আজঃ মঙ্গলবার ২৪ জুন, ২০২৫

হরিরামপুরে ৪ বছরেও পাকেনি দেড় কি.মি. রাস্তা পাকা করণের কাজ

বাবুল আহমেদ সাটুরিয়া মানিকগঞ্জ :

মানিকগঞ্জ:

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের নয়াবাজার থেকে ডেগিরচর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করণের দেড় বছরের কাজ চার বছরে ও শেষ হয়নি অর্ধেক। প্রায় ৩ বছরের অধিক সময় ধরে রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী। কাজের শুরুতে মাটি খুঁড়ে বক্স করে নামেমাত্র কিছু বালু ফেলে রাখা হয়। বক্স করার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই যানবাহন তো দুরের কথা, পায়ে হেঁটেই চলাচল করতে পারছেন না পথচারীরা।
এমন অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

পথচারী নীলচান বলেন
বাবারে বাঁচবো আর কয়দিন এই রাস্তা ভালো হতেদেখে যেতে পারবো কিনা সন্দেহ

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২০২০/২১ অর্থ বছরে জিডিবি-৩ প্রকল্পের আওতায় বাহাদুরপুর সড়কের নয়াবাজার থেকে ডেগিরচর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তার পীচ ঢালাইয়ের জন্য ২০২০ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ১ কোটি ৭৯ লাখ ২৫ হাজার ২৮১ টাকা দরে, কাজটি পায় মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

পরে ২০২১ সালের মার্চ মাসে রাস্তাটির কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু তিন বছরে শুধুমাত্র রাস্তা খুঁড়ে বক্স করে কিছু কিছু স্থানে বালু ফেলে রাখা হয়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রাস্তাটির কাজ বন্ধ রাখা হয়।

সরেজিমনে গেলে একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, রাস্তাটি প্রায় তিন বছর আগে মাটি খুঁড়ে রাখায় এ রাস্তা দিয়ে কোনো যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না। একটু বৃষ্টি হলেই কোথাও কোথাও পানি জমে কাঁদার সৃষ্টি হয়। এতে করে মানুষের পায়ে হাঁটাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ রাস্তা দিয়ে কৃষিপণ্যসহ কোনো মালামালই আনা নেয়া করা যাচ্ছেনা। ফলে এ এলাকার কৃষকেরা কৃষিপণ্য নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। কেউ অসুস্থ হয়ে জরুরীভাবে তাকে হাসপাতালে নেয়া নিয়েও পড়তে হয় বিপদে। এছাড়াও একটু বৃষ্টি হলেই এ রাস্তা দিয়ে দুটি বিদ্যালয়ের প্রায় ৫ শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরও চলাচলে অনেক অসুবিধা হয়।

ইজিবাইক চালক রোমান বলেন, এই রাস্তাটি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ খুঁড়ে ফেলে রাখছে। আমরা মালামাল নিয়ে গাড়ি চালাতে পারি না। গতকাল ১০-১২ মন ভূট্টা নিয়ে আমার গাড়ি উল্টে যায়। একটু বৃষ্টি হলেই আমরা যাতায়াত করতে পারি না। অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।

ডেগিরচর গ্রামের বাসিন্দা আরজু প্রামানিক বলেন, আমাদের এই রাস্তাটা অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু চার বছর ধরে রাস্তাটি এভাবে পড়ে আছে। কাজ বন্ধ করে রাখছে। এ রাস্তা দিয়ে কৃষকেরা কৃষিপণ্য নিয়ে হাটে বাজারে যেতে পারে না। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পানি জমে য়ায়। তখন গাড়ি তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেই চলাচল করা যায় না। আমাদের এই রাস্তার বেহাল দশা দেখারও কেউ নেই।

একই গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুল বারেক জানান, এই রাস্তা দিয়ে ভ্যানে করে মাল নেয়ার সময় ভ্যান উল্টে আমার হাত ভেঙে গেছে। আজ আমি পঙ্গু। তিন বছরের বেশি হইল এই রাস্তা দিয়ে হাজার মানুষ অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করছে। রাত বেরাত রোগী নিয়েও বিপদে পড়তে হয়। কোনো গাড়ি আসতে পারে না।

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোজাফফর হোসেন জানান, তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তাটি খুঁড়ে কাজ বন্ধ রয়েছে। রাস্তা খুঁড়ে রাখায় একটু বৃষ্টি হলেই মানুষের চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভ্যান, রিক্সা কিংবা নসিমনে এই এলাকার কৃষিপণ্যও হাট বাজারে নেয়া যায় না। রাস্তাটি নিয়ে এই এলাকার জনগণ খুব ভোগান্তিতে আছে। রাস্তাটি এখন এলাকার জনগণের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২/৩ দিন আগে যেখানে যেখানে জলাবদ্ধতা হয়, সেখানে নিজে কিছু বালু ফেলে দিছি। রাস্তাটি কেন যে এভাবে পড়ে আছে তাই বুঝলাম না।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মাজহারুল হক আকন্দ জানান, আগের টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে অনুমোদন হয়ে গেছে। এখন জেলা থেকে টেন্ডার দিলে কাজ শুরু হয়ে যাবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্ম বিরতি দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তাবিত মাঠ পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগ বিধি সংশোধন পূর্বক স্নাতক সমমানসংযুক্ত করে ১৪ তম গ্রেড প্রদান ও ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১১ তম গ্রেডে উন্নীতকরণ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড প্রদানসহ ৬ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের সকাল ৮ টা থেকে দশটা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ হেলথ এ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন সদর উপজেলা শাখার আয়োজনে এই কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন হেলথ এ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মশিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জেসমিন নাহার লাকি, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, ফজলে রাব্বি, আফরোজা মুনমুনসহ অন্যান্যরা।

এ সময়ে অবস্থান কর্মসূচিতে তারা বলেন তাদের যে ছয় দফা দাবি রয়েছে সেগুলো মেনে নেওয়া না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

শিক্ষাবোর্ডের সামনে বিক্ষোভ, এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবি।

এইচএসসি পরীক্ষা দুই মাস পেছানোর দাবিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল পরীক্ষার্থী। দেশে হঠাৎ করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রোববার দুপুরে
বোর্ডের প্রধান ফটকে অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘সুরক্ষা না পরীক্ষা, পরীক্ষা পরীক্ষা’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় তিন ঘণ্টা শিক্ষার্থীরা বোর্ডের প্রধান ফটক আটকে রাখায় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে অবস্থান নিয়েছে বোর্ডের সামনে। বিভিন্ন বোর্ডেই শিক্ষার্থীরা এ দাবি নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের যে দাবিগুলো ছিল সেসব আমরা আন্তঃবোর্ডে জানিয়েছি এবং তারা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানাবেন। এছাড়া এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার বোর্ডের নেই। পরিস্থিতি যদি সে রকম হয়, সরকার নিশ্চয় সেটা বিবেচনা করবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনার সংক্রমণ ফের বাড়ছে। অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্য ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত নই। এখন পরীক্ষা নেওয়া হলে আমাদের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।
তারা জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অন্তত দুই মাস পরীক্ষা স্থগিত রেখে একটি যৌক্তিক সময়সূচি নির্ধারণ করা হোক। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত রাখবে তারা। তবে সেবা নিতে আসা অনেকেই শিক্ষার্থীদের এই অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান।

একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তোমরা বলছো, তিন লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে। সেখানে আন্দোলনে এসেছে মাত্র ৩০ জন! আন্দোলন করো কিন্তু আমাদের হয়রানি আর ভোগান্তিতে ফেলছো কেন?

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ