আজঃ শুক্রবার ১১ জুলাই, ২০২৫

টিআইসিতে শিল্পী রিষু তালুকদারের একক নজরুলের গানে মুগ্ধ দর্শক-শ্রোতা

বাগীশ্বরীর নজরুল জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তারা : নজরুল সংগীত মানুষের ভাবনাকে উন্নত করে

যীশু সেন :

নজরুলের সৃষ্টি মর্মবাণী আমাদের জীবনে সত্য ও সুন্দরের পথ চলার দিক নির্দেশিকা দেয়। নজরুল সংগীত শোনলে মানুষের ভাবনা উন্নত হয় এবং উৎসাহ ও রোমাঞ্চ জাগে। তাঁর গানের ভাষা, সাহিত্যিকথা এবং দেশপ্রেমের মেলবন্ধন খুঁজে পাওয়া যায়। নজরুলের চিন্তা চেতনা প্রধানত দীর্ঘস্থা, স্বাধীনতা, দেশপ্রেম, মানবতা, ধর্ম, সমাজতান্ত্রিক পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে ভরপুর। নজরুল আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার অনন্য বাতিঘর।
গত ২৫ মে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তন চট্টগ্রাম (টিআইসি) তে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীতে বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের অধ্যক্ষ, শাস্ত্রীয় সংগীত গ্রন্থ প্রণেতা, বাংলাদেশ বেতার ও টিভি শিল্পী রিষু তালুকদারের একক সংগীতানুষ্ঠান ” সুরে ও বাণীর মালা” অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
নজরুল জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আমন্ত্রিত অতিথি উদ্বোধক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: আবু তাহের।

প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম’র সভাপতি কবি সোহেল আনোয়ার এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগীতশিল্পী রিয়াজ ওয়ায়েজ। বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের সভাপতি লায়ন কৈলাশ বিহারী সেনের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নজরুল জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক ও বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক যীশু সেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাচিকশিল্পী বিপ্লব কুমার শীল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাগীশ্বরী নজরুল জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক প্রকৌশলী রিমন সাহা, সদস্য সচিব প্রিয়তোষ নাথ, ব্যাংকার উৎপল চক্রবর্তী, শিক্ষক সমীরণ সেন, শিক্ষক পলাশ দে, এড. প্রবীর ভট্টাচার্য, আয়কর আইনজীবী দিলীপ ভট্টাচার্য,
সানি ধর, সংগঠক মহিউদ্দিন ইমন, চুমকি সেন, বৃষ্টি ঘোষ, অমর্ত্য চক্রবর্তী, নয়ন গুহ সহ অসংখ্য গুণী সংগীত পিপাসুবোদ্ধারা।
সংগীতানুষ্ঠানে ছিল একক সংগীত, একক আবৃত্তি, সমবেত সংগীত ও দলীয় নৃত্য। মুলতঃ দর্শকদের মুল আকর্ষণ ছিলো শিল্পী রিষু তালুকদারের একক সংগীতানুষ্ঠান। তবে অনুষ্ঠানের ফাঁকেই একক আবৃত্তিতে আবৃত্তিশিল্পী সোহেল আনোয়ার তার একক পরিবেশনায় বুঝিয়ে দেন নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় কিভাবে ভেদাভেদহীন একটি সভ্যতা বেড়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে শিল্পী রিষু তালুকদার পরদেশী মেঘের ঘনঘটা কিংবা তুুমি যদি রাধা হতে শ্যাম, আমারি মতন…। এই গানগুলো শিল্পীর সুরেলা কন্ঠের সাথে নুপুরের ছন্দে দলীয় নৃত্যে দেখে মুহুর্মুহু করতালিতে শিল্পীকে অভিনন্দন জানালেন দর্শক-শ্রোতারা। শিল্পী যেন এক পূর্ণিমার আলোয় মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠান উপহার দেন। এসময় সমঝদার শ্রোতারা কখনো কখনো শিল্পীর সাথে কণ্ঠ মেলান। এসময় শ্রোতারা শিল্পীর মনের বাঁক ছুঁয়ে গেয়ে উঠে “মোরে ভালোবাসায় ভুলিয়ো না, পাওয়ার আশায় ভুলিয়ো.., পদ্মার ঢেউরে মোর শুন্য হৃদয় পদ্মা নিয়ে যা, যা রে…দোলন চাঁপা বনে দোলে, দোল-পূর্ণিমা রাতে চাঁদের সাথে…, আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে, আধখানা চাঁদ নিচে… এমনি অনেক নজরুল গীতিতে। কিন্তু শ্রোতারা বাড়ি ফিরে যেতেই গুণগুণ করেন শিল্পীর শেষ পরিবেশনা আরেক নজরুলগীতি ” আমায় নহে গো ভালবাস, শুধু ভালবাস মোর গান…। শিল্পী রিষু তালুকদারের একক নজরুলের গানে মুগ্ধ দর্শক-শ্রোতা।
এমনি মন্ত্রমুগ্ধকর সংগীতের রাতে সুরের রোশনাই বাগীশ্বরী সংগীতালয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত প্রত্যেক অতিথি শাস্ত্রীয় সংগীতের গ্রন্থ, ফুলেল শুভেচ্ছা ও স্মারক সম্মাননা তুলে দেন।

নৃত্যে অংশগ্রহণে ঘুঙুর নৃত্যকলা কেন্দ্র’র দলপ্রধান স্বপন দাশ, “নাট্যশাস্ত্রম’র হৃদিতা দাশ ও সুরতীর্থ’র সঞ্চিতা দস্তিদারের দলপ্রধান হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া।যন্ত্রে সহযোগিতায় ছিলেন কীবোর্ডে নিখিলেশ বড়ুয়া, বেহেলায় শ্যামল চন্দ্র দাশ, তবলায় প্রীতম ভট্টাচার্য ও অক্টোপ্যাডে রনি চৌধুরী।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বিদায়ী জুন মাসে ৬৭১ সড়ক দুর্ঘটনায় ৭১১ জন নিহত আহত ১৯০২।

বিদায়ী জুন মাসে দেশের গণমাধ্যমে ৬৭১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭১১ জন নিহত, ১৯০২ জন আহতের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই মাসে রেলপথে ৫৪ টি দুর্ঘটনায় ৫৬ জন নিহত, ১৪ জন আহতের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। তথ্যমতে, নৌ পথে ১৮ টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৭৪৩ টি দুর্ঘটনায় ৭৮০ জন নিহত এবং ১৯১৬ জন আহত হয়েছে।

এই সময়ে ২২৪ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৪৪ জন নিহত, ২১২ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩.৩৮ শতাংশ, নিহতের ৩৪.৩১ শতাংশ ও আহতের ১১.১৪ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১৬০ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭২ জন নিহত ও ৫৮৮ জন আহত হয়েছে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে ২৫ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৪৫ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বুহস্পতিবার সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১১ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৯ জন চালক, ১১০ জন পথচারী, ৪৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬০ জন শিক্ষার্থী, ০৮ জন শিক্ষক, ১০৫ জন নারী, ৬০ জন শিশু, ০২ জন চিকিৎসক , ০২ জন প্রকোশলী, এবং ১২ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এদের মধ্যে নিহত হয়েছে- ০৫ জন পুলিশ সদস্য, ০৫ জন সেনাবাহিনী সদস্য, ০২ জন চিকিৎসক , ০২ জন প্রকোশলী, ১১৫ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১০৪ জন পথচারী, ৮৪ জন নারী, ৪৫ জন শিশু, ৫৬ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন পরিবহন শ্রমিক, ০৮ জন শিক্ষক ও ১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৯৭৪ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৬.৩৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৪৮ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৬.৯৪ শতাংশ বাস, ১২.৭৩ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৬.৭৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৭.৭০ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.৯৮ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪১.২৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৯.৬৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১.৩১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৬.৭০ শতাংশ বিবিধ কারনে, চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.২৯ শতাংশ, এবং ০.৭৪ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।

বোয়ালখালীতে অভাব জয় করে জিপিএ-৫, কলেজে ভর্তি নিয়ে দুঃচিন্তায় মনিষা

পিতৃহীন অভাবের সংসারে ঠিকমতো দুবেলা দুমুঠো খাবারই জোটেনি মেধাবী শিক্ষার্থী মনীষার। এমনকি জোটেনি ভালো পোশাকও। এসব অভাবকে জয় করে এ বছর এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মনীষা।

বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পদ্ম পুকুর এলাকার মরহুম মফজল আহমদ ও মনোয়ারা বেগমের মেয়ে এবং চরখিজিরপুর হাজি মোহাম্মদ জানে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফজিলাতুন্নেছা মনীষা। স্থানীয়রা জানান, মনীষা ছোট বেলায় ঈদের দিন ভোরে বাবা হারিয়ে ফেলেন ,এক হতদরিদ্র পরিবারের জন্ম নেওয়া মনিষার মা মনোয়ারা বেগম পাচঁটি মেয়ে নিয়ে পড়ে যায় বিপদে , দীন মজুর বাবা তেমন কিছু রেখে যেতে পারিনি তাদের জন্য। মনীষার মা পড়ে যায় আর্থিক সংকটে বাচ্চাদের পড়াশুনা খাবার নিয়ে মহা সংকটে পড়ে যায়।

মনীষার মা মনোয়ারা বেগম বলেন, সংসারের অভাব পূরনে কিছু ধানী জমিতে চাষ করে আর উপায় না দেখে ক্লাববের বিয়ের অনুষ্ঠানে রান্নাবান্নার কাজ করেছি। আর্থিক সংকটে থাকার পরও মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ করেনি , অনেক সময় না খেয়ে স্কুলে যেতে হয়েছে আমার মেয়েকে।

এখন কলেজে ভর্তি হয়ে কীভাবে লেখাপড়ার খরচ আসবে সে চিন্তায় পড়েছি। হাজি মোহাম্মদ জানে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাকিম বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে মনীষা অত্যন্ত ভদ্র। বিদ্যালয়ে এসে সে সব সময় চুপচাপ থাকত। তবে ক্লাসে সব সময় থাকত মনোযোগী। মনীষা জিপিএ-৫ পাওয়ায় বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-কর্মচারী খুশি।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ