আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান চট্টগ্রামের বাবর আলী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে ১১ বছর পর বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন বাবর আলী। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় ৮টা ৪৫মিনিট) এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান। এছাড়া
বাবর আলীর প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে আপডেট তথ্য দেওয়া ‘ভারটিক্যাল ড্রিমার্স’ পেজেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এর আগে হিমালয়ের শীতিধার চূড়া জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন ১ এপ্রিল। চূড়াটি পর্বতের ১৫ হাজার ৫০০ ফুট ওপরে। সকাল সাড়ে ৮টায় সেখানে তিনি বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান।
তবে অভিযান কিন্তু এখনও শেষ নয়, শুধু এভারেস্ট নয়, বাবরের লক্ষ্য সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসেও। গতকাল রোববার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারও শুরু করারর কথা রয়েছে দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রার। সব অনুকূলে থাকলে পৌঁছতে পারেন এর চূড়ায়।
জানা গেছে, লিয়াকত আলী ও লুৎফুন্নাহার দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান বাবর আলী। বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে ডাক্তার হবে। ছেলে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। তার জন্ম হাটহাজারী উপজেলায়। বাবর আলী পেশায় একজন চিকিৎসক। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। এ পেশা ছেড়ে মাথায় চাপে দেশ-বিদেশ ঘোরার নেশা। সঙ্গে নানান স্বেচ্ছাসেবী কাজে যোগ দেন। করোনাকালে চিকিৎসা সেবায় ছিল এ তরুণের ভূমিকা। হেঁটে বাংলাদেশ ও সাইকেল চালিয়ে ভারতবর্ষ পাড়ি দেওয়া বাবর আলী এবার লিখলেন নতুন গল্প। এই গল্প শুধু নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার নয়, দেশকে গর্বিত করারও।
সন্তানের বিজয়ে বাবরের বৃদ্ধ বাবা-মা খুশিতে আত্মহারা, একইসঙ্গে শঙ্কিতও। ছেলে ঠিকমতো শৃঙ্গচূড়া থেকে নেমে তাদের বুকে ফিরে না আসা পর্যন্ত কাটবে না এ শঙ্কা। শুধু কী বাবর আলীর স্বজনরা, চট্টগ্রামও আজ ভাসছে আনন্দে সন্তানের এমন অনন্য অর্জনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দনের বন্যা বইছে।
‘ভারটিক্যাল ড্রিমার্স’ পেজে বলা হয়, ‘অবশেষে! পৃথিবীর শীর্ষ এভারেস্ট ছুঁয়েছি আমরা! ১১ বছর প্রতীক্ষার পর আজ (গতকাল) তৃতীয় মেরুতে উড়েছে লাল-সবুজ! ঠিক শুনছেন। আমাদের স্বপ্ন সারথি বাবর আলী আজ (রোববার) সকাল স্থানীয় সময় ৮টা ৩০ (বাংলাদেশের সময় ০৮ টা ৪৫ এ) আকাশ ছুঁয়েছে। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় এবং লাখো শুভাকাঙ্খীদের দোয়ায় প্রকৃতি মাতা বাবরকে ক্ষণিকের জন্য স্থান দিয়েছেন নিজের চূড়ায়।
অভিযানের সমন্বয়ক ফরহান জামান জানান, মাউন্ট এভারেস্টে অভিযান নিঃসন্দেহে দুরুহ একটা কাজ। আজ সেটি সম্পন্ন করে বাবর ২৭ হাজার ৯৪০ ফুট উচ্চতার মাউন্ট লোৎসে আরোহণে যাত্রা করবেন। বাংলাদেশ থেকে আগে এভারেস্ট আরোহণ হলেও একই অভিযানে এভারেস্ট এবং লোৎসে আরোহণের চেষ্টা হয়নি পূর্বে। সেই চ্যালেঞ্জই নিয়েছেন গত বেশ কয়েক বছর ধরে নিজেকে হিমালয়ের নানান চূড়ায় অভিযানের জন্য প্রস্তুত করা বাবর। এই অভিযানে মোট খরচ হচ্ছে ৪৫ লাখ টাকা। যাতে মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার লিমিটেড। এছাড়া সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ঢাকা ডাইর্ভাস ক্লাব, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ব্লু জে, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী, গিরি, ভারটিক্যাল ড্রিমার্স। অভিযানের জন্য গণ তহবিল সংগ্রহে অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের নানা সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠন এবং অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী। অভিযানের সার্বিক সমন্বয় করেছে ডা. বাবর আলীর নিজের ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স।
জানা গেছে, ২০১৪ সালেই ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত নেপালে এক হিমালয় অভিযানে বাবর সামিট করেন পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত। সেই তার হিমালয়ে পথচলা শুরু। এরপর পর্বতারোহণের বিশুদ্ধতম ধরন বলে পরিচিত আল্পাইন স্টাইলে ২০১৬ সালে ক্লাব থেকে সামিট হয় ভারতের মাউন্ট ইয়ানাম, যা ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার কোন ২০ হাজার ফুট উচ্চতার পর্বত সামিট এবং সেই দলের সদস্য ছিলেন তিনি। পর্বতারোহণকে ধ্যানজ্ঞান মেনে তিনি বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করেন ভারতের নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে। ২০১৪ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছর করেছেন এক বা একাধিক হিমালয় অভিযান। এছাড়াও নিজেকে উপযুক্ত করে তুলতে বাবর নিয়মিত দৌঁড়ান, করেছেন ক্রস কান্ট্রি সাইক্লিং, করেন কায়াকিং, পায়ে হেঁটে টানা ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন সিঙ্গেল ইজার প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে। গত বছরের ১৩ এপ্রিল কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে সাইকেলযাত্রা শুরু করেছিলেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী বাবর আলী। এক মাসের চেষ্টায় প্রায় চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারি গিয়ে থেমেছিলেন তিনি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

সেনাবাহিনীকে সমরাস্ত্রে সজ্জিত পেশাদার বাহিনী গড়ার প্রত্যয় সেনাপ্রধানের

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল ও আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৮৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স এবং ৬০তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে এ রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শনের পাশাপাশি প্যারেডের অভিবাদন গ্রহণ করেন। পাশাপাশি তিনি কৃতি ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

সেনাবাহিনী প্রধান প্রশিক্ষণ জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নবীন ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে বলেন, শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের ওপর ন্যস্ত হলো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। সেনাবাহিনীকে একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল এবং আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের ১৮৪ জন ও বিএমএ স্পেশাল কোর্সের ২০ জন অফিসার ক্যাডেট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেছেন। এর মধ্যে ১৮৩ জন পুরুষ ও ২১ জন মহিলা সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন।

কোম্পানি সিনিয়র আন্ডার অফিসার আজমাইন ইশরাক দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সেরা চৌকস ক্যাডেট নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ‘সোর্ড অব অনার’ এবং সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ অর্জন করেন।

প্রশিক্ষণ সমাপনকারী ক্যাডেটরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করেন। আনুষ্ঠানিকতার শেষ পর্বে নবীন অফিসারদের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেন সেনাপ্রধান ও তাদের অভিভাবকরা।
এর আগে, অনুষ্ঠানের শুরুতে সেনাপ্রধান বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে আর্মি ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং বিএমএ কমান্ড্যান্ট তাকে অভ্যর্থনা জানান।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ