যাশা করি। চরপাথরঘাটা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আমরা যেদিন অর্থ প্রতিমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছি সেদিনই আমাদের উপজেলা যুবলীগের মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। যুবলীগের আর কোন প্রোগ্রামে দাওয়াত পাই না। তারপরও ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে যুবলীগের বর্ধিত সভায় অংশ নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমাদের বক্তব্য দিতে দিচ্ছে না। বর্ধিত সভার ব্যানারে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর এপিএসের ছবি কেন থাকবে? এসব নিয়ে প্রশ্ন করতে গেলে প্রধান অতিথি আমাদের বাঁধা সৃষ্টি করেন। এই জন্য আমরা বর্ধিত সভা বয়কট করে চলে এসেছি। কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মাহবুব বলেন, ‘আমরা সভায় যে সিদ্ধান্ত গুলো গ্রহণ করি। সে সব সিদ্ধান্ত পরে বাস্তবায়ন করা হয় না? তা কাগজে কলমে রয়ে যায়। বিগত সময়ে সাবেক সভাপতি সোলায়মান তালুকদার ভাই যেভাবে কর্ণফুলী যুবলীগ কে দক্ষিণ জেলায় চাঙ্গা করেছিলেন। এখন সেই যুবলীগ নাই। অনেকটা পিছিয়ে গেছে। আমাকে ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলনের আয়োজনের আহ্বায়ক করা হলো। কিন্তু চরপাথরঘাটায় যুবলীগের কমিটি দেবার সময় আমাকে জানায়নি। আমরা পদ-পদবি নিয়ে কি করব। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবো। যদি কোন সাংগঠনিক কোন কাজেকর্মে আমাদের জানানো না হয়। এক পর্যায়ে তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমার সাথে কারো ব্যক্তিগত বিরোধ নেই। আমাদের যুবলীগের একটি নিজস্ব গঠনতন্ত্র আছে, কিন্তু বর্ধিত সভার ব্যানারে এপিএস সায়েম ভাইয়ের ছবি কেন? সায়েম ভাই আমাদের জেলা বা কেন্দ্রীয় কোন নেতা নয়। এর ব্যাখ্যা চাই আমি নেতাদের কাছে? যদি ব্যাখ্যা দিতে না পারেন তবে এই সভা আমি বয়কট করলাম। আমরা সাথে যারা একমত তাঁরাও বয়কট করতে পারেন।
এরপরে উপজেলা যুবলীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর বাদশা বলেন, ‘আজকেই যদি সায়েম ভাইয়ের ছবিটা নতুন করে ব্যানারে লাগানো হতো? তাহলে বয়কটের বিষয়টি মানা যেতো। আসলো সবাই সবকিছু জানে না। আজকে বর্ধিত সভা। সিনিয়র নেতারা আছেন। পরিশেষে যদি সিদ্ধান্ত হয়। তবে বয়কট করতে পারতেন। কর্ণফুলী যুবলীগের বর্ধিত সভায় থাকবে উপজেলার ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নেতাকর্মীরা। এখানে ইউনিয়ন যুবলীগ আমরা প্রত্যাশা করি না। এ বিষয়ে আমি কর্ণফুলী যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম।
কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াজ উদ্দিন আজাদ বলেন, ‘রাজনীতি আমাদের ব্যবসা না। রাজনীতি আমাদের পেশাও না। রাজনীতি আমাদের নেশা। মানুষের জন্য রাজনীতি করি। চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি দেওয়ার জন্য আমরা ফরম বিতরণ করি। নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করি। গত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জামায়াতের নাশকতা ঠেকাতে মাঠে সব সময় সক্রিয় ছিলো এই সব যুবলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু এখনো ইউনিয়ন কমিটি হয়নি। যারা মিছিল মিটিং-এ আসে না তাঁদের বাদ দিয়ে অতি দ্রুত ইউনিয়ন কমিটি দেওয়া হোক। কেননা, চরলক্ষ্যায় বিগত ২০ বছরেও যুবলীগের ইউনিয়ন কমিটি হয়নি। আমরা শুনতেছি, আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হবে। কোন গঠনতন্ত্রে আছে সম্মেলন করার পরও আহ্বায়ক কমিটি দেওয়ার। বর্ধিত সভায় হট্টগোল ও কিছু যুবলীগ নেতাদের বয়কট, এপিএস সায়েমের ছবি প্রসঙ্গসহ বর্ধিত সভার বিবিধ বিষয়ে জানতে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজিম উদ্দিন হায়দারকে একাধিকবার কল করার পরেও ফোন রিসিভ না করায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা বর্ধিত সভায় যার যা ইচ্ছে বলতে পারে। আমরাও তা এনজয় করেছি। কোন সমস্যা নেই। তবে মির্জা মাহবুব ব্যানারে থাকা ছবি নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, সেটা সত্য। কিন্তু আমরা উত্তর দেবার আগেই তিনি সভাস্থল থেকে বয়কট করে বেরিয়ে গেলেন। এটা তাঁর উচিত হয়নি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরীর বরাত দিয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আমাদের বলেছেন সংগঠনে যারা বিশৃঙ্খলাকারী তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার। এছাড়াও সভায় আমরা আগামী আগষ্ট মাসের বিষয়ে কিছু দলীয় কর্মসূচি ও কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সভায় কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগ নেতাকর্মী ছাড়াও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ তৃণমূল যুবলীগের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় হোসেনপুরে বিএনপি নেতার খাবার বিতরণ।

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায়-কিশোরগঞ্জের-হোসেনপুরে পাঁচশত অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠ পৌর বিএনপির সভাপতি একে. এম. শফিকুল হক শফিকের উদ্যোগে নতুন বাজার মোড়ে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলাম সেলিম, পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক কমিশনার মাসুম বাবুল, পৌর ২ নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল খালেক, পৌর ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি স্বপন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই, পৌর ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি আবুল কাশেম, উপজেলা জাসাসের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল মোল্লা, জেলা জাসাস সদস্য স্বপন মিয়া, পৌর সদস্য সচিব রিমন মিয়া, যুগ্ম আহবায়ক পৌর রুমান মিয়া,

পৌর বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম, বিএনপি নেতা জজ মিয়াসহ পৌর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা।এ সময় পাঁচ শতাধিক মানুষের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেয়া হয়। এ কর্মসূচিতে অবস্থিত অসহায় মানুষরা খাবার পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ