
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বর্ষণের মধ্যে চট্টগ্রামে খাল থেকে দু’জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে আছাদগঞ্জে চাক্তাই খালে এবং বোয়ালখালী উপজেলায় ছন্দারিয়া খাল থেকে লাশ দু’টি উদ্ধার করা হয়। এদিকে খালে পড়ে নিহত হওয়া যুবকের পরিচয় মিলেছে। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক নগরীর একটি বেসরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি খালের পাশে প্রস্রাব করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পানিতে পড়ে ডুবে মারা গেছেন।
এর আগে ২৭ মে বিকেলে নগরীর আছাদগঞ্জে চাক্তাই খালে ওই কলেজ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আজিজুল হাকিম ইমন (২২) নগরীর ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ডের এয়াকুব আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এলাকার কাজী মোহাম্মদ ইকবালের ছেলে। তিনি ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর জানান, বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে নগরীর আছাদগঞ্জের শুটকিপট্টির পেছনে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় চাক্তাই খাল থেকে এক যুবককে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কাউন্সিলর বলেন, খালের শুটকিপট্টির পেছনের অংশ এক সপ্তাহ আগেও ময়লা-আবর্জনায় ভরা ছিল। আমরা সেটা পরিষ্কার করেছি। বৃষ্টি এবং জোয়ারের কারণে পানির তীব্র স্রোত ছিল। দূর থেকে শুটকিপট্টির কয়েকজন তাকে পড়ে গিয়ে তলিয়ে যেতে দেখে। এ সময় কয়েক যুবক খালে নেমে দ্রুততার সঙ্গে তাকে তীরে তুলে আনে। চাক্তাই খালের তীরে ছেলেটি কেন গিয়েছিল, সেটা কেউ জানে না। ছেলেটিকে কেউ চিনতেও পারছে না।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম ওবায়দুল হক বলেন, যুবকের বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। পরনে সাদা গেঞ্জি ও জিনসের প্যান্ট ছিল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই।
কোতোয়ালি থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) বাবুল পাল জানান, বিকেলের দিকে নগরীর আসাদগঞ্জ কলাবাগিচা খাল থেকে আজিজুল হক ইমনকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফেসবুক পোস্ট দেখে ইমনের পরিবারের সদস্যরা এসে তার লাশ শনাক্ত করেন।
এসআই বাবলু পাল বলেন, ইমনের মানসিক সমস্যা আছে বলে তার পরিবার আমাদের জানিয়েছে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সে তার মাকে বলেছে, আমি হজে যাচ্ছি। ইমন যে জায়গা থেকে খালে পড়েছে সেটা খুব সরু। সেখানে মানুষ প্রস্রাব করে। টানা বৃষ্টিতে খালের পাড় পিচ্ছিল ছিল। খালে স্রোত ছিল। সে ওই জায়গায় বসে প্রস্রাব করার সময় অসাবধানতাবশত খালে পড়ে ডুবে মারা গেছে।
এদিকে, দুপুর আড়াইটার দিকে বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের বাদুরতলা এলাকায় ছন্দারিয়া খালে ভেসে আসা মনসুল আলম (৬০) নামে একজনের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। মৃত মনসুর আলমের বাড়ি ওই ইউনিয়নে। বোয়ালখালী থানার ওসি আছহাব উদ্দিন বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছি, বৃষ্টির মধ্যে সকালে তিনি খালে মাছ ধরতে বের হয়েছিলেন। দুপুরে উনার লাশ ভেসে আসে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়দের ধারণা, জাল ফেলার পর টেনে তুলতে গিয়ে তিনি খালে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন।