আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

টিআইসিতে শিল্পী রিষু তালুকদারের একক নজরুলের গানে মুগ্ধ দর্শক-শ্রোতা

বাগীশ্বরীর নজরুল জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তারা : নজরুল সংগীত মানুষের ভাবনাকে উন্নত করে

যীশু সেন :

নজরুলের সৃষ্টি মর্মবাণী আমাদের জীবনে সত্য ও সুন্দরের পথ চলার দিক নির্দেশিকা দেয়। নজরুল সংগীত শোনলে মানুষের ভাবনা উন্নত হয় এবং উৎসাহ ও রোমাঞ্চ জাগে। তাঁর গানের ভাষা, সাহিত্যিকথা এবং দেশপ্রেমের মেলবন্ধন খুঁজে পাওয়া যায়। নজরুলের চিন্তা চেতনা প্রধানত দীর্ঘস্থা, স্বাধীনতা, দেশপ্রেম, মানবতা, ধর্ম, সমাজতান্ত্রিক পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে ভরপুর। নজরুল আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার অনন্য বাতিঘর।
গত ২৫ মে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তন চট্টগ্রাম (টিআইসি) তে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীতে বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের অধ্যক্ষ, শাস্ত্রীয় সংগীত গ্রন্থ প্রণেতা, বাংলাদেশ বেতার ও টিভি শিল্পী রিষু তালুকদারের একক সংগীতানুষ্ঠান ” সুরে ও বাণীর মালা” অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
নজরুল জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আমন্ত্রিত অতিথি উদ্বোধক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: আবু তাহের।

প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম’র সভাপতি কবি সোহেল আনোয়ার এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগীতশিল্পী রিয়াজ ওয়ায়েজ। বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের সভাপতি লায়ন কৈলাশ বিহারী সেনের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নজরুল জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক ও বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক যীশু সেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাচিকশিল্পী বিপ্লব কুমার শীল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাগীশ্বরী নজরুল জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক প্রকৌশলী রিমন সাহা, সদস্য সচিব প্রিয়তোষ নাথ, ব্যাংকার উৎপল চক্রবর্তী, শিক্ষক সমীরণ সেন, শিক্ষক পলাশ দে, এড. প্রবীর ভট্টাচার্য, আয়কর আইনজীবী দিলীপ ভট্টাচার্য,
সানি ধর, সংগঠক মহিউদ্দিন ইমন, চুমকি সেন, বৃষ্টি ঘোষ, অমর্ত্য চক্রবর্তী, নয়ন গুহ সহ অসংখ্য গুণী সংগীত পিপাসুবোদ্ধারা।
সংগীতানুষ্ঠানে ছিল একক সংগীত, একক আবৃত্তি, সমবেত সংগীত ও দলীয় নৃত্য। মুলতঃ দর্শকদের মুল আকর্ষণ ছিলো শিল্পী রিষু তালুকদারের একক সংগীতানুষ্ঠান। তবে অনুষ্ঠানের ফাঁকেই একক আবৃত্তিতে আবৃত্তিশিল্পী সোহেল আনোয়ার তার একক পরিবেশনায় বুঝিয়ে দেন নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় কিভাবে ভেদাভেদহীন একটি সভ্যতা বেড়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে শিল্পী রিষু তালুকদার পরদেশী মেঘের ঘনঘটা কিংবা তুুমি যদি রাধা হতে শ্যাম, আমারি মতন…। এই গানগুলো শিল্পীর সুরেলা কন্ঠের সাথে নুপুরের ছন্দে দলীয় নৃত্যে দেখে মুহুর্মুহু করতালিতে শিল্পীকে অভিনন্দন জানালেন দর্শক-শ্রোতারা। শিল্পী যেন এক পূর্ণিমার আলোয় মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠান উপহার দেন। এসময় সমঝদার শ্রোতারা কখনো কখনো শিল্পীর সাথে কণ্ঠ মেলান। এসময় শ্রোতারা শিল্পীর মনের বাঁক ছুঁয়ে গেয়ে উঠে “মোরে ভালোবাসায় ভুলিয়ো না, পাওয়ার আশায় ভুলিয়ো.., পদ্মার ঢেউরে মোর শুন্য হৃদয় পদ্মা নিয়ে যা, যা রে…দোলন চাঁপা বনে দোলে, দোল-পূর্ণিমা রাতে চাঁদের সাথে…, আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে, আধখানা চাঁদ নিচে… এমনি অনেক নজরুল গীতিতে। কিন্তু শ্রোতারা বাড়ি ফিরে যেতেই গুণগুণ করেন শিল্পীর শেষ পরিবেশনা আরেক নজরুলগীতি ” আমায় নহে গো ভালবাস, শুধু ভালবাস মোর গান…। শিল্পী রিষু তালুকদারের একক নজরুলের গানে মুগ্ধ দর্শক-শ্রোতা।
এমনি মন্ত্রমুগ্ধকর সংগীতের রাতে সুরের রোশনাই বাগীশ্বরী সংগীতালয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত প্রত্যেক অতিথি শাস্ত্রীয় সংগীতের গ্রন্থ, ফুলেল শুভেচ্ছা ও স্মারক সম্মাননা তুলে দেন।

নৃত্যে অংশগ্রহণে ঘুঙুর নৃত্যকলা কেন্দ্র’র দলপ্রধান স্বপন দাশ, “নাট্যশাস্ত্রম’র হৃদিতা দাশ ও সুরতীর্থ’র সঞ্চিতা দস্তিদারের দলপ্রধান হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া।যন্ত্রে সহযোগিতায় ছিলেন কীবোর্ডে নিখিলেশ বড়ুয়া, বেহেলায় শ্যামল চন্দ্র দাশ, তবলায় প্রীতম ভট্টাচার্য ও অক্টোপ্যাডে রনি চৌধুরী।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ